আমাদের ভারত, ১৫ আগস্ট: কৃষকদের স্বার্থের সঙ্গে কোনো রকম আপোষ করবো না। স্বাধীনতা দিবসে লালকেল্লা থেকে জাতির উদ্দেশ্যে ভাষণ দেবার সময় আরো একবার কেন্দ্র সরকারের অবস্থান স্পষ্ট করলেন প্রধানমন্ত্রী। শুক্রবার মোদী রীতিমতো জোরের সঙ্গে দাবি করেন, দেশের কৃষক এবং মৎস্যজীবীদের স্বার্থ রক্ষার জন্য তিনি দেওয়াল হয়ে দাঁড়িয়ে আছেন। এক্ষেত্রে আমেরিকার নাম উল্লেখ না করলেও মোদীর নিশানায় যে ট্রাম্প ছিলেন তা বুঝতে অসুবিধা হয়নি কারোর।
ভারত- আমেরিকার মধ্যে বাণিজ্য যুদ্ধের জট অব্যাহত। সূত্রের খবর, ভারত- আমেরিকা বাণিজ্য চুক্তির ক্ষেত্রে অন্তরায় মূলত কৃষি এবং দুগ্ধজাত দ্রব্য নিয়ে দু’ দেশের মধ্যে একমত না হতে পারা। আমেরিকা চাইছে ভারত কৃষি পণ্য, দুধ ও দুগ্ধজাত পণ্যের বাজার তাদের জন্য পুরোপুরি খুলে দিক। কিন্তু তা মানতে নারাজ নয়া দিল্লি। ফলে ওয়াশিংটনের সঙ্গে আলোচনা চললেও ইতিমধ্যেই ভারতের ওপর দুই দফায় মোট ৫০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করার কথা ঘোষণা করেছে ট্রাম্প। তিনি আরো জানিয়েছেন, শুল্ক নিয়ে আলোচনা না হলে বাণিজ্য চুক্তি নিয়ে কোনো কথা নয়। কিন্তু ভারত কোনভাবেই মাথা নত করবে না তা স্বাধীনতা দিবসের দিন আরও একবার স্পষ্ট করে দিলেন মোদী নিজেই।
লালকেল্লার ভাষণে মোদী বলেন, স্বাধীনতার পর সকলের জন্য খাদ্য নিশ্চিত করা ছিল একটি বড় চ্যালেঞ্জ। কিন্তু সেখানে আমাদের কৃষকরা আমাদের সাবলম্বী করে তুলেছেন। তাই ভারত সরকার কৃষকদের স্বার্থে কোনো আপোষ করবে না। দেওয়াল হয়ে দাঁড়িয়ে থাকবে মোদী।
আত্মনির্ভর ভারত নিয়ে সরকারে সাফল্যের কথাও তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, অন্য দেশের উপর নির্ভরশীল হওয়া বিপর্যয়ের অন্যতম অংশ। আমাদের স্বার্থ রক্ষার জন্য আমাদের অবশ্যই স্বনির্ভর হতে হবে। একবিংশ শতাব্দীকে প্রযুক্তি চালিত শতাব্দী বলে উল্লেখ করেছেন তিনি। প্রধানমন্ত্রী জানিয়েছেন, তাঁর সরকার সৌর হাইড্রোজেন এবং পারমাণবিক খাতে বেশ কয়েকটি প্রকল্প গ্রহণ করেছে।
মোদীর কথায়, আমাদের জ্বালানি চাহিদা মেটাতে আমরা অনেক দেশের উপর নির্ভরশীল। কিন্তু আসল অর্থে আত্মনির্ভর ভারত গড়ে তুলতে হলে আমাদের জ্বালানির ক্ষেত্রেও স্বাধীনতা লাভ করতে হবে।
মোদী মনে করেছেন, এখন ইতিহাস লেখার সময়। বিশ্ব বাজারকে আমাদের শাসন করতে হবে। স্বাধীনতা দিবসের নতুন মন্ত্র বেঁধেছেন তিনি। তিনি জানান, “কম দাম উচ্চমান” এই মন্ত্র সকলের লক্ষ্য হওয়া উচিত। মোদীর কথায়, বিশ্বজুড়ে অর্থনৈতিক স্বার্থপরতা বাড়ছে। এখন আমাদের এগিয়ে যাওয়া এবং লক্ষ্য অর্জনের সময়। অন্যদের ছোট করে আমাদের শক্তি নষ্ট করা উচিত নয়। নিজেদের শক্তি কিভাবে বৃদ্ধি করা যায় সেদিকে নজর দেওয়া দরকার। আমাদের বৃহত্তর লক্ষ্যের ওপর মনোনিবেশ করতে হবে। আমরা চাই আমাদের দেশের ব্যবসায়ীরা স্বদেশী পণ্যের উপর জোর দিক। যদি সরকারি নীতিতে কোনো পরিবর্তনের প্রয়োজন হয়, তবে তা আমাকে জানান।