রাজেন রায়, কলকাতা, ১১ ডিসেম্বর: একদিকে বিজেপির উত্তরকন্যা অভিযানে বিজেপি কর্মীর মৃত্যু এবং অন্যদিকে ডায়মন্ড হারবারের শিরাকোলে বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নাড্ডার কনভয় হামলা, দুইয়ে মিলে সপ্তাহের শুরুতেই রাজ্যে তুঙ্গে রাজনীতির পারদ। এই ঘটনা নিয়ে বৃহস্পতিবার রাতেই মুখ্য সচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায় এবং ডিজি বীরেন্দ্র’র সঙ্গে বৈঠক করেছিলেন রাজ্যপাল। তবে তাঁরা কোনো সদুত্তর দিতে পারেননি বলে পরে দাবি করেছিলেন তিনি। শুক্রবার বেলা বারোটা নাগাদ সাংবাদিক বৈঠক করে রাজ্যপাল ফের দাবি করলেন, ‘যা ঘটেছে তা গণতন্ত্রের পক্ষে লজ্জার। অবিলম্বে ক্ষমা চান মুখ্যমন্ত্রী, আর তিনি ক্ষমা চাইলে তার সম্মানই বাড়বে।’
মুখ্যমন্ত্রী ক্ষমা চাইবেন কি না তা প্রশ্নের বিষয়। কিন্তু তিনি যে সংবিধান রক্ষার জন্য শেষ পর্যন্ত যাবেন এদিন সাংবাদিক বৈঠকে তা মনে করিয়ে দিতে চেয়েছেন রাজ্যপাল। এদিন সাংবাদিক বৈঠকে রাজ্যপাল জগদীপ ধনকর বলেন, ”সংবিধান রক্ষা করা আমার কর্তব্য। তার জন্য যতদূর যেতে হয় যাব। রাজ্যের মানুষের জন্য কাজ করাই আমার কাজ। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও সংবিধানের আওতার বাইরে নন। তাঁরও সাংবিধানিক দায়িত্ব রয়েছে। আমি সতর্ক করা সত্বেও রাজ্যে ক্রমাগত আইনশৃঙ্খলার অবনতি হচ্ছে। দয়া করে আগুন নিয়ে খলবেন না। আপনি সংবিধান থেকে সরলে আমার দায়িত্ব শুরু হবে। রাজ্যে মানবাধিকার বলে কিছু নেই। মানবাধিকার দিবসে এরকম ঘটনা ঘটল রাজ্যে। রাজ্যের চারদিকে দুর্নীতি, বিরোধীরা প্রতিবাদের জায়গাই পাচ্ছেন না। বিরোধীদের সমস্ত কার্যকলাপ নৃশংসভাবে দমন করা হচ্ছে।”
বৃহস্পতিবার রাতেই নিজের টুইটার অ্যাকাউন্টে মুখ্যমন্ত্রীর ভাষণের বক্তব্য তুলে ধরেছিলেন রাজ্যপাল। যেখানে বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতিকে ব্যঙ্গাত্মক ভঙ্গিতে মন্ত্রী চাড্ডা ফাড্ডা নাড্ডা গাড্ডা সহ একাধিক শব্দে আক্রমণ করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। সেই নিয়ে আজ সকালে রাজ্যপাল বলেন, ‘একজন দায়িত্বশীল মুখ্যমন্ত্রী কীভাবে এমন ভাষা প্রয়োগ করেন। উনি ক্ষমা চাইলে ওরই সম্মান বাড়বে।’
মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে ডায়মন্ড এবারের সংসদ তথা তৃণমূল যুব সভাপতি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে–ও এদিনের সাংবাদিক বৈঠক থেকে আক্রমণ করেছেন তিনি। তিনি বলেন, ‘ডায়মন্ড হারবারের সাংসদের আচরণ সংবিধানের জন্য অবমাননাকর। ভারতীয়দের কীভাবে বহিরাগত বলছেন, আমি আপনাকে সতর্ক করছি, এটা ভয়ঙ্কর পরিস্থিতি। কয়েকজন আমলা সরকারি চাকুরী না করে রাজনৈতিক কর্মী হচ্ছেন। ২১ জন আমলার নাম তালিকাভুক্ত করেছি।” প্রয়োজন হলে তার এক্সেল এর মাধ্যমে তিনি যে এই দুর্নীতিগ্রস্ত আমলাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবেন এদিন তাও মনে করিয়ে দিয়েছেন রাজ্যপাল।