স্নেহাশীষ মুখার্জি, আমাদের ভারত, নদিয়া, ১ এপ্রিল: রাতের অন্ধকারে ধারাল অস্ত্রের আঘাতে আক্রান্ত দুই যুবক। ঘটনাটি নদিয়ার কল্যাণীর সগুনা পঞ্চায়েত এলাকার। একজনের অবস্থা আশঙ্কাজন।
গত বুধবার রাতে ধারাল অস্ত্রের আঘাতে আক্রান্ত হয় ওই এলাকার দুই যুবক। খবর পেয়ে পরিবারের সদস্যরা ছুটে আসে এবং কল্যাণী জেএনএম হাসপাতালে নিয়ে গেলে একজনকে প্রাথমিক চিকিৎসা করে ছেড়ে দেওয়া হয় এবং অপর জনকে গুরুতর জখম অবস্থায় কলকাতায় স্থানান্তরিত করা হয়। এই ঘটনায় এলাকায় রীতিমতো চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পরে। জানা যায় আক্রান্ত যুবকের নাম তুষার কীর্তনিয়া, দীপঙ্কর (বান্টি) মন্ডল। তাদের বাড়ি একজনের সগুনা রথতলা ও অপর জনের বাড়ি ১নং লিচু তলা।
তুষার কির্তনীয়া জানান, “বুধবার সকালে তুষার বান্টির সাথে এক বন্ধুর বাড়িতে গেছিল। সেই সময়ে রাজ রাস্তা দিয়ে যাচ্ছিল। ওর নাম ধরে বান্টি ওকে ডাকে। তখন রাজ বান্টিকে ‘বাবা’ বলে ডাকতে বলে। সেই নিয়ে রাজের সাথে আমাদের তর্কাতর্কি হয়। এরপর রাতের বেলায় রাজু প্রকাশ আমাদের দু’নম্বর ফরেস্টের কাছে আসতে বলে। সেখানে সকালের ঘটনা নিয়ে তর্কাতর্কি হতে হতেই প্রথমে রাজ আমাকে দা দিয়ে কোপ মারে। আমি রক্তাক্ত অবস্থায় মাটিতে লুটিয়ে পড়ে গেলে প্রকাশ ও রাজ বান্টিকেও দা দিয়ে এলোপাথাড়ি কোপ মারে। তখন আনুমানিক রাত প্রায় এগারোটা। বান্টির অবস্থা আশঙ্কাজনক। ওকে কলকাতার এসএসকেএম হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়।”
তুষার কীর্তনীয়ার দিদি মান্তু কির্তনীয়া বলেন, “কি হয়েছে আমরা জানি না, তবে ও সুস্থ হোক তারপরেই সব জানা যাবে। আমরা চাই এখন ওরা সুস্থ হোক। শুনেছি যারা ওদের মেরেছে তাদের পুলিশ নিয়ে গেছে।”
প্রত্যক্ষদর্শী সমীর বিশ্বাস জানান,”বুধবার সকালে বান্টি, তুষার ও প্রকাশের মধ্যে একটা বিষয় নিয়ে ঝামেলা হয়েছিল। এরপর রাতের বেলায় রাজ ও প্রকাশ তুষার ও (দীপঙ্কর)বান্টিকে ফোন করে দু’নম্বর ফরেস্টের কাছে আসতে বলে। সেখানে কিছুক্ষণ তর্কাতর্কি হওয়ার পর রাজ তুষার কে বাম গালে দা দিয়ে কোপ মারে। রক্তাক্ত অবস্থায় রাজ মাটিতে লুটিয়ে পড়ে। এরপর রাজ ও প্রকাশ দুজনে মিলে এলোপাথাড়ি দা দিয়ে কোপাতে থাকে বান্টিকে। বান্টির মাথার পেছনে দুই গালে দা দিয়ে আঘাত করা হয়। ঘটনাস্থলে তুষার ও বান্টি রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে থাকে। সেখান থেকে আমি এবং ওখানকার স্থানীয় কয়েকজন ওদেরকে নিয়ে কল্যাণী জে এন এম হাসপাতালে ভর্তি করি। ওখানে এক্সরে করার পর অবস্থা আশংকাজনক হওয়ায় বান্টিকে কলকাতার এসএসকেএম হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়।
অন্যদিকে অভিযোগের ভিত্তিতে রাত ২.৩টা নাগাদ প্রকাশ ও রাজকে পুলিশ ফরেস্টের সামনে থেকে তুলে নিয়ে যায়।
তবে এরা এক সময় এক সঙ্গে চলাফেরা করত, কিন্তু এদের মধ্যে গতকাল কি নিয়ে ঝামেলা হয়েছে তা আমার জানা নেই। আমার ধারণা এটা পুরনো কোনো শত্রুতার জের।”
পুলিশ সূত্রে জানা যাচ্ছে, সগুনার কদম বাগানে মদ খেয়ে নিজেদের মধ্যে ঝামেলা হয়। বচসা চলতে চলতে হঠাৎ ই তুষার কীর্তনীয়া, ও দীপঙ্কর মন্ডল ওরফে বান্টি কে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কোপায় রাজ ও প্রকাশ।
পুলিশ বুধবার রাতেই রাজ ও প্রকাশ কে গ্রেপ্তার করেছে। বৃহস্পতিবার কল্যাণী কোর্টে তোলা হলে দুজনের চার দিনের পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ হয়।