আশিস মণ্ডল, আমাদের ভারত, বীরভূম, ২ নভেম্বর: “যারা নিজে দায়িত্ব পালন করছেন না সেই সমস্ত মহিলাদের ভোটে প্রার্থী হওয়া উচিত নয়। স্বামী, ভাই, শ্বশুরকে দিয়ে পঞ্চায়েতের কাজ চালানো যাবে না।” রবিবার বীরভূমের তারাপীঠে হাঁসন বিধানসভার রামপুরহাট ২ নম্বর ব্লক মহিলা কর্মী সম্মেলনে বক্তব্য রাখতে গিয়ে মহিলাদের আরও স্বাধীনভাবে দায়িত্ব নিয়ে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান বীরভূমের সাংসদ শতাব্দী রায়।
সামনেই বিধানসভা নির্বাচন। তার ঠিক আগেই রাজ্যে শুরু হয়েছে এস আই আর। ফলে তৃণমূল কিছুটা বিব্রত। এই অবস্থায় জনসংযোগ বাড়াতে রবিবার তারাপীঠ সংলগ্ন একটি লজের সভাকক্ষে রামপুরহাট ২ নম্বর ব্লক তৃণমূল কংগ্রেসের কর্মী সম্মেলনের ডাক দিয়েছিলেন ব্লক সভাপতি সুকুমার মুখোপাধ্যায়। সভায় প্রধান বক্তা ছিলেন আইনমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন ডেপুটি স্পিকার আশিস বন্দ্যোপাধ্যায়, তৃণমূল মহিলা কংগ্রেসের জেলা সভানেত্রী সাহারা মণ্ডল, বোলপুরের সাংসদ অসিত মাল, বীরভূমের সাংসদ শতাব্দী রায়। তবে আশ্চর্যজনকভাবে হাঁসনের বিধায়ক অশোক চট্টোপাধ্যায় অনুপস্থিত ছিলেন। বক্তব্য রাখতে গিয়ে মহিলাদের এগিয়ে এসে পঞ্চায়েতে নিজেদের দায়িত্ব পালনের কথা তুলে ধরেন শতাব্দী রায়। তিনি বলেন, “প্রচুর পঞ্চায়েতের সদস্যা এবং প্রধান মহিলা। কিন্তু ক’জন পঞ্চায়েত সদস্যা বা প্রধান নিজে পঞ্চায়েতে গিয়ে মানুষের জন্য কাজ করেন? বেশিরভাগ ক্ষেত্রে তাঁর স্বামী, ভাই কিংবা শ্বশুর এসে কাজ করে। এটা ঠিক নয়। আপনাকে সাধারণ মানুষ যে ক্ষমতা দিয়েছে সেই ক্ষমতা যথাযথ ভাবে ব্যবহার করুন। তবে অপব্যবহার নয়। কিন্তু আপনি যে চেয়ারের দায়িত্ব পেয়েছেন সেটা আপনি জানুন, শিখুন। অনেক পঞ্চায়েত সদস্যা নিজের এলাকার তথ্যই জানেন না। একবার ভোটে মহিলা প্রার্থীর হয়ে প্রচারে বেড়িয়েছিলাম। কিন্তু প্রচারে দেখছি মহিলা নেই, তাঁর স্বামী আমার সঙ্গে ঘুরছেন। প্রার্থী কোথায় জিজ্ঞেস করতেই স্বামী জানালেন বউ বাড়িতে রুটি বানাচ্ছে। তাই বলছি যারা পারবেন না, তারা ভোটে দাঁড়াবেন না। যারা নিজে কাজ করতে পারবেন তাদের সামনে নিয়ে আসুন। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আর কত ধাক্কা দিয়ে মহিলাদের এগিয়ে নিয়ে যাবেন?”
বক্তব্য রাখতে গিয়ে এস আই আর- এর বিরোধিতা করেন চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য। তিনি বলেন, “পাঁচটি রাজ্যে ভোট হচ্ছে। কিন্তু বিজেপি শাসিত অসমকে বাদ দিয়ে চারটি রাজ্যে এস আই আর হচ্ছে। এটাই বিজেপির চক্রান্ত। বাংলাদেশের নাগরিক কি শুধু পশ্চিমবঙ্গেই ঢুকেছে। মায়ানমারের সঙ্গে ভারতের সীমানা প্রাচীর আছে। কিন্তু বাংলার সঙ্গে নেই। তাহলে বাংলায় কিভাবে রোহিঙ্গা ঢুকল? এসব করে তৃণমূলকে হারানো যাবে না”।

