সৌভিক বন্দোপাধ্যায়, কলকাতা, ১৭ ফেব্রুয়ারি: মানুষের আদিম চরিত্র যে তাকে কতটা বিকৃত কাম বাড়াতে পারে তার ভয়ঙ্কর উদাহরণ বাঘাযতীনের ঘটনা। স্ত্রীর সাহায্য নিয়ে বাড়িতে আসা এক তরুণীকে ধর্ষণ করল স্বামী। কাজ পাইয়ে দেওয়ার কৃতজ্ঞতা জানাতে এসে এভাবেই ধর্ষণের শিকার হলেন ওই তরুণী। ধর্ষণের অভিযোগে ওই দম্পতি বিষ্ণুপদ মণ্ডল এবং রণিতা মণ্ডলকে গ্রেফতার করল পাটুলি থানার পুলিশ।
জানা গিয়েছে, নির্যাতিতা অভিযোগকারিনী তরুণী বাঘাযতীনের রবীন্দ্রপল্লির বাসিন্দা। পড়াশোনা শেষ করে চাকরির জন্য বিভিন্ন জায়গায় খোঁজ করছিলেন তিনি। মা হারা, বাবা বেকার। আশ্রমের এক মহিলার সূত্রে বাঘা যতীনের ই ব্লকের ওই দম্পতির সঙ্গে তার আলাপ হয়।
ওই মহিলা তরুণীকে জানিয়েছিলেন, ওই দম্পতি বেলেঘাটার একটি ব্যাগের কারখানায় তরুণীকে কাজ পাইয়ে দিতে পারবেন। ওই মহিলার কথা মতোই ওই দম্পতির সাহায্যে দৈনিক ২০০ টাকা মজুরিতে বেলেঘাটার ব্যাগের কারখানায় চাকরি পান তরুণী। ফেব্রুয়ারি মাসের শুরু থেকে কাজ শুরু করে দেন। যেহেতু দম্পতি তাকে কাজ পেতে সাহায্য করেছিলেন, তাই কৃতজ্ঞতা জানাতে ৯ ফেব্রুয়ারি তিনি বাঘাযতীনের ই-ব্লকের ওই দম্পতির বাড়িতে যান। তখন বিষ্ণুপদের স্ত্রী রণিতা সেখানে ছিলেন না। বিষ্ণুপদ তাকে ঘরের খাটে বসতে দেন।
অভিযোগ, কয়েক মিনিট পর বিষ্ণুপদ তাঁকে জোর করে বিছানায় শুইয়ে ধর্ষণের চেষ্টা করতে শুরু করেন। তখন তরুণী নিজেকে বাঁচানোর জন্য ছটফট করতে থাকেন। সেই সময়েই ঘরে ঢোকেন রণিতা। কিন্তু তরুণী দাবি, রণিতা তাঁকে সাহায্য করার বদলে উলটে তরুণীর হাত পা আটকে বিষ্ণুপদকে সাহায্য করেন। এটাও বলেন, ‘চাকরি যখন পেলি, আমার বরটাকে একটু খুশি করে যা।’ এরপরে বিধ্বস্ত ধর্ষিতা তরুণী বাড়ি ফিরে যান।
তরুণীর দাবি, একদিকে তার বাড়িতে সত্যি টাকার প্রয়োজন ছিল। কাজ তিনি হারাতে চাইছিলেন না। অন্যদিকে অসহায় বাবার মুখ চেয়ে লজ্জায় এবং ভয়ে তিনি কাউকে কিছু বলতে পারেননি। কিন্তু কয়েকদিন পরে কথা বলতে গিয়ে এক আত্মীয়াকে সব বলে ফেলেন। এরপর সেই আত্মীয়াই তরুণীকে সঙ্গে করে নিয়ে গিয়ে রবিবার রাতে পাটুলি থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। সোমবার সকালে তাঁর করা অভিযোগের ভিত্তিতে বিষ্ণুপদ এবং রণিতাকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।