শান্তিপুরে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করল এক দম্পতি

স্নেহাশীষ মুখার্জি, আমাদের ভারত, নদীয়া, ১২ নভেম্বর:
গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করল এক দম্পতি। ঘটনাটি ঘটেছে শান্তিপুরের ২২ নং ওয়ার্ডের কারিগর পাড়ায়। এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।

পরিবার সুত্রে জানাগেছে, বছর পঁচিশের মলি খাতুনের সঙ্গে বছর তিরিশের সাব্বির সেখের বিয়ে হয় এক বছর আগে। সাব্বিরের বাড়ির পাশের পাড়া মালঞ্চ পাড়ায় মেয়ের পরিবার থাকে। অভিযোগ সাব্বিরের মার সঙ্গে বাড়িতে প্রায়ই সাব্বিরের স্ত্রী মলি খাতুনের ঝগড়া হতো।
তাই মলি খাতুন এযাবৎ বাপের বাড়িতেই থাকত। এরইমধ্যে মলির গর্ভে সাব্বিরের সন্তান আসে। চার মাসের গর্ভবতী মলি। কিন্তু কেন এভাবে শ্ব‌শুর বাড়িতে সাব্বির ও তার স্ত্রী মলি আত্মহত্যার পথ বেছে নিল তা নিয়ে কোনো পক্ষই সদুত্তর দিতে পারছে না।

স্থানীয় মানুষের দাবী সাব্বিরের আগে একবার বিয়ে হয়েছিল। আবার মলিরও এর আগে একবার বিয়ে হয়েছিল। তার পর দুই পরিবার দেখা শোনা করে আবার বিয়ে দেয় সাব্বির আর মলির। মলির পরিবারের দাবি, সাব্বিরের বাড়িতে প্রায়ই অশান্তি হত, সেই কারনে সাব্বির তার শ্বশুর বাড়িতেই থাকত। ভালোই সুখে শান্তিতে ছিল। তবে কেন এমন হল? সাব্বিরের পরিবার সুত্রে খবর লকডাউনে পরিবারের আর্থিক অবস্থা খুব খারাপ হয়ে যায়। ফলে বেশ কিছু দিন যাবৎ মানসিক চাপে ছিল সব্বির। ছোট খাটো কাপড়ের ব্যবসা করত, লকডাউনে তা বন্ধ হয়ে যাওয়ার ফলে আরোও আর্থিক ও মানসিক চাপের মধ্যে ছিল। বাড়িতে একটা পাওয়ার লুম মেশিন ছিল। লকডাউনে সেটাও বন্ধ হয়ে যায়। সাব্বিরের পরিবারের প্রাথমিক ধারণা কি করবে বুঝে উঠতে না পেরেই এই আত্মহত্যা।

তবে গত কাল রাতে সাব্বির নিজের বাড়িতে থেকে কিছু খাবার নিয়ে শ্ব‌শুর বাড়িতে আসে। সাব্বিরের শ্বশুরবাড়ির লোকজনের দাবি রাত সাড়ে দশটা নাগাদ দুজনে গল্প করছিল। তাঁর পর কেন এঘটনা ঘটলো তাদের জানা নেই। আজ সকালে মলির ভাই গাড়ির চাবি নেবে বলে ডাকাডাকি করছিল তার দিদি ও জামাইবাবুকে। কিন্তু অনেকক্ষণ ডাকাডাকির পর কোনও উত্তর না পাওয়ায় তার সন্দেহ হয়। বাড়ির সবাইকে ডাকে। তারা অনেকক্ষণ ডাকাডাকি করে কিন্তু তারপরও কোনও সাড়াশব্দ মেলে না। এরপর ঘরের দরজা ভেঙ্গে মলির ভাই ও তার পরিবারের লোকজন ঘরে ঢুকলে দেখে সাব্বির গলায় দড়ি দিয়ে ঝুলছে। আর পলি খাটে শুয়ে আছে তবে পলির গলায় ফাঁসের দাগ আছে। গোটা ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে শান্তিপুর থানার পুলিশ ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *