আমাদের ভারত, ১৫ জুলাই: “আমাদের আর ভাল কিছু হলো না। এক কালো অধ্যায় গিয়ে আরেক কালো অধ্যায় আসে। এক কালো সরাতে গিয়ে আমরা আরও ঘোর কালোর খপ্পরে পড়ি। ভালো বুঝি ‘ভাগ্যে’ নেই। নির্বাচনের পর যা আসবে, তাও কি আদৌ পাতে দেওয়ার মতো হবে? মনে তো হয় না।” বাংলাদেশের চরম রাজনৈতিক অনিশ্চয়তায় এভাবেই হতাশা ব্যক্ত করলেন নির্বাসিত লেখিকা তসলিমা নাসরিন।
মঙ্গলবার তিনি সামাজিক মাধ্যমে লিখেছেন,
“শাহবাগের ‘প্রজন্ম চত্বর’ ভেঙ্গে ফেলা হয়েছে। কারণ ইউনুস সরকার প্রজন্ম চত্বরের কোনও স্মৃতি রাখতে চায় না। ২০১৩ সালে গণজাগরণ আন্দোলনের সময় শাহবাগে গড়ে ওঠা ‘প্রজন্ম চত্বর’ মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের দাবির প্রতীক হয়ে ওঠে। ভাস্কর্যটি ওই আন্দোলনের স্মৃতি ধরে রেখেছিল।
‘প্রজন্ম চত্বর’ ভেঙ্গে প্রজন্ম চত্বরের জায়গায় জুলাইয়ের স্মৃতিতে ভাস্কর্য গড়া হবে। জুলাই যোদ্ধারা জামাতিজিহাদি জঙ্গি। তারা ভাস্কর্য বিরোধী, তাদের তো ভাস্কর্যের লোভ করা উচিত নয়। তাছাড়া জুলাইকে কেন এত স্মরণীয় করা দরকার? আন্দোলন করে কোনও সরকারকে সরিয়ে দেওয়া কোনও অভিনব ঘটনা নয়। পৃথিবীর বহু দেশে বহুবার ঘটেছে। এমনকী বাংলাদেশেও ঘটেছে।
আন্দোলন করে এক সময় স্বৈরাচারী এরশাদকেও নামানো হয়েছিল। কোনও সরকার পতনের আন্দোলনই মহান নয় বা প্রশংসার যোগ্য নয়, যদি না আগের সরকারের তুলনায় মাচ মাচ মাচ বেটার সরকারকে ক্ষমতায় আনা যায়। হাসিনা সরকারের ভুলত্রুটি বর্তমান সরকার সামান্যও সংশোধন করেনি, বরং ভয়াবহ ভুলত্রুটির ডোবায় দেশকে ডুবিয়ে দিয়েছে, সঙ্গে অরাজকতা, সন্ত্রাস, সাম্প্রদায়িকতা, নিরাপত্তাহীনতা, লুটতরাজ, দুর্নীতি ইত্যাদি উদ্বাহু নৃত্য করে চলেছে।
জুলাই- এর জন্য আলাদা করে কিছু বানাতে হবে না কোথাও। দেশের মসজিদ আর মাদ্রাসাই জুলাই আন্দোলনের প্রতীক। মসজিদ মাদ্রাসা থেকেই অধিকাংশ লোক বেরিয়ে এসে জুলাইয়ের জিহাদি আন্দোলনে যোগ দিয়েছিল। সুতরাং মসজিদ, মাদ্রাসার গায়ে জুলাই চিহ্ন সেঁটে দিলেই হবে।”