পার্থ খাঁড়া, আমাদের ভারত, পশ্চিম মেদিনীপুর, ১৮ সেপ্টেম্বর: খড়্গপুর রেল বিভাগের ডিআরএম কনফারেন্স রুমে আজ এক গুরুত্বপূর্ণ প্রেস কনফারেন্স অনুষ্ঠিত হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন অতিরিক্ত বিভাগীয় রেলওয়ে ব্যবস্থাপক (অপারেশনস) শ্রীমতী মণীষা গোয়েল। উপস্থিত ছিলেন নিশান্ত কুমার (সিনিয়র বিভাগীয় বাণিজ্যিক ব্যবস্থাপক), প্রকাশ কুমার পণ্ডা (সিনিয়র বিভাগীয় নিরাপত্তা কমিশনার), অনুপ প্যাটেল (সিনিয়র বিভাগীয় প্রকৌশলী), প্রভাত প্রসাদ (সিনিয়র বিভাগীয় অপারেটিং ম্যানেজার) এবং প্রদীপ্ত সাহু (সিনিয়র বিভাগীয় যান্ত্রিক প্রকৌশলী)।
কুরমি সমাজের রেল রোকো আন্দোলন— শ্রীমতী গোয়েল জানান, কুরমি সমাজ ২০শে সেপ্টেম্বর থেকে রেল রোকো আন্দোলনের ঘোষণা দিয়েছে। এই কর্মসূচি মেদিনীপুর, কলাইকুন্ডা, খেমাসুলি, নিমপুরা, গালুডি, ভাঞ্জপুর ও বারিপদা স্টেশন-সহ মোট ৭টি স্থানে আয়োজনের পরিকল্পনা রয়েছে। তিনি বলেন, “এই আন্দোলনের দাবিগুলি রেলের আওতার মধ্যে নয়। গণতান্ত্রিক অধিকার সংরক্ষণ করতে গিয়ে যদি রেল চলাচলে বাধার সৃষ্টি হয়, তা লক্ষ লক্ষ যাত্রী এবং জরুরি পণ্য পরিবহনে বড় ধাক্কা হতে পারে।”
তিনি আরও জানান, উৎসবের এই ব্যস্ত সময়ে ট্রেন চলাচল ব্যাহত হলে সাধারণ মানুষের পাশাপাশি খাদ্যশস্য, কয়লা, সার ও জ্বালানি পরিবহনেও প্রভাব পড়বে।
নিরাপত্তা ও প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা— রেল বিভাগ রাজ্য প্রশাসন ও নিরাপত্তা সংস্থাগুলির সঙ্গে সমন্বয় করে বহুমুখী নিরাপত্তা পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে। যথা:
*৭টি সংবেদনশীল স্টেশনে বাড়ানো হয়েছে আরপিএফ ও জিআরপির মোতায়েন।
*গঠিত হয়েছে দ্রুত প্রতিক্রিয়া দল (QRT)।
*জেলা প্রশাসনের সঙ্গে গড়ে তোলা হয়েছে সমন্বয় কেন্দ্র।
*টহলদারি জোরদার করা হয়েছে রেললাইন, ইয়ার্ড ও স্টেশন এলাকায়।
*সামাজিক মাধ্যমে নজরদারি বাড়ানো হয়েছে আগাম সতর্কতা পেতে।
*বিভাগীয় সদর দফতরে খোলা হয়েছে ২৪x৭ জরুরি কন্ট্রোল রুম।
*স্থানীয় মিডিয়ার মাধ্যমে জনসচেতনতা বাড়ানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
রেল বিভাগ স্পষ্ট করেছে, গণতান্ত্রিক প্রতিবাদের অধিকার থাকলেও রেল পরিষেবা ব্যাহত হলে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ ঘোষণা:
উৎসব স্পেশাল ট্রেন— উৎসবের ভিড় সামাল দিতে খড়্গপুর বিভাগ থেকে ১৯ জোড়া উৎসব স্পেশাল ট্রেন চালানো হবে বলে জানান এডিআরএম এডিআরএম (অপারেশনস) এবং এসআর ডিসিএম।
পরিচ্ছন্নতা অভিযান— “স্বচ্ছতা হি সেবা” ও “স্বচ্ছতা পক্ষবাড়া” ক্যাম্পেইনের আওতায় স্টেশন, ট্রেন, ওয়ার্কশপ ও অফিসগুলোতে পরিচ্ছন্নতা অভিযান চালানো হচ্ছে। “স্বচ্ছোৎসব” কর্মসূচির অংশ হিসেবে চলছে নাটক ও সচেতনতা কর্মসূচি।
সুস্থ নারী, সশক্ত পরিবার অভিযান (SNSPA)— ১৭ই সেপ্টেম্বর থেকে শুরু হয়েছে এই অভিযান, যার মাধ্যমে মহিলাদের স্বাস্থ্য সচেতনতা ও চিকিৎসা সেবা পৌঁছে দেওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
হিন্দি পক্ষবাড়া উদযাপন— ১৪ই সেপ্টেম্বর থেকে হিন্দি পক্ষবাড়া উদযাপন করা হচ্ছে। এই উপলক্ষে চলছে বিভিন্ন প্রতিযোগিতা, প্রশিক্ষণ ও সচেতনতা অভিযান।
যাত্রীদের জন্য নিরাপত্তা বার্তা— রেল যাত্রীদের অনুরোধ করা হয়েছে, তারা যেন যাত্রার সময় কোনো দাহ্য বস্তু বহন না করেন। এতে দুর্ঘটনা এড়ানো সম্ভব।
শেষ বক্তব্যে শ্রীমতী গোয়েল বলেন, “রেল বিভাগ সব সময় নিরাপদ, দক্ষ এবং যাত্রীবান্ধব পরিষেবা দিতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। এই কাজে যাত্রী, স্থানীয় মানুষ ও অংশীদারদের সহযোগিতা একান্ত কাম্য।”