রাজ্যের ১০টি জায়গাকে হটস্পট চিহ্নিত করে সম্পূর্ণ লকডাউন, বাজার দোকান সব বন্ধ

সৌভিক বন্দ্যোপাধ্যায়, কলকাতা, ১১ এপ্রিল: রাজ্যে করোনা সংক্রমণের গতি বৃদ্ধি পেয়েছে। তাই রাজ্যজুড়ে লকডাউন বৃদ্ধি ঘোষণার আগেই রাজ্যের ১০টি জায়গাকে করোনা হটস্পট হিসেবে চিহ্নিত করে সম্পূর্ণ ১০০ শতাংশ লকডাউন ঘোষণা করল রাজ্য প্রশাসন। ওই জায়গাগুলির বাজার, দোকানপাট, রাস্তা সব বন্ধ করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে ওই এলাকার প্রত্যেকের বাড়ি বাড়ি গিয়ে র‍্যাপিড টেস্টের সিদ্ধান্তও নেওয়া হয়েছে বলে নবান্ন সূত্রে খবর।

শুক্রবারই নবান্নে নাম না করে এই হটস্পটগুলি ঘোষণা করেছিলেন মুখ্যসচিব রাজীব সিনহা। তিনি জানান, রাজ্যে করোনা সংক্রমণের হার দেখে ১০ টি জায়গাকে হটস্পট হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। তার সংলগ্ন এলাকাগুলির নাম দেওয়া হয়েছে ক্লাস্টার জোন। হটস্পটগুলিকে শনিবার সকাল থেকে সম্পূর্ণ লকডাউনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। মুখ্যসচিব জানান, সংক্রমণ যাতে ছড়িয়ে না পড়ে, তার জন্য চিহ্নিত হটস্পট এলাকাগুলিতে কাউকে ঢুকতে বেরোতে দেওয়া হবে না। ত্রিস্তরীয় নিরাপত্তা ব্যবস্থায় মুড়ে ফেলা হবে। আপাতত ১৪ দিন এই ব্যবস্থা বহাল থাকবে।

নবান্ন সূত্রে খবর, কলকাতার কিছু জায়গা যেমন কলেজ স্ট্রিট, পার্ক সার্কাস, গার্ডেনরিচ সংলগ্ন এলাকা, দক্ষিণ ২৪ পরগনার একাংশ, উত্তর ২৪ পরগনার একাংশ, সল্টলেকের একাংশ, হাওড়ার একটা বড় অংশ, নদিয়ার একাংশ, দমদমের একাংশ, উত্তরবঙ্গের কালিম্পং এবং আলিপুরদুয়ারের একাংশ, পূর্ব মেদিনীপুরের হলদিয়া এবং এগরাকে সম্পূর্ণ ১০০ শতাংশ লকডাউন এলাকা হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। এই সমস্ত জায়গায় করোনা পরিস্থিতি কি অবস্থায় রয়েছে, তা জানার জন্য অবিলম্বে এই জায়গাগুলি সম্পূর্ণ লকডাউন করার প্রয়োজনীয়তা রয়েছে। সেই কথা ভেবে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। প্রত্যেক হটস্পট এলাকার পাশে তিনটি করে ক্লাস্টার জোন বা এলাকা তৈরি করা হয়েছে। হটস্পট এলাকাগুলি টেস্ট করার পর ক্লাস্টার এলাকাগুলি টেস্ট করার দিকে জোর দেওয়া হবে। এই সমস্ত এলাকায় মানুষের যাতে অসুবিধা না হয়, সেই কারণে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিস এবং ওষুধের সরবরাহ বজায় রাখতে তৈরি হচ্ছে মাস্টারপ্ল্যান। স্থানীয় পুলিশ প্রশাসন প্রয়োজনমতো বাসিন্দাদের সাহায্য করবে।

স্বাস্থ্যভবনের এক শীর্ষ আধিকারিকের কথায়, এইভাবে করোনা সংক্রামিত এলাকাগুলোকে চারপাশ থেকে ঘিরে চিহ্নিতকরণ না করলে এবং দ্রুত চিকিৎসা শুরু না করলে ওই এলাকায়গুলি থেকে অন্য এলাকাগুলিতে মহামারী সংক্রমণ আটকানো যাবে না। বিশ্বে প্রথম ৫০, ০০০ জনের ৮৩ দিনে এবং পরবর্তী ৫০০০০ জনের মাত্র ৮ দিনে মৃত্যু হয়েছে। এ দেশ তথা রাজ্যেও লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে আক্রান্তের সংখ্যা। তাই আসল করোনা পরিস্থিতি চিহ্নিতকরণে বাধ্য হয়েই সিদ্ধান্ত নিয়েছে প্রশাসন। বিশ্বে প্রয়োগ হওয়া এই মডেলই একমাত্র করোনা নিয়ন্ত্রণ করতে পারে বলে মত ওই স্বাস্থ্য আধিকারিকের।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *