স্নেহাশীষ মুখার্জি, আমাদের ভারত, নদীয়া, ২১ জুলাই:
ভুল চিকিৎসায় বাদ গেল শিশুর হাত। এই ঘটনায় কৃষ্ণনগরের এক বেসরকারি নার্সিংহোমের বিরুদ্ধে অভিযোগের আঙুল উঠেছে। ভুল চিকিৎসার শিকার ওই শিশু হাঁসখালি থানার বাজিতপুর গ্রামের বাসিন্দা।
সূত্রের খবর, নদিয়ার হাঁসখালির বাজিতপুর গ্রামে আনজোলা মণ্ডল নামে এক মহিলা তার ছেলেকে নিয়ে থাকেন। কয়েক বছর হল তার স্বামী মারা গেছেন। কোনওরকমে ভিক্ষা করেই তাদের দিন গুজরান হয়। কয়েকদিন আগে এই আনজোলা মন্ডলের ছেলে নূর হোসেনের বাড়ির পাশে এক জাম গাছ থেকে পড়ে গিয়ে হাত ভেঙ্গে যায়। প্রতিবেশীরা দেরি না করে ৮ বছরের শিশু নুর কে নিয়ে কৃষ্ণনগরের সেন্ট্রাল নার্সিংহোমে যায়। কর্তব্যরত ডাক্তার জানান শিশুটি তাড়াতাড়ি সম্ভব অপারেশন করতে হবে এবং অপারেশন করতে কুড়ি হাজার টাকা লাগবে। প্রতিবেশীরা শিশুটি ভবিষ্যতের কথা ভেবে অপারেশনের জন্য কুড়ি হাজার টাকা তুলে নূর কে নিয়ে কৃষ্ণনগরের ডাক্তার বাসুদেব মন্ডলের সেন্ট্রাল নার্সিংহোমে ভর্তি করে।
অভিযোগ অপারেশনের পর দুদিন রাখার পরই শিশুটিকে নার্সিংহোম থেকে ছেড়ে দেওয়া হয়। কিন্তু বাড়িতে আসার পর অভিযোগ শিশুটির হাতে পুঁজ জমে যায় এবং অসহ্য যন্ত্রণা শুরু হয়। পুনরায় শিশুটিকে কৃষ্ণনগরের ডাক্তার বাসুদেব মন্ডলের সেন্ট্রাল নার্সিংহোমে নিয়ে যাওয়া হয়। অভিযোগ সেখানে যাওয়ার পর কর্তব্যরত ডাক্তার জানান হাতে ইনফেকশন হয়ে গেছে। তাদের আর কিছু করার নেই। যে কোনও সরকারি হাসপাতালে নিয়ে যাবার জন্য ওই নার্সিংহোম তাদের পরামর্শ দেন। এরপর 8 বছরের শিশু নূর কে কল্যাণী জেএন এম হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। অভিযোগ সেখানে ডাক্তাররা জানান নার্সিং হোমে ভুল চিকিৎসা হয়েছে। নার্সিংহোমের ভুলের খেসারত হিসেবে সরকারি হাসপাতালে শিশুটির হাত কেটে বাদ দেওয়া হয়।
শিশুটির প্রতিবেশীদের দাবি ভুল চিকিৎসার জন্য নার্সিংহোম কে ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। না হলে তারা আইনের দ্বারস্থ হবে। শিশুটির মা আনজোলা মন্ডল জানান আমার কেউ নেই। স্বামী ও আমাকে ছেড়ে চলে গেছে। যাও বা প্রতিবেশীরা কুড়ি হাজার টাকা সাহায্য করেছিল সেটাও গেল। আর আমার ছেলের হাতটাও চলে গেল। আমি কি নিয়ে বাঁচব। আমি চাই, যে আমার ছেলের ভুল চিকিৎসা করেছিল তার যেন সাজা হয়।