আমাদের ভারত, ৩০ মে: দিন কয়েক আগে আমেরিকার আন্তর্জাতিক ধর্মীয় স্বাধীনতা বিষয়ক কমিশনের এক রিপোর্টে দাবি করা হয়, বাংলাদেশের সংখ্যালঘুদের জীবন বিপন্ন। তারা স্বাধীনভাবে ধর্মাচরণ করতে পারছেন না। এবার আবারো প্রকাশ্যে এলো সে দেশের হিন্দু নির্যাতনের করুণ ছবি। একটি সর্বভারতীয় সংবাদ মাধ্যমের প্রতিবেদন অনুযায়ী গত শনিবার রাত ও রবিবার দুপুরের মধ্যে রংপুর জেলার এক অঞ্চলে অন্তত ১৫টি হিন্দু বাড়িতে ভাঙ্গচুর চালায় দুষ্কৃতীরা। ঘটনায় আশ্রয়হীন বহু হিন্দু। জোটে খাবারটুকু।
জানা গেছে, এক কিশোরের ফেসবুক পোস্ট থেকে বিতর্ক ছড়ায়। যদিও সেই কিশোর জানায়, সে ওই পোস্ট করেনি। তবু অভিযোগের কারণে তাকে আটক করা হয়। কিন্তু তারপরই শুরু হয় দুষ্কৃতিদের তাণ্ডব। কমপক্ষে ১৫টি বাড়িতে ভাঙ্গচুর চালানো হয়। বাড়ির বাসিন্দারা ভয়ে বাড়ি ছেড়ে পালিয়ে গিয়েছেন। অন্যত্র আশ্রয় নিয়েছেন তারা।
পরে সেনা- পুলিশ মোতায়েন করে সাময়িক শান্তি ফেরানো হলেও হিন্দুরা জানিয়েছেন, তারা অত্যন্ত বিপন্ন বোধ করছেন। বেশির ভাগই ক্ষুদার্থ। পাশাপাশি তাদের বাড়ি হয় পুড়ে গিয়েছে, নয়তো ভেঙ্গে দেওয়া হয়েছে। ফলে কোথায় তারা থাকবেন সেটাই ভাবতে পারছেন না। কবে বাড়ি ফিরতে পারবেন বুঝতে পারছেন না।
এই ঘটনার ঠিক আগেই, শনিবার মার্কিন সংস্থার আধিকারিকদের সফরের পর রিপোর্ট তৈরি করা হয়। রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে, ২০২৪ সালের জুলাইয়ে ছাত্র আন্দোলনের মাধ্যমে সে দেশে রাজনৈতিক পরিবর্তন ঘটে। আগস্টে সেনাবাহিনীর সমর্থনে নোবেল বিজয়ী অধ্যাপক ডঃ মহম্মদ ইউনুস অন্তর্ভুক্তি সরকারের প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব নেন, কিন্তু দেশে ধর্মীয় সহনশীলতা এবং সংখ্যালঘুদের সুরক্ষা এখনো অনিশ্চিত ও ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে। ৫-৮ আগস্ট শেখ হাসিনার দেশত্যাগ ও সরকার পতনের সময় দেশে কার্যকর কোনো প্রশাসন না থাকায় ভয়াবহ সহিংসতা ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা ঘটছে। এই সময় হিন্দু সম্প্রদায়ের উপর একাধিক হামলার খবর পাওয়া যায়, যেগুলিকে আওয়ামি লিগের সমর্থক সদস্য ভেবে প্রতিশোধ মূলক হামলা বলে চালানো হয়।
এদিকে চলতি বছরের এপ্রিল থেকে জুন পর্যন্ত সারা দেশে রাজনৈতিক সহিংসতায় কমপক্ষে ৭২ জন নিহত হয়েছেন বলে উল্লেখ করেছে মানবাধিকার সংগঠন “অধিকার”। আহত ১৬৭৭ জনের মধ্যে ১৯ জন গণপিটুনির শিকার হয়ে নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে রংপুরের ঘটনায় নতুন করে উদ্বেগ ছড়িয়েছে।