সব কাজ পুলিশ করলে ক্লাবকে টাকা দেওয়ার যুক্তি কী? দুর্গাপুজোয় অনুদান মামলার শুনানিতে প্রশ্ন আদালতের

আমাদের ভারত, ১৫ অক্টোবর: দুর্গাপুজো করার জন্য ক্লাবকে কেন অনুদান দিয়েছে রাজ্য সরকার সে প্রশ্ন তুলে হাইকোর্টে জনস্বার্থ মামলা করেছিলেন দুর্গাপুরের সিটু নেতা সৌরভ দত্ত। মামলাকারীর আশঙ্কা ছিল এর ফলে সংবিধানে ধর্মনিরপেক্ষতা নষ্ট হবে। বুধবার এই মামলার শুনানি ছিল। বিচারপতি সঞ্জীব ব্যানার্জির ডিভিশন বেঞ্চ এই মামলা শুনানিতে বেশ কিছু প্রশ্ন তুলেছেন। তাঁর মধ্যে অন্যতম প্রশ্ন ছিল, “পুলিশ যদি সব কাজ করে তাহলে কোন যুক্তিতে ক্লাবগুলোকে টাকা দিল সরকার।”

এই মামলার শুনানিতে আদালত নির্দিষ্ট করে বেশ কয়েকটি প্রশ্ন তুলেছে। প্রশ্ন তোলা হয়েছে, ‘অনুদান কি শুধু দুর্গাপূজাতেই সরকার দেয় নাকি অন্য উৎসবেও দেওয়া হয়? ইদেও কি দেওয়া হয়েছিল? দুর্গাপুজো নিয়ে আমরাও গর্বিত কিন্তু তাই বলে কি যেভাবে ইচ্ছে টাকা দেওয়া যায়? গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় কি ভেদাভেদ করা যায়?’

সরকারের উদ্দেশ্যে বিচারপতি বলেন, ‘আপনারা বলছেন যে এই টাকা দেওয়া হচ্ছে মাস্ক-স্যানিটাইজার কেনার জন্য। তাহলে এটা সরকার তো নিজেই কেন্দ্রীয় ভাবে কিনে বিলি করতে পারত তাতে খরচও কম হতো। এছাড়াও আদালত প্রশ্ন তুলেছে, যেখানে সংক্রমনের জন্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এখনো বন্ধ, সেখানে পুজোর অনুমতি কিভাবে দিলেন সরকার? কি সুরক্ষা বিধি মেনে চলছেন আপনারা? ভিড় নিয়ন্ত্রণে ব্লুপ্রিন্ট কি ? আর সবচেয়ে বড় যে প্রশ্ন আদালত তুলেছে তাহলো, যদি সব কাজ পুলিশ করে তাহলে ক্লাব কে টাকা দেওয়ার কি যুক্তি?’

উল্লেখ্য ২০১৮ সালের দুর্গাপুজো কমিটিগুলোকে ১০ হাজার টাকা করে দেওয়ার কথা ঘোষণা করে সরকার। এতে সংবিধানের ধর্মনিরপেক্ষতার ক্ষতি হবে এই অভিযোগ এনে তার বিরুদ্ধে কলকাতা হাইকোর্টে মামলা করেন দুর্গাপুর সিটু নেতা সৌরভ দত্ত। মামলার পর বয়ান বদল করে রাজ্য জানায় যে ট্রাফিক পুলিশের “সেভ ড্রাইভ সেভ লাইফ” প্রজেক্টে এই টাকা দিয়েছে সরকার। শেষে মামলায় স্থগিতাদেশ দেয় হাইকোর্ট। সুপ্রিম কোর্টে মামলা দায়ের হয়। রাজ্য, কলকাতা পুলিশের মাধ্যমে টাকা দেওয়া যাবে বলে নির্দেশ দেয় আদালত। কিন্তু সেই মামলা এখনো নিষ্পত্তি হয়নি। এবার আবার দুর্গাপুজোর জন্য ক্লাব গুলিকে ৫০ হাজার টাকা দেওয়ার কথা ঘোষণা করা হয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *