ডাক্তার প্রশান্ত কুমার ঝরিয়াৎ
আমাদের ভারত, ২৬ জানুয়ারি: রাকেশবাবু উচ্চ শিক্ষিত, একটি বহুজাতিক কোম্পানির উচ্চপদে কর্মরত। প্রায়শই সময়ের অভাবে খাওয়া সঠিক সময়ে হয়ে ওঠে না, আবার বেশিরভাগ সময় অফিসের ক্যান্টিনের তেল, ঝাল, মশলাদার খাবার খেয়ে ফেলেন। হঠাৎ রাকেশবাবুর একদিন শুরু হল পেটের যন্ত্রণা। প্রথম প্রথম বাজার চলতি কিছু অ্যান্টাসিড জাতীয় ওষুধ খেয়েও যখন কমল না তখন বাধ্য হয়ে ডাক্তারের শরণাপন্ন হলেন। ডাক্তারবাবু বললেন, পেপটিক আলসার সিনড্রোম। ওষুধের সাথে সাথে সঠিক খাদ্যাভাস মেনে চলতে পরামর্শ দিলেন।
বহুক্ষন খালিপেটে থাকা, অত্যধিক তেল, ঝাল ও মশলাদার খাবার খাওয়া, অপরিমিত মদ্যপান করা, সর্বদা মানসিক চাপ বা উৎকন্ঠায় দিন কাটানো, অনিয়ন্ত্রিত সুগার ইত্যাদি পেপটিক আলসারের প্রধান কারন। প্রথম থেকেই এই রোগ নিরাময়ের যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা না হলে ভবিষ্যতে এখান থেকেই মারন রোগের উৎপত্তি হতে পারে।তাই এই রকম রোগ লক্ষণে প্রথম থেকেই সাবধান হতে হবে।
সঠিক সময়ে খাবার খাওয়া, তেল, ঝাল, মশলাদার খাবার বর্জন করা, নিরুদ্বেগ জীবন যাপন করা, সুগার ও রক্ত চাপকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারলেই এই রোগকে অনেক খানি দুরে সরিয়ে রাখা যায়।
কিছু কিছু হোমিওপ্যাথি ওষুধ আছে যেগুলি এই রোগ নিরাময়ে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালন করে।
পেটের ভিতর জ্বালা ভাব তৎসহ গরমে উপশম হলে আর্সেনিক ঔষধটি অত্যন্ত কার্যকরী।
পেটে যন্ত্রণা,কিছু খাবার খাওয়ার সাথে সাথেই বমি, ঠান্ডা পানীয়তে সাময়িক উপশম হলে বিসমাথ কে স্মরণ করতে হবে।
বরফঠাণ্ডা জল খেলে পেট যন্ত্রণার সাময়িক উপশম, ঠান্ডা জল পেটে গিয়ে গরম হলেই বমি, এই রূপ লক্ষণ পেলে ফসফরাস ঔষধটি নিরাশ করবে না।
গুরুপাক খাবার খেয়ে বদহজম, তার সাথে পেটে যন্ত্রণা হলে নাক্সভোমের জুড়ি মেলা ভার।
গ্যাসট্রিক ও ডিওডেনাল আলসারের ক্ষেত্রে সিম্ফাইটাম ওষুধটি খুবই কার্যকরী।
রুগী খুব গরম খেতে পছন্দ করলে এবং তাতে উপশম হলে চেলিডোনিয়াম কে স্মরণ করতে হবে।
ক্ষিধে রুগী একদম সহ্য করতে পারে না এবং বিকেল ৪টে থেকে ৬টা পর্যন্ত রোগের লক্ষণ বৃদ্ধি পেলে লাইকপোডিয়াম কার্যকরী।
পেটে অসহ্য যন্ত্রণা, মুখ সবসময় তেতো হয়ে আছে সঙ্গে কোষ্ঠবদ্ধতা থাকলে হাইড্রাসটিস অত্যন্ত ভালো কাজ করে।
এছাড়াও আরও অনেক ওষুধ আছে যেগুলো অত্যন্ত কার্যকরী, কিন্তু এগুলি প্রয়োগের আগে একজন অভিজ্ঞ হোমিওপ্যাথি ডাক্তারবাবুর সঙ্গে আলোচনা করে নেবেন, তিনি ঔষধগুলির ডোজ ও মাত্রা নির্ধারণ করে দেবেন।