“আমাদের মারলে আমরাও মস্তান বাহিনী এনে তৃণমূলের হাত কেটে দেবো”, বিস্ফোরক মন্তব্য কংগ্রেসের জেলা সভাপতি মোহিত সেনগুপ্তের

স্বরূপ দত্ত, আমাদের ভারত, উত্তর দিনাজপুর, ১৩ এপ্রিল: আমাদের যদি কেউ মারে, আমাদের যদি পুলিশ এবং মস্তান বাহিনী মারে, তাহলে আমরাও রুখে দিব। তৃণমূল কংগ্রেস যদি মনে করে কালিয়াচক থেকে মস্তান আনবে, তাহলে আমরাও কথা বলে রেখেছি, কিশানগঞ্জ থেকে মস্তান বাহিনী এনে তৃণমূলের হাত কেটে দেবো। রুখে দিব, মারের বদলা মার, না হলে তৃণমূল কংগ্রেসকে মারা যাবে না। বৃহস্পতিবার দুপুরে ইটাহারে একটি দলীয় যোগদান কর্মসূচির মঞ্চে দাঁড়িয়ে এমনই বিস্ফোরক মন্তব্য করলেন কংগ্রেসের জেলা সভাপতি মোহিত সেনগুপ্ত। যাকে ঘিরে রাজনৈতিক উত্তাপ সৃষ্টি হয়েছে উত্তর দিনাজপুরে।

প্রধান বিরোধী দল বিজেপি নয়, শক্তিবৃদ্ধি হতেই এবার হুঙ্কার হাত শিবিরে। এদিন দুপুরে উত্তর দিনাজপুরের ইটাহারের চৌরাস্তা মোড়ে উল্কা ক্লাবের সামনে কংগ্রেসের যোগদান কর্মসূচি ছিল। সেখানে ইটাহারের প্রাক্তন তৃণমূল বিধায়ক অমল আচার্যর গোষ্ঠীর বেশ কয়েকজন তৃণমূল কংগ্রেস ছেড়ে কংগ্রেসে যোগদান করেন। তাদের হাতে দলীয় পতাকা তুলে দেন রায়গঞ্জের প্রাক্তন বিধায়ক ও প্রাক্তন পৌরপতি তথা কংগ্রেসের জেলা সভাপতি মোহিত সেনগুপ্ত। এদিন এই মঞ্চে একেবারে টপ মুডে ছিলেন মোহিত সেনগুপ্ত। কার্যত এক সময়ের নিজেদের গড় হাতছাড়া হওয়ার পর সেই গড়কে পুনরুদ্ধারের সুত্র পেতেই যেন বাড়তি অক্সিজেন পাচ্ছে জাতীয় কংগ্রেস। মূলত সাগরদিঘি উপ নির্বাচনের পর উত্তর দিনাজপুর জেলাতেও আবারো মাটি শক্ত হতে শুরু করেছে কংগ্রেসের। আর এতেই বিগত ২০১৭ সালের রায়গঞ্জ পৌরসভা নির্বাচন বা ২০১৮ সালের পঞ্চায়েত নির্বাচনের পুনরাবৃত্তি হবে না, তার জন্যেই এই হুঁশিয়ারি বলে দাবি মোহিতের।

এদিন তিনি আরো বলেন, মানুষ এবার জবাব দেবে। মানুষ প্রতিরোধ করবে। ২০১৮ -র পঞ্চায়েত এবার হবে না। তৃণমূল রুখতে এলে পালটা জবাব দিতে কংগ্রেসও প্রস্তুত থাকবে বলে তার দাবি।

যদিও মোহিতকে “৭২-এর গুন্ডা” বলে পালটা কটাক্ষ করেছে শাসক শিবির। এদিন এই বিষয়ে জেলা তৃণমূলের মুখপাত্র সন্দীপ বিশ্বাস বলেন, মমতা ব্যানার্জির উন্নয়ন দেখিয়েই আমাদের ভোট হবে। তৃণমূল গুন্ডাগিরি করে না। আমাদের কোনো গুন্ডার প্রয়োজন পড়ে না। কারা গুন্ডাগিরি করে তা কংগ্রেসের জেলা সভাপতিই বলে দিয়েছেন।

তবে এক সময়ের কংগ্রেসেরই গড় বলেই পরিচিত ছিল উত্তর দিনাজপুর জেলা। পরবর্তীতে সেই মাটি হাতছাড়া হয়ে শাসক দল তৃণমূলের দখলে যায়। এবারে রাজ্যজুড়ে চলা দুর্নীতি কান্ডের পর মুর্শিদাবাদ সহ উত্তর দিনাজপুর জেলাতেও ফের মাটি শক্ত হতে শুরু করেছে কংগ্রেসের। আর আসন্ন পঞ্চায়েতের আগে হারানো জমি পুনরুদ্ধারে দলীয় কর্মীদের মনোবল বাড়াতে কংগ্রেসের জেলা সভাপতি মোহিত সেনগুপ্তের এই হাত কেটে নেওয়ার বিস্ফোরক মন্তব্য যথেষ্টই কর্মীদের মনে প্রভাব ফেলবে বলে অভিমত ওয়াকিবহাল মহলের।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *