আমাদের ভারত, ১১ আগস্ট: পাকিস্তানের সেনাপ্রধান আসিম মুনিরের মন্তব্যের কড়া জবাব দিল নয়া দিল্লি। সোমবার বিদেশ মন্ত্রকের তরফে বিবৃতি জারি করে বলা হয়েছে, পাকিস্তানের পরমাণু হুমকির সামনে মাথা নত করা হবে না। প্রয়োজনীয় পাল্টা পদক্ষেপ করা হবে। একই সঙ্গে বন্ধু দেশের মাটি থেকে পাক সেনা প্রধানের এই বার্তা দুর্ভাগ্যজনক বলেও দাবি করেছে ভারত।
বিদেশ মন্ত্রকের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, আমেরিকা থেকে পাকিস্তানের সেনাপ্রধান আসিম মুনিরের করা মন্তব্য আমাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে। পরমাণু অস্ত্র নিয়ে হট্টগোল করা পাকিস্তানের প্রধান কাজ। এই ধরনের মন্তব্য দায়িত্বজ্ঞান হীনতার পরিচয় দেয়। আন্তর্জাতিক মহল এটা নিয়ে সিদ্ধান্ত নিক, যে এমন একটি দেশের হাতে পরমাণু অস্ত্রের নিয়ন্ত্রণ থাকা আদৌ সঠিক কিনা।
একই সঙ্গে নয়াদিল্লি দাবি করেছে, পাকিস্তানকে নিয়ে যে সন্দেহ তৈরি হয়েছিল তা আরো জোরদার হয়েছে এই মন্তব্যে। সেখানে সামরিক বাহিনী সন্ত্রাসবাদী গোষ্ঠীগুলির সঙ্গে হাত মিলিয়েছে। অর্থাৎ পরমাণু শক্তি সন্ত্রাসবাদীদের হাতে চলে যাওয়ার সম্ভাবনার ইঙ্গিত দিয়েছে ভারত। কারণ সেদেশে সামরিক বাহিনী সন্ত্রাসবাদীদের সাহায্য করে।
এরপরে আমেরিকার উদ্দেশ্যে বার্তা দিয়ে বলা হয়েছে, এই ধরনের মন্তব্য বন্ধুত্বপূর্ণ তৃতীয় দেশের মাটিতে দাঁড়িয়ে করা হচ্ছে, যা অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক। ভারত পরমাণু হুমকির সামনে মাথা নত করবে না। আগেও তা স্পষ্ট করা হয়েছে। জাতীয় নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করতে সব রকম পদক্ষেপ করবে ভারত সরকার।
অপারেশন সিঁদুরের পর এই নিয়ে পরপর দু’ দুবার আমেরিকায় গেলেন পাক সেনা প্রধান। ফ্লোরিডায় একটি নৈশভোজে যোগ দিয়ে তিনি বলেন, “আমরা একটি পরমাণু শক্তিধর দেশ। যদি মনে হয় আমরা ধ্বংসের পথে এগোচ্ছি তবে অর্ধেক বিশ্বকে সঙ্গে নিয়ে আমরা ধ্বংস হব।”
এই মন্তব্যে পর্যবেক্ষকরা মনে করছেন, আমেরিকার মাটিতে দাঁড়িয়ে তৃতীয় কোনো দেশকে এভাবে পরমাণু হুমকি দেওয়া নজির বিহীন।
এদিকে সিন্ধু জল চুক্তি রদ নিয়েও ভারতের অবস্থানের কথা তোলেন মুনির। পেহেলগাঁও হামলার পরই পাকিস্তানকে হামলার জন্য দায়ী করে সিন্ধুর জল চুক্তি স্থগিত করে ভারত। নয়াদিল্লি জানায়, সরকার জল ধরে রাখতে বাঁধ তৈরি করবে। এ প্রসঙ্গে মুনির বলেন, ভারত বাঁধ তৈরি করুক, আমরা অপেক্ষা করবো। যখন বাঁধ তৈরি করা হয়ে যাবে আমরা দশটি মিসাইল ছুঁড়ে সেই বাঁধ ধ্বংস করে দেব। তার দাবি সিন্ধু নদ ভারতের পৈতৃক সম্পত্তি নয়। আমাদের কাছে ক্ষেপণাস্ত্রের অভাব নেই।
সম্প্রতি খনিজ তেল নিয়ে আমেরিকার সঙ্গে পাকিস্তানের চুক্তি হয়েছে। এদিকে রাশিয়ার থেকে তেল আমদানির কারণে ভারতের ওপর ৫০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছেন ট্রাম্প। সেই সূত্রে পাকিস্তানের সঙ্গে তাদের ঘনিষ্ঠতা বেড়েছে। ইসলামাবাদের উপর মাত্র ১৯ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছেন ট্রাম্প। আর আজ মুনিরের মন্তব্যের পর বিদেশ মন্ত্রকের এই বিবৃতিতে দুই দেশকেই কড়া বার্তা দেওয়া হলো বলে মনে করছে বিশেষজ্ঞ মহল।