আমাদের ভারত, রামপুরহাট, ১৪ এপ্রিল: বাংলা বছরের প্রথম দিন। বাঙালির বারো মাসে তেরো পার্বণের মতো পয়লা বৈশাখও একটি। এদিন বাড়ির মহিলারা নানান পদ তৈরি করে বাড়ির সদস্যদের পরিবেশন করে থাকেন। কিন্তু করোনা ভাইরাস সব ওলোটপালোট করে দিয়েছে। কথায় আছে যারা রাঁধে, তারা চুলও বাঁধে। বাড়ির সেই গৃহবধূরা রামপুরহাট ষ্টেশনে গিয়ে ভবঘুরেদের খাবার পরিবেশনের মাধ্যমে দিনটিকে স্মরণীয় করে রাখলেন।
পয়লা বৈশাখ। খাদ্য রসিক বাঙালি এই দিনে কবজি ডুবিয়ে ভালোমন্দ খাবার খেতে অভ্যস্ত। কিন্তু এবার তাতে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে করোনা। ফলে নিজেদের বাড়িতে বিভিন্ন পদের রান্না না করে এদিন ভবঘুরেদের সুস্বাদু খাবার পরিবেশন করালেন বাড়ির মহিলারা। সেই তালিকায় গৃহবধূ যেমন রয়েছেন, তেমনি রয়েছেন ছাত্রীও। এদিনের খাবার তালিকায় ছিল ভাত, মুগের ডাল, পাঁচতরকারি, মুরগির মাংস, চাটনি, দই, মিষ্টি। প্রায় আড়াইশো জন ভবঘুরে, লকডাউনে আটকে পড়া মানুষকে পেট পুড়ে খাওয়ালেন গৃহবধূ রেশমি দে, নাজনিন বানু, গঙ্গাদাসী মণ্ডল, পাপিয়া মণ্ডল, মৈত্রী মণ্ডল, কৃষ্ণা ঘোষ, ছাত্রী সায়ন্তনী মণ্ডলরা। তাদের সঙ্গে পরিবেশনে হাত লাগিয়েছিলেন সারা ভারত তফসিলি জাতি ও উপজাতি রেলওয়ে এমপ্লয়িজ অ্যাসোসিয়েশনের রামপুরহাট শাখার সভাপতি এন কে রাম, সম্পাদক হরিময় দাস সহ অন্যান্য সদস্যরা। মূলত তাদের উদ্যোগেই এদিন অভুক্ত মানুষদের মুখে দুমুঠো অন্ন তুলে দেওয়া হয়।
প্রসঙ্গত, লকডাউনের পরের দিন থেকেই রামপুরহাট মহকুমা পুলিশ আধিকারিকের সহযোগিতায় অভুক্ত মানুষদের দুবেলা খাবার দিয়ে আসছে বীরভূম জার্নালিস্ট ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন ও রামপুরহাট প্রেসক্লাব। এই কাজে বহু মানুষের সহযোগিতা মিলেছে। রামপুরহাট মাড়োয়ারি যুব মঞ্চ, বস্ত্র ব্যবসায়ী আনন্দ আগরওয়াল, মুন্না তাপুরিয়া, মেহেশ্বরী ওসোয়াল যুব মঞ্চ। সকলের প্রচেষ্টায় এদিনও অভুক্তদের খাবার পরিবেশন করা হয়েছে। রেশমি দে বলেন, “প্রতিবছর এই দিনটিতে বাড়িতে যা করতাম, এখানেও সেই কাজটাই করলাম। খুব ভালো লাগল এই সমস্ত মানুষদের খাবার পরিবেশন করতে।
এন কে রাম বলেন, “আজ বি আর আম্বেদকরের জন্মদিন। দিনটিকে স্মরণীয় করে রাখতে আমরা একদিন খাবার দিলাম”। আনন্দ আগরওয়াল বলেন, “এই সমস্ত মানুসদের মুখে খাবার তুলে দিতে পেরে ভালো লাগছে। উনারা আমাদের খবার নিয়ে আমাদের ধন্য করছেন”।