দুর্গাপুর-বর্ধমানে ইন্টারনেট এক্সেচেঞ্জের উদ্বোধন, অনুষ্ঠানে গরহাজির তৃণমূলের জনপ্রতিনিধি, কটাক্ষ সাংসদ আলুওয়ালিয়ার

জয় লাহা, দুর্গাপুর, ১০ জুলাই: প্রধামন্ত্রীর স্বপ্নের ডিজিটাল ইন্ডিয়ার প্রভাব এবার শিল্পাঞ্চলে। কৃষি ও শিল্পাঞ্চলের বুক দিয়ে যাওয়ায় হাইওয়ে এবার সুপার হাইওয়ের লক্ষ্যে এগিয়ে। সুপার হাইওয়ের ওপর এবার মিলবে সুপার হাইস্পিড ইন্টারনেট পরিষেবা। কম হবে খরচের বহর। রবিবার দুর্গাপুরে এনএক্সআইয়ের টু-ইন্টারনেট এক্সচেঞ্জের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন হল। ভার্চুয়ালিভাবে উদ্বোধন করেন কেন্দ্রীয় ইলেক্ট্রনিক্স ও তথ্য প্রযুক্তি মন্ত্রী (রাষ্ট্র) রাজীব চন্দ্রশেখর। দুর্গাপুরে উপস্থিত ছিলেন সাংসদ সুরিন্দর সিং আলুওয়ালিয়া।

প্রসঙ্গত, কেন্দ্রে এনডিএ সরকার আসার পর ডিজিটাল ইন্ডিয়া তৈরীর লক্ষ্যে এগিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তথ্যপ্রযুক্তিতে একগুচ্ছ পদক্ষেপ নিয়েছে কেন্দ্র সরকার। কয়েকদিন আগে প্রধানমন্ত্রী তাঁর বক্তব্যে জানিয়েছেন, আগের শিশুদের কোলে নিলে চশমা কিম্বা কলম ধরত। এখন শিশুদের কোলে তুলে নিলে আগে মেবাইল ধরে নাড়াচাড়া করে। মোবাইল চললে হাতে ধরে রাখে। না হলে হয়তো ফেলে দেয়। অর্থাৎ শিশুরাও বুঝতে পেরেছে ডিজিটালের গুরুত্ব। তাই সময়ের অগ্রগতির সঙ্গে আমাদের এই পরিবর্তন বুঝতে হবে। না হলে বিশ্ব এগিয়ে যাবে, আমরা এক কোণে পড়ে থাকব।’

সম্প্রতি পশ্চিমবঙ্গের ওপর দিয়ে যাওয়ায় গ্রান্ডট্যাঙ্ক রোড বর্তমানে ১৯ নং জাতীয় সড়ক রয়েছে। যার গুরুত্ব অপরিসীম। কিন্তু তথ্যপ্রযুক্তির যুগেও মেবাইল নেটওয়ার্ক, ইন্টারনেট পরিষেবা কোথাও কোথাও ব্যাহত হয়। যার দরুন স্কুল পড়ুয়া থেকে চিকিৎসক, ব্যাবসায়ী, নেতা, মন্ত্রী সমস্ত স্তরের মানুষকে বিপাকে পড়তে হয়। হাইওয়ের ওপর ইন্টারনেট পরিষেবার উন্নতির জন্য উদ্যেগ নেয় বর্ধমান দুর্গাপুরের সাংসদ সুরিন্দর সিং আলুওয়ালিয়া। আর তাই সুপার হাইওয়ের সঙ্গে নতুন সংযোজন হল এবার সুপারহাইস্পিড ইন্টারনেট পরিষেবা। রবিবার দুর্গাপুরে একটি হোটেলে এনএক্সআইয়ের টু- ইন্টারনেট এক্সচেঞ্জেের ভার্চুয়ালি উদ্বোধন করেন কেন্দ্রীয় ইলেক্ট্রনিক্স ও তথ্য প্রযুক্তি মন্ত্রী (রাষ্ট্র) রাজীব চন্দ্রশেখর। দুর্গাপুরে উপস্থিত ছিলেন সাংসদ সুরিন্দর সিং আলুওয়ালিয়া ও বিধায়ক লক্ষ্মণ ঘড়ুই। প্রশ্ন, এই ইন্টারনেট এক্সচেঞ্জর সুফল কি? সাংসদ সুরিন্দর সিং আলুওয়ালিয়া বলেন,
“ইন্টারনেট গতি বাড়বে। খরচ কম হবে। তাতে স্কুল কলেজ পড়ুয়া, চিকিৎসক, ব্যাবসায়ী সকলে উপকৃত হবেন। এবার বাংলা ভাষায় ই-মেল আইডি খোলা যাবে।” তিনি বলেন, “হাইওয়েকে  সুপারহাইওয়ে করতে ইন্টারনেট পরিষেবার গতি জরুরি। ইন্টারনেট পরিষেবা উন্নত হলে দুর্গাপুর স্মার্ট সিটির ক্ষেত্রে আরও অনেকটাই এগিয়ে নিয়ে যাবে।”

সাংবিধানিক নিয়ম অনুযায়ী অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত ছিলেন দুর্গাপুর ও বর্ধমানের তৃণমূল বিধায়ক প্রদীপ মজুমদার ও খোকন দাস। দুর্গাপুরপর মেয়র অনিন্দিতা মুখার্জি, বর্ধমান পৌরসভার চেয়ারম্যান পরেশচন্দ্র সরকার। যদিও তৃণমূলের কোনো জনপ্রতিনিধি বিধায়ক কিম্বা মেয়র উপস্থিত ছিলেন না। আর তাতেই কটাক্ষ করেছেন বিজেপি সাংসদ ও বিধায়ক। সাংসদ সুরিন্দর সিং আলুওয়ালিয়া বলেন, “এটা সাংবিধানিক নিয়ম। স্থানীয় জনপ্রতিনিধি যে দলেরই হোক আমন্ত্রন করা দরকার। আসুক না আসুক তাদের নাম আমন্ত্রন কার্ডে রাখা দরকার। সেই অনুযায়ী অনুষ্ঠানে আমন্ত্রন করা হয়েছিল দুই শহরের দুই তৃণমূলের বিধায়ক ও দুই মেয়র ও চেয়ারম্যানকে। তাদের আমন্ত্রন পত্রে নামও ছাপানো হয়। কিন্তু, তাদের অসমর্থতায় আসতে পারেননি।” তিনি কটাক্ষ করে বলেন, “হয়তো আমার চর্ম রোগ কিম্বা করোনা আছে। যদি সংক্রামিত হয়ে যায়, তাই ভেবে আসেনি।” তিনি আরও বলেন, “যদিও দুর্গাপুর বর্ধমানে একাধিক রাজ্যের এরকম সরকারি প্রকল্পের উদ্বোধন হয়। কোথাও আমার নাম থাকে না। দুদিন আগে প্রধানমন্ত্রী ভার্চুয়ালি দুর্গাপুরে নগর বনের উদ্বোধন করেছেন। কেন্দ্র সরকারের অনুদানে নগরবন তৈরী হবে। সেখানেও আমাকে আমন্ত্রন জানানো হয়নি। তবুও বনদফতরে জানিয়েছি, নগরবন তৈরীতে যদি কোনোরকম সহযোগিতার প্রয়োজন পড়ে, সাংসদ তহবিল থেকে সাহায্য করা হবে।”

আবার বিজেপি বিধায়ক লক্ষ্মণ ঘড়ুই বলেন,
“তৃণমূল দুর্গাপুরবাসীকে ভুয়ো স্মার্টসিটির স্বপ্ন দেখায়। ইন্টারেনেট এক্সচঞ্জের অনুষ্ঠানে তাদের গরহাজিরা সেটাই প্রমাণ করে।”

তবে অভিযোগ অস্বীকার করে দুর্গাপুরের মেয়র অনিন্দিতা মুখার্জি বলেন, “খুব ভালো প্রকল্প। শহরে ইন্টারনেট পরিষেবা উন্নত যেমন হবে। তেমনই সাশ্রয় হবে। শ্রদ্ধার সঙ্গে আমাকে আমন্ত্রন জানিয়েছিলেন। কিন্তু ব্যক্তিগত কাজে বাইরে থাকায় যেতে পারিনি। আমি তার জন্য ক্ষমাপ্রার্থী। তবে আমার দফতরের আইটি বিভাগের প্রতিনিধিকে পাঠিয়েছিলাম।” 

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *