“নিয়মিত ডেউচা পাঁচামী যাব,” তারাপীঠে সুর চড়ালেন সুকান্ত

আশিস মণ্ডল, রামপুরহাট, ১৩ মে : আমরা নিয়মিত পাঁচামি যাব। আমি এবং বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী নিয়মিত গিয়ে আদিবাসী মানুষের চাহিদা অনুযায়ী আন্দোলন করব।” গতকালই ডেউচা স্কুলের মাঠ থেকে ডেউচা পাঁচামি নিয়ে বৃহত্তর আন্দোলনের ডাক দিয়েছিলেন সুকান্ত মজুমদার এবং শুভেন্দু অধিকারী। শুক্রবার সেই প্রসঙ্গ টেনে এনে পাঁচামি নিয়ে জোরদার আন্দোলনের সুর চড়ালেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার।

বীরভূমের মাটিতে দাঁড়িয়েই এদিন তিনি তৃণমূল নেতা অনুব্রত মণ্ডলকে নিয়ে কটাক্ষ করে বলেন, “বেশ কিছু দিন অসুস্থ থাকবেন উনি (অনুব্রত)। আমরা জানি তো, অসুস্থ হয়েই বাঁচার চেষ্টা করবেন। তবে এটুকু বলতে পারি, বেশি দিন বাঁচতে পারবেন না।”।

শুক্রবার সকালে তাঁরপীঠ মন্দিরে পুজো দিতে যান বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। পুজো দিয়ে বেরিয়ে সাংবাদিকদের উদ্দেশে তিনি বলেন, “বীরভূমের পাঁচামিতে পাঁচ হাজার মানুষ বাস্তুচ্যুত হবে। বেশিরভাগ মানুষ চাইছেন না, তাঁরা বাস্তুচ্যুত হন। তাঁদের যে প্যাকেজ দেওয়া হচ্ছে, সেই প্যাকেজে তাঁরা খুশি নন। অনেকে জমি দিতে চান না। আমরা চাই, অনিচ্ছুক আদিবাসী পরিবারের থেকে যেন জোর করে জমি না নেওয়া হয়। সেখানে মানুষ যা চাইবে, আমরা সেরকমভাবেই এই আন্দোলন নিয়ে।”

এর পাশাপাশি, কেন্দ্রীয় সরকারের বিভিন্ন প্রকল্পে রাজ্য সরকারের কাজ নিয়ে সমালোচনা করেন সুকান্তবাবু। তিনি বলেন, “১০০ দিনের কাজে যে পরিমাণ মাটি কাটার হিসাব রাজ্য সরকার দিয়েছে, সেই পরিমানে মাটির স্তুপ কোথাও দেখতে পাওয়া যায় না। মাটিগুলি এক জায়গায় করলে পশ্চিমবঙ্গে একটা এভারেস্ট হয়ে যেত। পুরো দুর্নীতি হচ্ছে, খাতায় কলমে টাকা চলে যাচ্ছে। কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে সোশ্যাল অডিটের টিম এসেছিল, তাঁরা খুঁজে পেয়েছে বহু জায়গায় দুর্নীতি হয়েছে। দুর্নীতি করার জন্য তো কেন্দ্র টাকা দেবে না। প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা এবং ১০০ দিনের কাজ এই দুটি প্রকল্পে বিশেষ করে চরম দুর্নীতি হয়েছে।”

প্রসঙ্গত, গতকালই রাজ্য সরকার একটি পরিসংখ্যান দিয়ে জানিয়েছে, কেন্দ্রের কাছ থেকে রাজ্য এমজিএনআরইজিএ এবং প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা বাবদ ৬৫০০ কোটি টাকা পায়। সেই অর্থ কেন্দ্রের কাছে বকেয়া রয়েছে বলে অভিযোগ করে রাজ্য সরকার।

গতকাল দক্ষিণ দিনাজপুরে এক আদিবাসী মহিলাকে ধর্ষণ করে খুনের অভিযোগের ঘটনারও এদিন নিন্দা প্রকাশ করেন বালুরঘাটের সংসদ সুকান্ত মজুমদার। রাজ্য সরকারের আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতির কথা জানিয়ে তিনি বলেন, “আমি বাধ্য হচ্ছি, আমার সাংগঠনিক সমস্ত বৈঠক বাতিল করে নিজের জেলায় যেতে। হাঁসখালি, সুন্দরবন থেকে শুরু করে কুমারগঞ্জের সমজিয়াতেও এরকম ঘটনা ঘটছে। আমি সাংসদ থাকাকালীন আমার এলাকাতেই এই তিন বছরে এরকম চারটি ঘটনা ঘটেছে। এই পরিস্থিতি চলতে থাকলে বাংলার সংস্কৃতি আর বজায় থাকছে না।”

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *