সুশান্ত ঘোষ, আমাদের ভারত, উত্তর ২৪ পরগণা, ২৫ জানুয়ারি: গৃহবধূকে শ্বাস রোধ করে খুন করে মাটিতে পুঁতে দেওয়ার অভিযোগে প্রতিবেশী এক যুবক ও তার বোনকে গ্রেফতার করল পুলিশ। ঘটনাটি উত্তর ২৪ পরগনার গোপালনগর এলাকার। পুলিশ বাদুড়িয়া এলাকা থেকে অভিযুক্ত বোনের শ্বশুর বাড়ির রান্না ঘর খুঁড়ে উদ্ধার করে গৃহবধূর পচাগলা দেহ।
পুলিশ জানিয়েছে, মৃত গৃহবধূর নাম রহিমা খাতুন।
পুলিশ ও পরিবার সূত্রের খবর, বছর দশেক আগে গোপালনগর থানার নতিডাঙার বাসিন্দা রহিমা খাতুনের সঙ্গে গোপালনগর থানার সাতবেড়িয়ার বাসিন্দা সেলিম মন্ডলের বিয়ে হয়েছিল। বিয়ের আট বছর পর রহিমা তার গ্রামের প্রতিবেশী যুবক বাকিবিল্লা মন্ডলের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ে। এরপর তার ৭ বছরের মেয়েকে রেখে বাকিবিল্লার সঙ্গে মুম্বাই পালিয়ে যায় বলে অভিযোগ পরিবারের। প্রায় দেড় বছর মেয়ের সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ থাকলেও পাঁচ মাস আগে থেকে ফোনে যোগাযোগ হয়নি পরিবারের। এরপর পরিবারের পক্ষ থেকে গোপালনগর থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয় বাকিবিল্লা ও তার বোন তারাবানু মন্ডলের বিরুদ্ধে। অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত নেমে বাকিবিল্লা ও তারাবানুকে গ্রেফতার করে গোপালনগর থানার পুলিশ। পুলিশ জেরা করে জানতে পারে ৬ মাস আগে বসিরহাটের বাদুড়িয়ার ঈশ্বরীগাছায় তারাবানুর শ্বশুরবাড়িতে রহিমাকে গলায় ফাঁস দিয়ে খুন করে রান্নাঘরের মাটিতে পুঁতে দেয়। এরপর পুলিশ বাকিবিল্লা ও তার বোন তারাবানুকে গ্রেফতার করে।
বৃহস্পতিবার সকালে রহিমার পরিবারের কাছে এই খবর পৌছাতেই পরিবার ও প্রতিবেশীরা ক্ষোভে ফেটে পড়ে। প্রতিবেশী বাকিবিল্লার বাড়িতে চড়াও হয়। এলাকায় উত্তেজনা ছড়াতে গোপালনগর থানার পুলিশ এসে ঘটনা সামাল দেয়। পরিবারের অভিযোগ, এই বাকিবিল্লা ও তার বোন তারাবানু নারী পাচারের সঙ্গে যুক্ত। অভিযোগ আগেও এমন ঘটনার অভিযোগ উঠেছে বাকিবিল্লার বিরুদ্ধে। মেয়েদেরকে প্রেমের জলে ফাঁসিয়ে ভিন রাজ্যে বিক্রি করে দেয়।
পুলিশ সূত্রে খবর, বুধবার ধৃতদের জেরা করে জানতে পারা যায় ধৃত ভাই বোন পরিকল্পিত ভাবে খুন করে মাটির তলায় দেহ পুঁতে রেখে দেয়। বৃহস্পতিবার বাদুড়িয়া এলাকায় গোপালনগর থানা ও বাদুড়িয়া থানার পুলিশের যৌথ উদ্যোগে মাটি খুঁড়ে পচাগলা দেহ উদ্ধার করে।
বৃহস্পতিবার ধৃতদের বনগাঁ মহকুমা আদালতে তোলা হলে বিচারক ১০ দিনের পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ দেয়।