মমতার রাতের ঘুম কেড়ে নেব! জামিন পেয়ে বেরিয়ে মাথা ন্যাড়া করে প্রতিজ্ঞা কৌস্তভ বাগচীর

আমাদের ভারত, ৪ মার্চ: শনিবার ব্যাঙ্কশাল আদালতে কৌস্তভ বাগচীকে ১ হাজার টাকার ব্যক্তিগত বন্ডে জামিন দেয়। বিকেলে জামিন পেয়েই কংগ্রেস নেতার হুঙ্কার, মমতার রাতের ঘুম কেড়ে নেব। আদালত থেকে বেরিয়ে ন্যাড়া হয়েছেন কৌস্তভ। তার মন্তব্য, যতদিন না মমতা সরকারকে উৎখাত করছে ততদিন মাথায় চুল রাখব না।

তবে কৌস্তভ একই সঙ্গে মন্তব্য করেছেন, যদি মমতা প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরীর কাছে ক্ষমা চান তবে তিনিও মুখ্যমন্ত্রীর কাছে ক্ষমা চাওয়ার কথা ভাববেন। এদিন তার জামিনের পক্ষে আদালতে সাওয়াল করেছেন আইনজীবী বিকাশ রঞ্জন ভট্টাচার্য সহ অন্যান্য আইনজীবীরা। তারা কৌস্তবকে ব্যক্তিগত বন্ডে জামিন দেওয়ার দাবি জানান। সরকারি কৌঁসুলি আদালতে জানান, কৌস্তভের উদ্দেশ্য প্রণোদিত মন্তব্যের জন্য দুটি গোষ্ঠীর মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে। তখনই কৌস্তভের আইনজীবীরা প্রশ্ন তোলেন সংঘর্ষের ঘটনায় পুলিশ অভিযুক্তদের কেন গ্রেফতার করছে না?

বিকাশ রঞ্জন আদালতে কংগ্রেস নেতার জামিনের পক্ষে সাওয়াল করে বলেন, পুলিশ মাঝ রাতে বাড়ি চলে যাচ্ছে, এবার তো বিচারকদের বাড়িও চলে যাবে। নোটিশ ছাড়াই পুলিশ কিভাবে কৌস্তভকে গ্রেফতার করল তা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন তিনি। সুপ্রিম কোর্টে নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও পুলিশ মধ্যরাতে অভিযুক্তের বাড়ি গেল কিভাবে তা নিয়েও প্রশ্ন তলেন তিনি? মাঝে প্রায় শ’খানেক আইনজীবী হট্টগোলের জেরে আদালত কক্ষ থেকে বেরিয়ে যান বিচারক। পরে এসে আবার রায় দান করেন।

হুমকি এবং অশান্তি ছড়ানোর অভিযোগে শুক্রবার গভীর রাতে কৌস্তভের ব্যারাকপুরের বাড়িতে হানা দেয় পুলিশ। অভিযোগ, বিনা কারণে বড়তলা থানার পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করেছে। কৌস্তভের গ্রেপ্তারির পর কংগ্রেস এবং বাম আইনজীবীরা তার পাশে দাঁড়ান। পুলিশের বক্তব্য, কৌস্তবকে হুমকি এবং অশান্তি ছড়ানোর দায়ে গ্রেফতার করা হয়েছে। কিন্তু শনিবার গ্রেফতারের সময় কোন ধারায় তাকে গ্রেফতার করা হচ্ছে তা নিয়ে পুলিশের সঙ্গে কথা কাটাকাটি হয় কৌস্তভের। ফলে সকালের দিকে পুলিশের নতুন বাহিনী নিয়ে যায় তার বাড়িতে। পরে সেখানে তাকে গ্রেফতার করা হয়।

গ্রেফতারের পর কৌস্তভ বলেন, “বিনা কারণে আমায় হয়রান করা হচ্ছে। এখানে আইনের শাসন নয়, শাসনের আইন চলছে। আমায় গ্রেপ্তার করায় আমার জয় হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী ভয় পেয়ে গিয়েছেন।”

বৃহস্পতিবার মুর্শিদাবাদের সাগরদিঘি উপনির্বাচনে কংগ্রেসের জয়ের পর প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরীর বিরুদ্ধে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বেশ কিছু মন্তব্য করেছিলেন। তিনি বলেছিলেন, অধীরের কন্যার আত্মহত্যা এবং তার গাড়ি চালকের মৃত্যু নিয়ে তিনি অনেক কথা জানেন। তিনি মুখ খুললে বিপদ হবে। তারপর শুক্রবার পাল্টা সাংবাদিক বৈঠক করেন কৌস্তব। সেখানে তৃণমূলের প্রাক্তন বিধায়ক রাজ্যের প্রাক্তন আমলা দীপক ঘোষের একটি বইয়ের প্রসঙ্গ তুলে মুখ্যমন্ত্রীকে ব্যক্তিগত আক্রমণ করেন বলে অভিযোগ তার বিরুদ্ধে। শনিবার কংগ্রেসের মুখপাত্র সৌম্য আইচ জানান, কলকাতা পুলিশ কৌস্তাবকে গ্রেফতার করেছে। কারণ সাংবাদিক বৈঠকে তিনি দীপক ঘোষের লেখা বইয়ে ছড়িয়ে দেবেন। আরো বলেছিলেন, এর জন্য তার বা তার কোনো সতীর্থের কোনো ক্ষতি হলে তার জন্য দায়ী থাকবেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেছিলেন, দুটো হোয়াটসঅ্যাপ নম্বর দিয়েছি দীপক ঘোষ মমতাকে নিয়ে যা লিখেছিলেন তা সফট কপি চাইলেই যে কেউ পাবেন। পাশাপাশি তিনি দাবি করেছিলেন, মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে কথা বলার জন্য হুমকি ফোন আসছে, আমার বা আমার কোনো সতীর্থর কিছু হলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দায়ী থাকবেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *