India, Britain, ঐতিহাসিক মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি স্বাক্ষর হলো ভারত- ব্রিটেনের মধ্যে

আমাদের ভারত, ২৪ জুলাই: বৃহস্পতিবার লন্ডনে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ও ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমারের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক বৈঠকের পর ভারতের বাণিজ্য মন্ত্রী পীযূষ গোয়েল এবং ব্রিটেনের ব্যবসা ও বাণিজ্য সচিব জনাথন রেনল্ডসের মধ্যে ঐতিহাসিক মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি স্বাক্ষর হয়। এটি ব্রেকসিটের পর স্বাক্ষরিত সবচেয়ে বড় বাণিজ্য চুক্তি এবং ভারতের সঙ্গে ব্রিটেনের প্রথম পূর্ণাঙ্গ বাণিজ্য অংশীদারিত্ব।

প্রধানমন্ত্রী মোদী জানান, এই চুক্তি দু’দেশের সমৃদ্ধির রূপরেখা। বহু বছরের পরিশ্রমের পর আজ এক ঐতিহাসিক মুহূর্তে পৌছালাম। তিনি বলেন, এই চুক্তির ফলে বছরে ৩৪ বিলিয়ন ডলারের দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য বৃদ্ধির সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে।

চুক্তির মাধ্যমে ভারতীয় টেক্সটাইল, জুতো, রত্ন ও গয়না, সামুদ্রিক খাবার এবং ইঞ্জিনিয়ারিং পণ্যের জন্য ব্রিটেনের বাজারে ঢোকা আরো সহজ হবে। পাশাপাশি কৃষি পণ্য ও প্রক্রিয়াজাত খাদ্যপণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রেও নতুন সুযোগ আসবে। বিশেষভাবে উপকৃত হবে ভারতের কৃষক, মৎস্যজীবী, যুব সম্প্রদায়, ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প ক্ষেত্র।

প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, ভারতের জনগণ ব্রিটেনের তৈরি উন্নত মানের মেডিকেল ডিভাইস ও অ্যারোস্পেস পণ্য সহজলভ্য ও প্রতিযোগিতামূলক ভাবে কম দামে পাবেন।

ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী বলেন, এই চুক্তি দু’দেশের মানুষের জীবনে ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে। মজুরি বাড়বে।জীবনযাত্রার মান উন্নত হবে এবং কর্মসংস্থান ও ব্যবসার সুযোগ তৈরি হবে। এটি ব্রেকসিটের পর ব্রিটেনের সবচেয়ে বড় এবং অর্থনৈতিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্যিক চুক্তি।

চুক্তিটি ভারতের ক্ষেত্রেও তাৎপর্যপূর্ণ। এটি গত এক দশকে ভারতের কোনো উন্নত দেশের সঙ্গে করা প্রথম বড় বাণিজ্যিক চুক্তি। পাশাপাশি ব্রিটেনের জন্য এই চুক্তি ইউরোপীয় ইউনিয়ন যাওয়ার পর সবচেয়ে অর্থবহ বাণিজ্যিক পদক্ষেপ।

চুক্তির ফলে ৯৯% ভারতীয় পণ্য ব্রিটেনের বাজারে শুল্ক মুক্ত প্রবেশাধিকার পাবে। এতে ২০৩০ সালের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য মূল্য ১২০ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছানোর লক্ষ্যমাত্রা রাখা হয়েছে।

এছাড়াও চুক্তিতে একটি সামাজিক নিরাপত্তা চুক্তিও রয়েছে, যার ফলে ভারতীয় কোম্পানিগুলি ব্রিটেনে কর্মী পাঠাতে পারবে, দ্বিগুণ সামাজিক নিরাপত্তা খরচ ছাড়াই, যা ব্যবসার জন্য খরচ কমাবে।

বর্তমানে ব্রিটেন ভারতের ষষ্ঠ বৃহত্তম বিনিয়োগকারী। দেশটিতে প্রায় এক হাজার ভারতীয় কোম্পানি এক লক্ষেরও বেশি মানুষকে নিয়োগ দিয়েছে এবং প্রায় দুই বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করেছে। ২০২৪- ২৫ অর্থবছরে ভারতে ব্রিটেনের রপ্তানি হয়েছে ১৪.৫ বিলিয়ন ডলার, আগের বছরের তুলনায় ১২.৬ শতাংশ বেশি। অন্যদিকে আমদানি বেড়েছে ২.৩ শতাংশ হারে, যা ৮.৬ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছেছে।

এই ঐতিহাসিক চুক্তি দুই দেশের অর্থনৈতিক সম্পর্ককে আরো মজবুত করবে বলে মনে করছে কূটনৈতিক মহল।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *