Awas Yojana, Bankura, বাঁকুড়ায় আবাস যোজনা নিয়ে শাসক-বিরোধী তরজা তুঙ্গে

সোমনাথ বরাট, আমাদের ভারত, বাঁকুড়া, ২০ ডিসেম্বর: উপভোক্তাদের অ্যাকাউন্টে আবাস যোজনার টাকা ঢুকতেই শাসক বিরোধী তরজা তুঙ্গে উঠেছে।বিজেপির পক্ষ থেকে আবাস প্রকল্পে শাসক দলের ব্যাপক দুর্নীতি ও স্বজনপোষণের অভিযোগ তোলা হচ্ছিল।বিশেষ করে ছাতনা ও ইন্দাসের ঘটনা জানাজানি হতেই এই প্রচারে বিশেষ সুবিধা পায় বিজেপি। কিন্তু বিষ্ণুপুর ব্লকের বড়ামারা গ্রামে ঘরের দেওয়াল চাপা পড়ে তিন শিশুর মৃত্যুর ঘটনার পর সেই প্রচারে ধাক্কা খায় বিজেপি।দেওয়াল চাপা পড়ে প্রাণ হারায় রোহন সর্দার, নিশা সর্দার ও অঙ্কুশ সর্দার নামের তিন শিশু। আবাস যোজনায় বাড়ি না পাওয়ায় বিপজ্জনক মাটির বাড়িতে তাদের থাকতে হতো। সাংসদ তথা তৃণমূল নেতা অভিষেক বন্দ্য়োপাধ্যায় দিল্লিতে এই ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়েছিলেন। আবাস যোজনার টাকা ছাড়ার দাবিতে এদের নিয়ে দিল্লিতে সরব হয়েছিলেন। বুধবার এই মৃত ৩ শিশুর পরিবার পেল আবাস যোজনার প্রথম কিস্তির টাকা। এই তিন পরিবারের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের টাকা ঢুকেছে। এই ঘটনার খবর ছড়িয়ে পড়তেই ফের শুরু হয় শাসক ও বিরোধী দলের মধ্যে বিতর্ক ও একে অপরকে দোষারোপ।

উল্লেখ্য, গত ২০২৩ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর বিষ্ণুপুরের বড়ামারা গ্রামে ঘরের দেওয়াল চাপা পড়ে মৃত্যু হয় রোহন সর্দার, নিশা সর্দার ও অঙ্কুশ সর্দার নামের তিন শিশুর। এই দুর্ঘটনার ২৪ ঘণ্টা কাটতে না কাটতেই এই তিন পরিবারকে দিল্লি নিয়ে গিয়ে তৃণমূল সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় আবাসের টাকা দেওয়ার দাবিতে অবস্থান শুরু করেন। আবাস যোজনার টাকা এই তিন পরিবার পাওয়া তাদের সাফল্য বলে দাবি করছে শাসক দল।

যদিও দুর্ঘটনার পর এই পরিবারগুলি সরকারি সাহায্য পায়নি। প্রশাসনের বক্তব্য, এবার ওই তিন পরিবার বাংলার বাড়ি প্রকল্পে ১ লক্ষ ৩০ হাজার টাকা করে পাবে। বিজেপির দাবি, রাজ্যে আবাস প্রকল্পে শাসক দলের ব্যাপক দুর্নীতি ও স্বজনপোষণের কারণেই এমন হাজার হাজার উপভোক্তা বঞ্চিত হয়েছেন। দুর্নীতি বা স্বজনপোষণ না হলে আগেই এই তিন পরিবার বাড়ি পেতেন। এই তিন শিশুকে অকালে হারাতে হতো না।

সোনামুখীর বিজেপি বিধায়ক দিবাকর ঘরামি ও ওন্দার বিধায়ক অমর নাথ শাখা এসব জানিয়ে বলেন, তৃণমূল সব সময় কেন্দ্রের বঞ্চনার কথা বলে। বর্ষাকালে মাটির দেওয়াল চাপা পড়ে মানুষের মৃত্যু হলেও কেন্দ্রকে দোষারোপ করতে শোনা যায়। কিন্তু আবাসের টাকা নিয়ে ব্যাপক দুর্নীতি হয়েছে সে কথা মুখেও আনে না।তাদের বক্তব্য, নিজেদের পাকা দোতলা বিশাল বাড়ি থাকা সত্বেও ছাতনা পঞ্চায়েত সমিতির কর্মধ্যক্ষ সুকুমার চট্টোপাধ্যায় এবং পাত্রসায়র ব্লকের বালসী ২ নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েতের পানপুকুর মাঝি পাড়ার তৃণমূল অঞ্চল সহ সভাপতি নিমাই মাঝি ও তার ভাই তৃণমূলের অঞ্চল কোর কমিটির সদস্য আনন্দ মাঝির নাম আবাস তালিকায় উপভোক্তা হিসাবে থাকে কিন্তু এই গৃহহীন গরিবদের নাম থাকে না। এটা স্বজন পোষন ছাড়া আর কী হতে পারে।

শাসক দল তৃণমূলের পক্ষে এই ৩ পরিবারকে বাড়ি দেওয়ার সম্পূর্ণ কৃতিত্ব রাজ্যের সরকারকেই দিয়েছে। তৃণমূলের বিষ্ণুপুর সাংগঠনিক জেলা সভাপতি বিক্রমজিৎ চট্টোপাধ্যায় জানিয়েছেন যে, বুধবার থেকে বহু মানুষের অ্যাকাউন্টে আবাসের টাকা ঢুকতে শুরু করেছে। প্রায় ১২ লক্ষ অ্যাকাউন্টে আবাস যোজনার টাকা ঢুকে যাবে।প্রথম কিস্তির ৬০ হাজার টাকা করে ঢুকছে। এটা রাজ্য সরকারের সাফল্য। বৃহস্পতিবার এনিয়ে জেলার প্রায় সর্বত্র জোর তরজা চলতে দেখা যায়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *