বনগাঁয় ২০০ কোটি টাকারও বেশি সম্পতি শঙ্করের, সাংবাদিক বৈঠক করে খতিয়ান দিলেন বিজেপি নেতা

সুশান্ত ঘোষ, আমাদের ভারত, উত্তর ২৪ পরগণা, ৬ জানুয়ারি: শুক্রবার সকাল থেকে অভিযান। এরপর মধ্যরাতে গ্রেফতার হন বনগাঁর দাপুটে তৃণমূল নেতা তথা প্রাক্তন খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক ঘনিষ্ঠ শঙ্কর আঢ্য। শ্বশুরবাড়ির থেকে সাড়ে আট লাখ টাকা উদ্ধার করেছে ইডি। একটি আলমারি থেকে পাওয়া গিয়েছিল বান্ডিল বান্ডিল নগদ টাকা। আর শঙ্করের গ্রেফতারির পরই তাঁর বিরুদ্ধে মুখ খুললেন বনগাঁর বিজেপি সভাপতি দেবদাস মণ্ডল। তাঁর দাবি, ২০০ কোটি সম্পত্তির মালিক এই শঙ্কর। একসময় ঠেলা গাড়িতে করে চা বিক্রি করা এই তৃণমূল নেতা রাতারাতি কীভাবে কোটি কোটি টাকার মালিক হলেন সেই নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন তিনি।

বিঘার পর বিঘা জমি, কফি শপ, সোনার দোকান, গোডাউন, বিদেশি মুদ্রা বিনিময়, বনগাঁ সীমান্ত এলাকার কোন ব্যবসার নেপথ্যে নেই প্রাক্তন পুরপ্রধান, দাপুটে তৃণমূল নেতা শঙ্কর আঢ্যর ওরফে ডাকু? শঙ্করবাবুর গ্রেফতারের পর রীতিমতো সাংবাদিক সম্মেলন করে তাঁর কীর্তি ফাঁস করতে বসেন বনগাঁ সাংগঠনিক জেলার বিজেপি সভাপতি দেবদাস মণ্ডল। রাজনৈতিক শিবির পৃথক হওয়ার জন্যই শুধু নয়, দেবদাস মণ্ডল বরাবর শঙ্কর আঢ্য তথা ডাকুর চরম বিরোধী বলেই পরিচিত ছিলেন। অতীতেও তাঁর বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগে সরব হয়েছিলেন দেবদাস মণ্ডল। এদিন সাংবাদিকদের সামনে দেবদাসবাবু বলেন, ”বনগাঁ মহকুমাজুড়ে শঙ্কর আঢ্যর প্রায় দুশো কোটি টাকার সম্পত্তি রয়েছে। একাধিক বাড়ি দখল করেছে। বহু বেনামি সম্পত্তি রয়েছে। এই বনগাঁতেই ৪-৫ বিঘে জমি রয়েছে। রয়েছে কফিশপ, দুটি সোনার দোকান, তাঁর মধ্যে একটি ভয় দেখিয়ে লিখিয়ে নেওয়া। দখল করা জমিতে বাবার নামে স্কুল। এছাড়া কলকাতা, দিল্লির করোলবাগে ফ্ল্যাট, দুবাইতে ছেলে শুভ আঢ্যর নামে বিশাল সম্পত্তি রয়েছে। জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের হাত ধরেই এত সম্পত্তি হয়েছে। আর তাঁর এই টাকার ভাগ নিয়েছেন জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক, ফিরহাদ হাকিম।”

দেবদাস মণ্ডলের আরও দাবি, সীমান্ত এলাকার মানুষজন আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্যের উপর নির্ভরশীল। কিন্তু তাতেও শঙ্কর আঢ্যর মতো ব্যক্তি দুর্নীতি করেছেন বলে অভিযোগ। বিজেপি নেতার দাবি, পেট্রাপোল সীমান্তে যে মুদ্রা বিনিময়ের অফিস রয়েছে, সেখানে অবৈধভাবে মুদ্রা বিনিময়ের নামে টাকা আয় করেন শঙ্কর। কটাক্ষ করে তাঁর আরও দাবি, জীবনের শুরুতে রাস্তার পাশে চায়ের দোকান ছিল শঙ্কর আঢ্যর। সেখানে চা বিক্রি করতেন। এরপর তৃণমূলে যোগ দেওয়ার পরই এমন ফুলেফেঁপে ওঠা। যদিও শঙ্করবাবু বার বারই দাবি করেছেন, তিনি নির্দোষ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *