শ্রীরূপা চক্রবর্তী, আমাদের ভারত, ২০ আগস্ট:
মেঘালয়ে রাজ্যপালের দায়িত্ব শেষ তাঁর। তাহলে কি এবার রাজ্য বিজেপির কোনো বড় দায়িত্বে আনা হচ্ছে তাঁকে? রাজ্য বিজেপিতে ভারসাম্য আনতেই কি তাহলে তথাগত রায় পেতে চলেছেন কোনো বড় পদ। পদ্ম শিবিরে এখন তা নিয়ে চলছে জোর জল্পনা। সম্প্রতি টুইট করে রাজ্য রাজনীতিতে ফেরার আগ্রহ প্রকাশ করেছিলেন তথাগত রায়। আর তারপর থেকেই দলের অন্দরে শুরু হয়েছে গুঞ্জন।
রাজ্যপালের ইনিংস শেষ করার পর পদ্ম শিবিরের কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের অনুমতি পেলে আবার পশ্চিমবঙ্গের রাজনীতিতে তিনি ফিরবেন তা আগেই জানিয়েছিলেন তথাগত রায়। আর তাই মঙ্গলবার রাষ্ট্রপতি মেঘালয়ের রাজ্যপাল হিসেবে সত্যপাল মালিককে নিয়োগ করার পরেই সম্ভবত তথাগত বাবুর টুইটে স্মাইলিরা হেসে উঠলো। মে মাসের মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ার পরেও করোনা পরিস্থিতির জন্য তাকে কাজ চালিয়ে যেতে হচ্ছিল। রাষ্ট্রপতি ভবন থেকে মালিককে নিয়োগের সিদ্ধান্ত ঘোষণার পরেই তথাগত টুইট করে বলেন, ” আমার ২০মে দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি পাওয়ার কথা ছিল। এবার রাস্তার শেষ দেখা যাচ্ছে।” টুইটের শেষে তিনি ৩টি হাসি মুখের স্মাইলিও দিয়েছেন। এরপরই টুইটারে অনেকেই তাঁকে পরবর্তী ইনিংসের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। আর তাতেই জল্পনা শুরু হয়েছে তথাগত রায়ের পরবর্তী ইনিংসটা তাহলে কি?
রাজ্যপাল হলেও রাজনৈতিক মন্তব্য থেকে বিরত হননি কখনোই তিনি। বাংলার নানা ইস্যুতে তাকে মন্তব্য করতে দেখা গেছে বরাবর। কিন্তু এবার তিনি সরাসরি বাংলার রাজনীতিতে ফিরতে চাইছেন। আর তাতেই শুরু হয়েছে জল্পনা। কোন পদে তিনি আসীন হতে পারেন?
রাষ্ট্রপতি ভবন থেকে মালিকের নাম ঘোষণা হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই তিনি সত্যপাল মালিকের সঙ্গে ফোনে কথা বলেন। শিলংয়ের তাকে স্বাগত জানান। মালিকের শিলং পৌঁছতে কিছুদিন সময় লাগবে বলেও টুইট করেছিলেন তথাগত। আর সপ্তাহ খানেক আগে তথাগত বলেছিলেন, “কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব অনুমতি দিলে পশ্চিমবঙ্গের রাজনীতিতে আমি ফিরব।” ঘনিষ্ঠ সূত্রের খবর এই ইচ্ছার কথা দিল্লিতে শীর্ষ নেতৃত্বের কাছেও তিনি পৌঁছে দিয়েছিলেন।
পাশাপাশি তাৎপর্যপূর্ণ বিষয় হল পশ্চিমবঙ্গের বিজেপি সভাপতি দিলীপ ঘোষের সমালোচনা করতেও দেখা গেছে তথাগত রায়কে। গরুর দুধের সোনা আছে বলে যে বিতর্কিত মন্তব্য করেছিলেন দিলীপ রায়, তথাগত তাতে বলেছিলেন এমন অবৈজ্ঞানিক কথাবার্তা বাঙালিরা পছন্দ করেনা। তিনি নিজেও এমন কথা বলেন না। তা সত্বেও গোমূত্র খান গরুর দুধের সোনা খুঁজুন এই ধরনের কটাক্ষ তাকে শুনতে হয়।
তবে এই মন্তব্যের দিলীপ ঘোষ কোনো প্রতিক্রিয়া না দিলেও তথাগতের মন্তব্যে রাজ্য বিজেপির অন্তরে টানাপোড়েন প্রকাশ্যে এনে দিয়েছে বলে মত রাজনৈতিক মহলের। সম্প্রতি বেশ কিছু ঘটনায় রাজ্য বিজেপির নেতৃত্বের মধ্যে পারস্পরিক মত পার্থক্যের বিষয়টি প্রকাশ্যে উঠে এসেছে। তাই রাজনৈতিক মহলের একাংশের ধারণা, বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব ও সংঘ পরিবারের একাংশ মনে করছেন ২১ এর নির্বাচনে আগে এই মত পার্থক্যে ভারসাম্য আনতে তথাগত রায় হতে পারেন শক্ত হাতিয়ার।
কিন্তু কীভাবে? দলের অন্দরে গুঞ্জন বাবুল, মুকুল, অর্জুনের মত নেতাদের নিয়ে দলে ভারসাম্য রক্ষা করতে তথাগতকে কাজে লাগাতে পারে বিজেপি। তাহলে প্রশ্ন সেক্ষেত্রে কি তাকে রাজ্যের কার্যকরী সভাপতির পদে বসাতে পারে কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। যদিও এই খবরের নিশ্চয়তা এখনো কেউ দিতে পারেননি।