মর্যাদার সাথে বাঁকুড়ায় পালিত হল হুল দিবস

সোমনাথ বরাট, আমাদের ভারত, বাঁকুড়া, ৩০ জুন: বাঁকুড়ায় যথাযোগ্য মর্যাদায় পালিত হল হুল দিবস। জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে আজ হিড়বাঁধ ও তালডাংরায় অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। হিড়বাঁধে জেলা শাসক শ্রীমতি রাধিকা আয়ার সহ বহু বিশিষ্ট ব্যক্তি উপস্থিত ছিলেন। তালডাংরায় আয়োজিত অনুষ্ঠানে জেলা পরিষদের মেন্টর বিধায়ক অরূপ চক্রবর্তী, জেলা সভাধিপতি মৃত্যুঞ্জয় মুর্মু উপস্হিত ছিলেন।

হুল দিবস উপলক্ষ্যে আজ সকালে বাঁকুড়া শহরের উপকন্ঠে হেভির মোড়ে সিধু কানুর মূর্তিতে মাল‍্যদান ও পুষ্পার্ঘ্য নিবেদন করে শ্রদ্ধা জানানো হয়। সিধু – কানু স্মরণ কমিটির সভাপতি রাহুল সেন, বাঁকুড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সাঁওতালী বিভাগের ৪র্থ সেমিস্টারের ছাত্রী শিখা হেমব্রম, আদিবাসী সংঘর্ষ মোর্চার জেলা সম্পাদক সুধীর মুর্মু, রবিদাস মুর্মু সহ সমাজের বিভিন্ন স্তরের ও বিভিন্ন ধর্মের মানুষ সহ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র- ছাত্রীরা পুষ্পার্ঘ্য নিবেদন করেন।

এক সংক্ষিপ্ত সভায় হুল দিবসের তাৎপর্য ব্যাখ্যা করে সুধীর মুর্মু বলেন, সিধু- কানু- ফুলো- ঝানুর এই লড়াইটা শুধুমাত্র আদিবাসীদের ছিল না। আদিবাসী সহ গরিব মানুষদের উপর জমিদার- মহাজনদের অত্যাচারের বিরুদ্ধে সমবেত লড়াই ছিল। এই লড়াইয়ে বহু মানুষ জীবন দিলেও আজও আইন থাকা সত্ত্বেও বনের জমিতে বসবাসকারী আদিবাসীরা পাট্টা পায়নি। পাট্টা পেলেও পরচা নাই। সামান্য কিছু মানুষ পরচা পেলেও জমির চরিত্রে বন লেখা থাকার দরুন সেই সব চাষিরা কোনো সরকারি সাহায্য বা সরকারি দরে ধান বিক্রি করতে পারছে না। শুধু তাই নয় ব্যাপক তফসিল উপজাতি/ জাতির ভাগচাষিরা জমির কাগজ না থাকায় কোনো সরকারি সাহায্য বা ধানের সরকারি দাম পাচ্ছে না। নগদে ভর্তুকির নামে এসসি/ এসটিদের হোস্টেল তুলে দিয়ে নানান প্যাঁচ করে সংরক্ষণের উপর আঘাত করে এইসব ছেলে- মেয়েদের শিক্ষা এবং চাকরির জগত থেকে বের করে দিচ্ছে। এই সব বঞ্চনার বিরুদ্ধে আদিবাসী প্রধান স্কুল গুলোতে শিক্ষক পদ আদিবাসীদের জন্য সংরক্ষিত করতে সিধু- কানু- ফুলো- ঝানুর দেখানো পথে বঞ্চিত মানুষের ঐক্যবদ্ধ লড়াই গড়ে তুলতে পারলেই সিধু- কানু’কে প্রকৃত সম্মান দেখানো হবে বলে তিনি মন্তব্য করেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *