আমাদের ভারত, ১৫ মার্চ: সম্প্রতি দেশের শীর্ষ আদালতে সমলিঙ্গের বিবাহকে বৈধতা দেওয়ার বিরোধিতা করে হলফনামা জমা দিয়েছে কেন্দ্রের এনডিএ সরকার। সমলিঙ্গের বিবাহের বিরোধিতায় মঙ্গলবার রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘের সাধারণ সম্পাদক দত্তাত্রেয় হোসাবলের গলাতেও একই সুর শোনা গেছে। তিনি বলেন, বিবাহকে হিন্দুদের জীবনের সংস্কার হিসেবে বিবেচনা করা হয়। ভোগ বা চুক্তির জন্য বিয়ে করা হয় না। বরং সামাজিক কল্যাণের জন্য বিয়ে করা হয়।
দত্তাত্রেয় বলেন, একসাথে বসবাস করা ভিন্ন। কিন্তু যাকে বিয়ে বলা হয় তা হল বহু বছর ধরে হিন্দু জীবনের একটি সংস্কার। দু’জন ব্যক্তি বিয়ে করে এবং একসাথে বসবাস করেন শুধুমাত্র নিজেদের জন্য নয়, পরিবারের জন্য এবং সামাজিক মঙ্গলের জন্য। বিয়ে যৌন উপভোগের জন্য নয়, চুক্তিও নয়। তাঁর মতে কেবলমাত্র বিপরীত লিঙ্গের মাধ্যমে বিয়ে হওয়াই সম্ভব। সম লিঙ্গের মধ্যে বিয়ে কখনোই সম্ভব নয়।
ভারতের সমকামী বিবাহের আইনি স্বীকৃতি বিবেচনা করতে সম্মত হয়েছিল সুপ্রিম কোর্ট। সেই মতো সম্প্রতি মামলার শুনানিও হয়। সেখানে সম লিঙ্গের বিবাহের দাবিতে দিয়ের করা আবেদন খারিজ করার দাবি জানিয়ে হলফনামা পেশ করে কেন্দ্র সরকার। কেন্দ্র সরকারের তরফে দায়ের করা হলফনামায় বলা হয়েছে, সম লিঙ্গের সম্পর্কে ভারতীয় পারিবারিক সম্পর্কের সঙ্গে তুলনা করা যায় না। ভারতীয় পরিবারের ধারণা হলো স্বামী স্ত্রী এবং তাদের সন্তান।
কেন্দ্রের তরফে আরও জানানো হয়েছে, সম লিঙ্গের সম্পর্ককে আইনি বৈধতা দেওয়ার মানে এই নয় যে সম লিঙ্গের বৈবাহিক সম্পর্ককে বৈধতা দিতে হবে। সামাজিক কারণে সম লিঙ্গে বিবাহের বিরোধিতা করেছে কেন্দ্র।
২০১৮ সালের ৬ সেপ্টেম্বর এক ঐতিহাসিক রায়দানের মাধ্যমে সমকামী সম্পর্ককে অপরাধ মুক্ত বলে ঘোষণা করেছিল সুপ্রিম কোর্ট। ব্রিটিশ জমানার বহু পুরনো আইনকে প্রত্যাহার করে পাঁচ সদস্যের বিচারপতিদের বেঞ্চ জানিয়েছিল ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩৭৭ ধারার আওতায় দুজনের পূর্ণ সম্মতিতে সমকাম সম্পর্ক অপরাধ নয়। সেই ৫ বিচারপতির বেঞ্চে ছিলেন দেশের বর্তমান প্রধান বিচারপতির ডি ওয়াই চন্দ্রচূড়। তবে সমকামী সম্পর্ক বৈধ হলেও সমকামী বিয়ে এখনো আইনি বৈধতা পায়নি ভারতে।