আমি নামেই মন্ত্রী ছিলাম নিয়োগের ফাইলে বিশ্বাস করে সই করেছি মাত্র, বিস্ফোরক মন্তব্য পার্থর

আমাদের ভারত, ১৯ সেপ্টেম্বর:
আলিপুর আদালতে যখন পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে হাজির করা হয়, তখন তার আইনজীবী দাবি করেছিলেন পার্থ শিক্ষামন্ত্রী ছিলেন ঠিকই কিন্তু শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মী নিয়োগের ব্যাপারে তাঁর কোনো নিয়ন্ত্রণ ছিল না। মন্ত্রী পদে থাকলেও দপ্তরের কাজে তার নিয়ন্ত্রণ ছিল না বলে দাবি করা হয়েছে।

সূত্রের খবর, দফায় দফায় সিবিআই জেরার মুখে পার্থ বলেছেন, তিনি নামেই মন্ত্রী ছিলেন। ডিপার্টমেন্ট থেকে তাঁর কাছে যে ফাইল আসত সেই ফাইলে শুধু সই করতেন তিনি। শিক্ষক, শিক্ষাকর্মী নিয়োগের ব্যাপারে তাঁর ভূমিকা ছিল সীমিত। সবটাই আধিকারিকরা দেখতেন এবং তার উপরই ভরসা করতেন তিনি। যদিও এই মন্তব্যের ফলে একাধিক প্রশ্ন উঠতে শুরু করে দিয়েছে। তাহলে, ডিপার্টমেন্ট কার নির্দেশে কাজ করত?

শিক্ষক দুর্নীতির কফিন থেকে এখন একের পর এক কঙ্কাল বেরিয়ে আসছে। সিবিআই আদালতে জানিয়েছে, প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় ছিলেন মাস্টারমাইন্ড। তার নেতৃত্বেই শান্তি প্রসাদ সিনহা, কল্যাণময় বন্দ্যোপাধ্যায়রা সমস্ত ষড়যন্ত্রে যুক্ত হয়েছিলেন। সিবিআই সূত্রে বলা হচ্ছে, পার্থ পুরো ঘটনার দায় তার দপ্তরের আধিকারিকদের উপরে চাপিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছেন। এই পরিস্থিতিতে একটাই উপায় থাকে, কোনটা সত্যি তা প্রমাণ করার জন্য, তা হলো আধিকারিকরা কী বলছেন এক্ষেত্রে।

নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় ইতিমধ্যেই শান্তি প্রসাদ ও কল্যাণময়কে গ্রেফতার করা হয়েছে। ফলে আধিকারিকদের পার্থর মুখোমুখি বসিয়ে জেরা করলে আসল ঘটনা কি, তা সামনে চলে আসবে।

মনে করা হচ্ছে পার্থ যদি এভাবে দায় অস্বীকার করে তাহলে বুঝতে হবে, হয় তার মাথায় অন্য কোনও খেলা চলছে, না হয় তার পেছনে অন্য কেউ কলকাঠি নাড়ছে। কলকাতা হাইকোর্ট যখন তার বিরুদ্ধে সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দেয় তখন ঘরোয়া আড্ডায় পার্থ সাংবাদিকদের বলতেন, তাকে একা দায়ী করা যাবে না। মন্ত্রিসভার কালেক্টিভ রেস্পন্সিবিলিটি তথা সম্মিলিত দায়বদ্ধতার ভিত্তিতে চলে। এই একই কথা শোনা গিয়েছিল ফিরহাদ হাকিমের মুখেও। কিন্তু পার্থর গ্রেপ্তারের পর ফিরহাদ হাকিম সে প্রসঙ্গ আর মুখে আনেননি। তবে সিবিআই জেরায় পার্থর এই ধরনের দাবির ফলে জল কতদূর যায় তাই এখন দেখার।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *