আমাদের ভারত, ১৪ ডিসেম্বর: কলকাতা এবং তার পার্শ্ববর্তী এলাকায় শিক্ষকদের বদলি নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেছে কলকাতা হাইকোর্ট। শিক্ষকের ঘাটতি নিয়েও বুধবার রাজ্যের সমালোচনা করেছে আদালত। শিক্ষক বদলি নিয়ে নির্দিষ্ট নীতি তৈরি করা যায় কিনা রাজ্যের অ্যাডভোকেট জেনারেল সৌমেন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায়ের কাছে জানতে চান বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসু। একই সঙ্গে নতুন শিক্ষক নিয়োগ নিয়ে প্রশ্ন তোলেন তিনি।
অ্যাডভোকেট জেনারেল জানান, ছাত্র ও শিক্ষকের আদর্শ অনুপাত কত হওয়া উচিত, তা নিয়ে একটি জনস্বার্থ মামলা চলছে প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চে। সেখান থেকে তথ্য সামনে আসবে। বাড়ির কাছে স্কুলে বদলি চেয়ে হাইকোর্টে মামলা করেন শিক্ষকরা। হাইকোর্টের পর্যবেক্ষণ, এমন কয়েকটি মামলার বিচার হয়েছে বা মামলা আছে যারা নানা অজুহাতে বাড়ির কাছে কোনো স্কুলে বদলি চাইছেন। কেউ কেউ আবার নির্দিষ্ট করে স্কুলের নামও বলে দিচ্ছেন। রাজ্য অনেক ক্ষেত্রে বদলি করেও দিচ্ছে। আবার এমন অনেকে বদলির আবেদন নিয়ে আদালতে আসছেন পরে দেখা যাচ্ছে বদলি নেওয়ার পিছনে তাদের কোনো কারণই নেই। শুধুমাত্র বাড়ির কাছে থাকতেই বদলির আবেদন করেছেন শিক্ষকরা। এই বিষয়টি নজরে আসতে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন বিচারপতি। তার মন্তব্য শিক্ষকরা যদি এমন করেন পড়ুয়াদের কি হবে? এটা বন্ধ হওয়া প্রয়োজন।
বিচারপতি বলেন, “সকালে একজন শিক্ষককে বলতে শুনলাম যিনি স্কুলের নাম বলে দিচ্ছেন কোথায় বদলি হতে চান সেখানে গিয়ে তিনি নাকি ছাত্র পড়াবেন। কিন্তু এটা চিন্তার বিষয়। “হাইকোর্টে শুনানিতে উঠে এসেছে কলকাতা বা তার আশেপাশের ১১৫ টি স্কুল আছে যেখানে ৫০০ জনের বেশি শিক্ষক রয়েছে। অথচ স্কুল গুলিতে পড়ুয়ার সংখ্যা অত্যন্ত কম। কোথাও কোথাও একজন পড়ুয়াও নেই। এর প্রেক্ষিতেই রাজ্য সরকারের উদ্দেশ্যে বিচারপতির মন্তব্য, আপনাদের যদি মনে হয়, শিক্ষক বেশি হয়ে গিয়েছে তাহলে নতুন নিয়োগ করছেন কেন? এরপরই রাজ্যকে এই ধরনের বদলির বিষয়ে নীতি তৈরির পরামর্শ দিয়েছে হাইকোর্ট। অন্যদিকে গ্রামের অনেক স্কুলে শিক্ষক না থাকার কারণে পড়ুয়ারা সঠিক শিক্ষা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে বলে আদালতের নজরে উঠে এসেছে। বিচারপতি বসুর মতে ছাত্র আছে শিক্ষক নেই, এমন হলে বাড়তি শিক্ষকদের পড়ুয়াদের বাড়িতে পাঠিয়ে দেওয়া হোক। এ প্রসঙ্গে তার প্রশ্ন, প্রয়োজনে এর জন্য নীতি তৈরি করতে সরকারের বাধা কোথায়?
আদালতের এই যুক্তির পরে অ্যডভোকেট জেনারেল জানান, রাজ্য সবসময় চায় ভালো শিক্ষক নিয়োগ করতে। এই ধরণের বদলির বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে। বিচারপতি বলেন হ্যাঁ কিছু একটা করুন। এত বদলি হলে গ্রামের স্কুল খালি হয়ে যাবে। সবাই শহরে আসতে চায়। আপনারা বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে ভেবে দেখুন।