আশিস মণ্ডল, রামপুরহাট, ২৩ আগস্ট: করোনা আক্রান্ত হলেই তাকে হাসপাতালে কিংবা সরকারি আইসোলেশনে থাকতে হবে তার কোন ও মানে নেই। বাড়িতে থেকেও সুস্থ হয়ে ওঠা যায়। এমনটাই মনে করেন রাজ্যে কোভিড সংক্রান্ত উপদেষ্টা মণ্ডলীর সদস্য চিকিৎসক অভিজিৎ চৌধুরী। একই সঙ্গে কোভিড আক্রান্তের বাড়ি বাঁশ দিয়ে বেঁধে দেওয়ার বিপক্ষে মত দেন তিনি।
রবিবার রামপুরহাট বাস স্ট্যান্ড সংলগ্ন লক্ষ্মী অনুষ্ঠান ভবনের সভাকক্ষে করোনা নিয়ে একটি সচেতনতা সভার আয়োজন করা হয়। মল্লারপুর নইসুভা এবং বীরভূম জার্নালিস্ট ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের সহযোগিতায় এবং কোভিড কেয়ার নেটওয়ার্ক সোসাইটির উদ্যোগে এই সভায় মূল বক্তা ছিলেন রাজ্যে কোভিড সংক্রান্ত উপদেষ্টা মণ্ডলীর সদস্য চিকিৎসক অভিজিৎ চৌধুরী। উপস্থিত ছিলে রামপুরহাট মহকুমার স্বাস্থ্য কর্মী, বিভিন্ন ক্লাব, লাইন্স ক্লাব সদস্য, শিক্ষক, জনপ্রতিনিধি, করোনা আক্রান্তরা।
সভায় বক্তব্য রাখতে গিয়ে অভিজিৎবাবু পরিষ্কার জানিয়ে দেন, করোনায় আক্রান্ত হলেই ভয় পাবেন না। বরং মনকে শক্ত করে করোনাকে জয় করতে হবে। করোনা হলে সব ক্ষেত্রে কোভিড হাসপাতাল কিংবা সরকারি আইসোলেশনে থাকতে হবে তার কোনও মানে নেই। বাড়িতে পৃথক থাকার জায়গা থাকলে সেখান থেকেই চিকিৎসা করা যেতে পারে। তবে নিজেকে ১৪ দিন নিভৃতবাসে থাকতে হবে। যাতে আক্রান্তের সংস্পর্শে এসে আরও কেউ আক্রান্ত না হন। একই সঙ্গে আক্রান্তের বাড়ির সামনে বাঁশ বেঁধে দেওয়ারও বিরোধিতা করেন তিনি। বাঁশ বেঁধে দিলে সামাজিক ভাবেও তাকে অচ্ছুৎ করা হয়। কেউ কেউ বাঁকা চোখে দেখে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে বাধ্য হয়ে বাঁশ বেঁধে দেয়। তবে বিষয়টি পাড়ার ক্লাবের ছেলেদের দেখা উচিত বলে মনে করেন অভিজিৎবাবু। সভায় করোনা আক্রান্তদের একটি গ্রুপ তৈরি করে মানুষকে সচেতনতা বার্তা দেওয়ার আবেদন জানান।
এদিনের সভায় করোনা জয়ী এক ওষুধ ব্যবসায়ী সামসুদ্দিন আহমেদ প্লাজমা দেওয়ার কথা ঘোষণা করেন। অভিজিৎবাবু তার নাম প্লাজামা গ্রুপে পাঠিয়ে দেন। খুব শীঘ্রই তার প্লাজমা নেওয়া হবে। সামসুদ্দিন স্বেচ্ছায় প্লাজমা দিতে এগিয়ে আসায় খুশি অভিজিৎ চৌধুরী। তিনি বলেন, “এই মুহূর্তে প্লাজমার খুব প্রয়োজন। সকলে যদি এভাবে এগিয়ে আসে তাহলে বহু মানুষ উপকৃত হবেন। আরও বেশি সংখ্যক মানুষকে এগিয়ে আসতে হবে”।
রাজ্যের লকডাউনের যৌতিকতা নিয়ে তিনি বলেন, “লকডাউন করে কতটা করোনা সংক্রমণ রোখা যাবে তা আমি বলতে পারব না। তবে যারা লকডাউনের কথা ঘোষণা করছেন তাদের নিশ্চয় বিজ্ঞানসম্মত কোনও যুক্তি রয়েছে। তবে আমি মনে করি মানুষ সচেতন না হলে করোনাকে হারানো যাবে না”।

