আমাদের ভারত, ৩ অক্টোবর:
ব্রিটিশ নাগরিকদের ভারতে আসার ক্ষেত্রে কড়া পদক্ষেপ নিয়েছে নয়াদিল্লি। ১০ দিনের নিভৃত বাস ছাড়া করোনার আরটিপিসিআর পরীক্ষা বাধ্যতামূলক করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আর কেন্দ্রের এই সিদ্ধান্তের পরেই ভারতীয় নাগরিকদের ব্রিটেনে যাওয়ার বিষয়ে সুর নরম করলো সে দেশের সরকার। তারা জানিয়েছে, ভারতীয়দের যাওয়ার ক্ষেত্রে বিধিনিষেধ কতটা শিথিল করা যায় সে বিষয়ে ভাবনা চিন্তা করা হচ্ছে। ভারতের এই সিদ্ধান্তকে প্রতিবেশী দেশ পাকিস্তান স্বাগত জানিয়েছে। পাকিস্তানি মিডিয়া ভারত সরকারের কড়া মনোভাবের প্রশংসা করেছে।
পাকিস্তানের মিডিয়া বলেছে, ব্রিটিশ শাসনকে এভাবেই মোক্ষম জবাব দিয়েছে ভারত। পাকিস্তানি মিডিয়া আরও বলেছে, ভারতেই সবথেকে ভালো ভ্যাকসিন তৈরি হয়েছে। ওদের কাছে ভালো বিজ্ঞানী রয়েছে। পাকিস্তানি সাংবাদিক শাহেদ মাসুদ বলেন, ব্রিটেন কোভিশিল্ডকে নিজেদের তালিকায় জায়গা দেয়নি। আর এই কারণেই ভারতীয়দের ব্রিটেনে যেতে সমস্যা হচ্ছে। গোটা বিশ্বে ভ্যাক্সিনের একটাই ফর্মুলা। নাম আলাদা আলাদা। ব্রিটেনের এই গাজোয়ারি মনোভাবের মোক্ষম জবাব দিয়েছে ভারত। ভারতেরেই ভূয়শী প্রশংসা করা পাকিস্তানের মিডিয়ার ভিডিও ব্যাপক ভাইরাল হয়েছে।
শুক্রবার নয়াদিল্লি জানায় ভারতে আসা ব্রিটিশ নাগরিকদের যাত্রার ৭২ ঘন্টা আগে করোনার আরটিপিসিআরপরীক্ষা করে আসতে হবে। পাশাপাশি তারা আসার পর বিমানবন্দরে তাদের করোনা পরীক্ষা হবে। এরপর ১০ দিন থাকতে হবে কোয়ারেনটাইনে। ভারতে পা রাখার অষ্টম দিনের মাথায় তাদের আবারএকটি করোনা পরীক্ষা করাতে হবে। এই নিয়ম আগামী ৪ অক্টোবর থেকে কার্যকর করা হবে। নিয়মের আওতায় পড়বেন ব্রিটেনের সমস্ত নাগরিক। দুটি টিকা নেওয়া থাকলেও এ পদ্ধতির মধ্যে দিয়ে যেতে হবে তাদের বলে জানিয়েছে কেন্দ্র।
আর এই সিদ্ধান্তের পরেই তড়িঘড়ি নিজেদের মত বদল করেছে ব্রিটেন। বরিস সরকারের এক মুখপাত্র বলেছেন, “মানুষের জীবনের সুরক্ষা আমাদের কাছে সব থেকে বেশি গুরুত্বপূর্ণ। অন্য দেশ থেকে যে নাগরিকরা আসবেন তাদের নির্দিষ্ট কয়েকটি নিয়ম মানতে হবে। আগামী দিনে কি পদক্ষেপ করা হবে সে বিষয়ে আমরা ক্রমাগত অন্যান্য দেশের সঙ্গে আলোচনা করছি। তার মধ্যে ভারত রয়েছে। কারো আসতে যাতে সমস্যা না হয় সেদিকে নজর রাখা হচ্ছে।”
ব্রিটিশ সরকার এখনো পর্যন্ত ১৮টি দেশের নাগরিককে কোনও বিধি-নিষেধ ছাড়াই ব্রিটেনে ঢোকার অনুমতি দিয়েছে, যার মধ্যে ভারত নেই। ভারতের কোন নাগরিক সেখানে গেলে তাদের কঠোর নিয়ম মানতে হচ্ছে। ব্রিটেনের এই সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ করে নয়াদিল্লি। বলা হয় যে অ্যাস্ট্রোজেনেকার টিকাই ব্রিটেনে দেওয়া হচ্ছে। আর তারাই কোভিশিল্ডের টিকা তৈরি করেছে। তাহলে কোভিশিল্ড টিকা নেওয়া ভারতীয়দের জন্য জন্য এই বিধিনিষেধ কেন? কিন্তু তারপরেও কোনো পদক্ষেপ না করায় ব্রিটিশ নাগরিকদের ক্ষেত্রেও ভারত সরকার কড়া বিধি নিষেধ আরোপ করে, ইটের বদলে পাটকেল নীতি গ্রহণ করতেই ফল মিলতে শুরু করল।