আমাদের ভারত, ২৬ আগস্ট: সব ছাত্র ছাত্রী অনলাইন ক্লাস করতে পারছে না। তাই তাদের জন্য বিকল্প ভাবনায় পঠন-পাঠন শুরু করল ত্রিপুরা সরকার। আর এক্ষেত্রে রবীন্দ্রনাথের ভাবনাকেই শিরোধার্য করে পথ এগিয়েছেন তারা। হ্যাঁ প্রকৃতির কোলে বসে পাঠশালার মতোই পড়াশোনা শুরু করা হয়েছে ত্রিপুরার একাধিক জায়গায়। এই শিক্ষা প্রদানের এই ব্যবস্থার তারা নামকরণ করেছেন নেবারউড ক্লাস।
জানা গেছে স্কুলের খুব কাছেই কোন একটি জায়গায় খোলা আকাশের নিচে বসে ক্লাস করানো হচ্ছে ছাত্র-ছাত্রীদের। এক জায়গায় ৫ জনের বেশি ছাত্র-ছাত্রী থাকবে না। কড়াকড়িভাবে মানা হচ্ছে কোভিড নিয়ম বিধি। শিক্ষক হোক বা ছাত্র-ছাত্রী সকলেই ব্যবহার করছেন মাস্ক। ত্রিপুরা সরকার এই কর্মসূচির নাম দিয়েছে নেবারউড ক্লাস বা পাড়ায় পঠন-পাঠন।
তৃতীয় শ্রেণি থেকে শুরু করে দশম শ্রেণীর ছাত্র-ছাত্রীদের এইভাবেই ক্লাস করানো শুরু করেছে ত্রিপুরা শিক্ষা দপ্তর। ত্রিপুরার শিক্ষা মন্ত্রী বলেছেন,কোভিডের সমস্ত বিধি মেনেই খোলা আকাশের নিচে পঠন-পাঠন শুরু হয়েছে। সাড়ে ২৭ হাজারের বেশি সরকারি ও সরকারি সাহায্যপ্রাপ্ত স্কুলের শিক্ষক শিক্ষিকা ক্লাস নিতে শুরু করেছেন।
ক্লাস শুরুর আগে করোনা সংক্রান্ত কি কি বিধি মানা প্রয়োজন তা আগে বলে দিচ্ছেন শিক্ষক-শিক্ষিকারা। তারপরে শুরু করছেন। একই সঙ্গে এই ক্লাসে রোগ দেওয়ার বিষয়ে ছাত্র-ছাত্রী অভিভাবকদের কোনভাবেই জোর করা হচ্ছে না। সরকারের উদ্দেশ্য স্বতঃস্ফূর্তভাবে ছেলেমেয়েরা মুক্ত পরিবেশে পঠন-পাঠনে অংশগ্রহণ করে।
জানা গেছে এই রাজ্যে ইতিমধ্যেই প্রায় এক লক্ষ ছেলেমেয়ে পঠন-পাঠন প্রক্রিয়ায় যুক্ত হয়েছে। একটি সমীক্ষা অনুযায়ী ত্রিপুরার প্রায় ২৯ শতাংশ ছাত্রছাত্রীর পরিবারের কাছে স্মার্টফোন নেই, ৪৪% ছাত্র ছাত্রীদের বাড়িতে টিভি নেই। ফলে রাজ্যে সার্বিকভাবে অনলাইন শিক্ষা বাস্তবায়িত করা সম্ভব নয়। মহামারী পরিস্থিতিতে অনলাইনে শিক্ষা ব্যবস্থা শুরু হওয়ার সময়ই দেশের একাধিক ছাত্র ও শিক্ষক সংগঠন আপত্তি জানিয়েছিল। তাদের দাবি ছিল বাস্তব পরিস্থিতি বিবেচনা না করে কেন্দ্র সরকার ডিজিটাল শিক্ষার বোঝা চাপিয়ে দিচ্ছে। এতে আরও বেশি করে স্কুল ছুটের প্রবণতা বাড়বে। সেই সময়ে কেন্দ্রের তরফে বলা হয়েছিল বাস্তব পরিস্থিতি অনুযায়ী সংশ্লিষ্ট রাজ্যগুলিকে বিকল্প পথ সন্ধান করতে হবে। আর সেইমতো ত্রিপুরা বিকল্প পথের সন্ধান করে ও তা বাস্তবায়নের কাজ শুরু করে ফেলেছে।

