আশিস মণ্ডল, বীরভূম, ১১ ফেব্রুয়ারি: মারলে পাল্টা মার দেওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়ে গেলেন বিজেপি নেতা ও বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। পাশাপাশি জেলার একাধিক তৃণমূল নেতার নাম করে হুঁশিয়ারি দিয়ে শুভেন্দু বলেন, বিজেপি কর্মীদের হুমকি দিলে আপনাদের অবস্থাও অনুব্রত মণ্ডল, কেরিম খানদের মতো হবে। সভা শেষে তিনি জানিয়ে যান, আগামী ২১ মার্চ রামপুরহাটের বগটুই গ্রামে যাবেন। সেখানে গণহত্যায় নিহতদের স্মরণ করবেন।
শনিবার বিকেলে বীরভূমের ময়ূরেশ্বর থানার কোটাসুরে প্রকাশ্য সভার আয়োজন করে বিজেপি। সভায় প্রধান বক্তা হিসাবে উপস্থিত ছিলেন শুভেন্দু অধিকারী। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন প্রিয়াঙ্কা টিবরেওয়াল, রাজ্য সাধারণ সম্পাদক জগন্নাথ চট্টোপাধ্যায়, শ্যামাপদ মণ্ডল। সভার শুরুতেই ময়ূরেশ্বর ২ নম্বর পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি জটিল মণ্ডল সহ কয়েকজনের নাম মুখে নিয়ে শুভেন্দু বলেন, “এখানে ওই সমস্ত মস্তানরা আছেন নাকি? ২০১৮ সালের পঞ্চায়েত নির্বাচনে খুব দাপিয়েছেন। ২০২১ সালের পর খুব মেরেছেন বিজেপি কর্মীদের। যদি বাপের ব্যাটা হন মারা তো দূরের কথা একটা হুমকি বিজেপি কর্মীদের দিয়ে দেখবেন আপনাদের অবস্থা কেরিম খানের থেকেও খারাপ করে দেব। এবার আর আগের নির্বাচনের মতো মস্তানি করতে দেওয়া হবে না। এই বীরভূম তোলাবাজ কেষ্ট মণ্ডলের নামে পরিচিত হবে না। এই বীরভূম মা তারা, রবীন্দ্র নাথ ঠাকুর, সাহিত্যিক তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায়, বাউলদের নামে পরিচিত হবে। আমরা শপথ নেব আগামী দিনে বীরভূম থেকে গুণ্ডামি, জেহাদিদের পরিস্কার করে এখানে রাষ্ট্রবাদী আন্দোলন প্রতিষ্ঠা করব।

আমাদের একটাই লক্ষ্য গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এবার আর মনোনয়নে ব্লকে, ভোটের সময় বুথে এবং গণনা কেন্দ্র দখল করতে দেব না। এক সময় জেলার নেতা বলতেন বুথে এলে গুড় বাতাসা দেবেন, চরাম চরাম ঢাক বাজাবেন, উন্নয়ন দাঁড়িয়ে আছে। তিনি আজ কোথায়? হারিয়ে গেছেন। অপেক্ষা করুণ তিহার জেলে গেলে বেলের মোরব্বা, অষ্টমীর দিন লুচি ডাল, দশমীর দিন কচি পাঁঠার ঝোল সব বেরিয়ে যাবে। এই চোর লুঠেরাদের বিরুদ্ধে গোটা বীরভূমের মানুষ ঐক্যবদ্ধ হয়েছেন। এরা আবাস যোজনার টাকা লুট করেছে। ভাইপো উত্তরবঙ্গে গিয়ে বলছে বাংলা আবাস যোজনা। ওটা পিসিমণি যোজনা হবে। হাজার হাজার শৌচালয় দিয়েছেন মোদীজি কিন্তু কেউ পাননি। গ্রাম বাংলায় বাড়ি পিছু ৩০ হাজার টাকা করে দিয়েছেন মোদী সরকার, বাড়িতে ফলের বাগান করার জন্য। জব কার্ড হোল্ডারদের ১৫ হাজার টাকা করে ভারত সরকার দিয়েছে, কিন্তু কেউ পাননি। লুঠ করেছে বাংলার সরকার।
২১ মার্চ বগটুই গ্রামে গণহত্যা হয়েছিল। তার বর্ষপূর্তিতে আমি বগটুই গ্রামে যাব। পরীক্ষা চললে মাইক বাজাবো না। জেলা সভাপতি ধ্রুব সাহা স্মারক তৈরি করবে। সেই স্মারকের উদ্বোধন করব। পুস্পার্ঘ নিবেদন করব। অত্যাচারী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যিনি ভাদু আর আনারুলদের সৃষ্টি করেছেন তাদের ওইদিন আমরা ধিক্কার জানাব।

