রাজেন রায়, কলকাতা, ২৫ জানুয়ারি: নেতাজির জন্ম জয়ন্তীর অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর পাশাপাশি উপস্থিত ছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং রাজ্যপাল জগদীপ ধনকরও। প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য রাখার আগে বক্তব্য রাখতে ওঠেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আর তখনই দর্শকাসন থেকে ওঠে ‘জয় শ্রীরাম’ ধ্বনি। তাল কাটে অনুষ্ঠানের। ‘জয় বাংলা’ ‘জয় হিন্দ’ বলে বক্তব্য না রেখে পোডিয়াম থেকে নেমে আসেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
এরপরই এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে শুরু হয়ে যায় রাজনৈতিক চাপানোউতোর। একদিকে যেমন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে অপমান করা হয়েছে বলে আক্রমণ শানাতে থাকেন শাসক দলের নেতা নেত্রীরা, অন্যদিকে তেমনই আক্রমণাত্মক গেরুয়া শিবিরও। যদিও এই ঘটনায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পাশে দাঁড়িয়েছেন বাম কংগ্রেস শিবির।
‘জয় শ্রীরাম’ হল সম্বোধনের ভাষা, ইতিমধ্যেই এই মন্তব্য করেছেন উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ। নিজেদের মত যুক্তি সাজিয়েছেন সব রাজনৈতিক নেতা মন্ত্রীরাই। ‘কি ব্রহ্মাণ্ড অশুদ্ধ হত দিদি, যদি জয় শ্রীরাম বলে ভাষণটা দিতেন? প্রশ্ন তুলেছেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয়ও। জয় শ্রীরাম বলার মধ্যে এমন কী আছে যে ওনার অপমান হবে? প্রশ্ন তুলেছেন কৈলাস বিজয়বর্গীয়।
একইভাবে ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়ালের অনুষ্ঠানে ‘জয় শ্রী লরাম’ স্লোগানে কোনও বিতর্ক তৈরি হতে পারে বলে মনে করেন না বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ। উল্টে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে বিঁধে তিনি বলেন, ‘সরকারি অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী কলমা পাঠ করলে দোষ নেই, শুধু জয় শ্রীরাম নিয়েই সমস্যা!’
আর এরপরই এবার এই ঘটনার পরই সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি কার্টুন পোস্ট করে কিছু না বলেও কটাক্ষ করতে ছাড়লেন না বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ। সোশ্যাল মিডিয়ার ওই পোস্টে দেখা যাচ্ছে ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়ালের সামনে নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর মূর্তি তার সামনে মাটিতে হাঁটু গেড়ে বসে ফুল নিবেদন করছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। পাশে ‘জয় বাংলা’ লেখা কাস্তে তারার ছবি দেওয়া সবুজ পতাকা হাতে দাঁড়িয়ে রয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কানে তার ঘাসফুল গোঁজা। এবং তার মাথার ওপর লেখা ‘বাংলার গর্ব তো আমি! এতো নেতাজি নেতাজি করার কি আছে ?’ এবার এই কার্টুনের প্রভাব ভবিষ্যতে কি হতে পারে তা হয়তো জবাব দেবে সময়ই।