অমানবিক! শারীরিক এবং মানসিক অত্যাচারের অভিযোগ পুলিশ স্বামীর বিরুদ্ধে, শান্তিপুর থানার দ্বারস্থ গৃহবধূ

স্নেহাশীষ মুখার্জি, আমাদের ভারত, নদিয়া, ২২ আগস্ট: স্ত্রীকে শারীরিক এবং মানসিক নির্যাতনের অভিযোগ উঠল কলকাতা পুলিশের এক পুলিশকর্মীর বিরুদ্ধে। শান্তিপুর থানার দ্বারস্থ ওই পুলিশকর্মীর স্ত্রী। শান্তিপুর থানার বাইগাছি পাড়ার ওস্তাগার ওস্তাগর লেনের ঘটনা।

সূত্রের খবর, অভিক মিত্র পশ্চিমবঙ্গ পুলিশের কলকাতায় কর্মরত। তার স্ত্রী মৌমিতা চক্রবর্তী মিত্র তার দুই ছেলেকে নিয়ে বাইগাছি পাড়াতে থাকেন। জানা গেছে, জন্মাষ্টমীর দিন পাশের বাড়িতে দুই ছেলেকে নিয়ে নিমন্ত্রণ রক্ষা করতে যান তিনি। সে সময় বৃষ্টি আসে। ঘরের তালা বন্ধ থাকায় ঐ পুলিশ কর্মী বাড়িতে ফিরে কিছুক্ষণের জন্য বৃষ্টিতে ভেজেন। আর তাতেই মেজাজ হারিয়ে ফেলেন। স্ত্রীর চুলের মুঠি ধরে প্রথমে কিলচড় মারার পর, পায়ের জুতো খুলে স্ত্রীর বাঁ গালে মারতে থাকেন। বড় ছেলে মাকে বাঁচাতে আসলে, তাকেও গলা টিপে ধরা হয় বলে অভিযোগ।

প্রতিবেশী এক দম্পতি এবং অপর এক যুবকের হস্তক্ষেপে কোনওরকমে মা ছেলে প্রাণে বেঁচে যায়। এরপর আবারও ঘরে ঢুকে দুই ছেলে সহ তাকে মারধর করে বলে অভিযোগ মৌমিতার। বেধড়ক মারের চোটে তিনি সংজ্ঞাহীন হয়ে পড়লে প্রতিবেশীরা তাকে শান্তিপুর স্টেট জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

কিছুটা সুস্থ হলে পরের দিন শান্তিপুর থানার দ্বারস্থ মৌমিতাদেবী। পাশাপাশি তিনি সোশ্যাল মিডিয়ায় মৃত্যুর আশঙ্কা প্রকাশ করে সাহায্যের আবেদন করেন।

বর্ধমান জেলার বাসিন্দা মৌমিতা দেবীর বিয়ে হয়ে ছিলো পনেরো বছর আগে। ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে মৌমিতা দেবীর একমাত্র অভিভাবক বিধবা মা তপতী চক্রবর্তী গতকাল এসে পৌঁছান মেয়ের বাড়িতে। তিনি বলেন, “রীতিমতন পণের দাবি মিটিয়ে সে সময়, বিয়ে দেওয়া হয়েছিল। তবে বছর তিনেক পর থেকে জানতে পারি আমার জামাইয়ের সঙ্গে একাধিক মহিলার বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্ক আছে, আর সেই থেকেই অশান্তির সূত্রপাত।” মৌমিতার মার অভিযোগ এখনো পাড়ার এক মহিলার সাথে তার জামাইয়ের রীতি মতন সম্পর্ক রয়েছে।

মৌমিতা দেবী জানান, তাঁর স্বামী শুধু ছেলেদের খরচ এবং তার খাওয়া খরচ দেন, বাকি সব তিনি সেলাই করে এবং তার মার পেনশনের টাকা দিয়ে চালান। এই মুহূর্তে বাড়ি ছেড়ে যাওয়ার কোন প্রশ্নই ওঠে না, ঘটনার দিন ননদ রত্না গোমসকে তিনি ফোন করে সবকিছু জানান।

মৌমিতা জানান, একই ছাদের তলায় থাকলেও বেশ কয়েক বছর ধরে তাদের মধ্যে স্বামী-স্ত্রীর কোনও সম্পর্ক নেই। তবে তার স্বামীর সরকারি চাকরি বাঁচানোর জন্য এবং ছেলেদের ভবিষ্যতের কথা ভেবে এখনো বধূ নির্যাতন এবং হত্যার চেষ্টা সংক্রান্ত কোনো মামলা তিনি করেননি। কিন্তু তাকে মেরে ফেলা হবে এমনটাই আশঙ্কা করছেন তিনি। শুধু নিজের নয় দুই ছেলেও জীবনহানির আশঙ্কা করছেন।

অভিকবাবুর বর্তমান মোবাইল নম্বর দিতে পারেননি পরিবার এবং প্রতিবেশী কেউই। তিনি শান্তিপুরে থাকলেও আমরা একাধিকবার বাড়িতে গিয়েও যোগাযোগ করতে পারিনি তার সাথে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *