আমাদের ভারত, ২২ ডিসেম্বর: ভারতবর্ষের অন্যতম প্রাচীন রাজনৈতিক দল অখিল ভারত হিন্দু মহাসভার পশ্চিমবঙ্গের রাজ্য সভাপতি ডক্টর চন্দ্রচূড় গোস্বামীর নেতৃত্বে রাজ্য কমিটির একাধিক সদস্য দিল্লিতে রাষ্ট্রপতি ভবনে গিয়ে ভারতের সাংবিধানিক প্রধান রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুকে চিঠি দিয়ে ভারতে হালাল অর্থনৈতিক ব্যবস্থাকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করতে চিঠি দিয়ে আবেদন করলেন।
ডক্টর চন্দ্রচূড় গোস্বামীর বক্তব্য, ভারত যদি ধর্ম নিরপেক্ষ রাষ্ট্র হয় তাহলে কেন হালাল অর্থাৎ ইসলামী শরিয়ত অনুযায়ী বৈধ বা অনুমোদিত পণ্য বা খাদ্যবস্তু বিক্রি হবে? একাধিক তথ্য সামনে এসেছে যেখানে প্রমাণ পাওয়া গেছে, মুসলমানদের হালাল অর্থনৈতিক ব্যবস্থার একটি বৃহত্তর অংশ পৃথিবীতে মুসলিম মৌলবাদ ও সন্ত্রাসবাদকে শক্তিশালী করতে ব্যবহৃত হচ্ছে। আজ বাংলাদেশ, পাকিস্তান, ভারত তথা অন্যান দেশে মুসলিম জিহাদী মৌলবাদের যে বাড়বাড়ন্ত তার সিংহভাগ টাকা আসে হালাল অর্থনৈতিক ব্যবস্থা থেকে এবং আরব দেশের তেল বিক্রির ডোনেশনের টাকা থেকে। তাই সন্ত্রাসবাদের কোমড় ভাঙতে চাইলে অবশ্যই ভারতে হালাল অর্থনৈতিক ব্যবস্থাকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করতে হবে। শুধু তাই নয়, আমরা সনাতনী হিন্দুরা ভগবান মহাদেব, ভগবান শ্রীকৃষ্ণ, খাটো শামজি, দেবী দুর্গা, বা বৈষ্ণ মাতার উপবাস বা ব্রত পালন করার সময় ইসলামীয় রীতিতে বানানো খাদ্য বা সামগ্রী গ্রহণ করবো কেন? আমরা ভারতের মাননীয়া রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুজির চিফ সেক্রেটারিকে আমাদের চিঠি দিলাম এবং রাষ্ট্রপতি ভবন এই বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে বিবেচনা করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।

মুসলমানরা নিজেদের মধ্যে হালাল অর্থনৈতিক ও খাদ্য সামগ্রী ব্যবহার করুক, তাতে হিন্দু মহাসভার কোনো আপত্তি নেই, কিন্তু মুসলমানদের এই অধিকার কে দিয়েছে যে তারা এই ব্যবস্থা অন্য ধর্মাবলম্বী মানুষদের ওপর চাপিয়ে দিচ্ছে। সমস্ত অমুসলমান মানুষের উচিৎ এই হালাল পদ্ধতিতে বানানো খাদ্য ও পণ্য সামগ্রীকে বর্জন করা। যে দোকানে হালাল প্রোডাক্ট পাওয়া যায়, সেই দোকান থেকে কোনো জিনিস না কিনে সেই দোকানকেও অর্থনৈতিক ভাবে বর্জন করা উচিত। এর বিকল্প হিসেবে অবশ্য হিন্দু মহাসভা সনাতনী হিন্দুদের সেন্টিমেন্টকে মাথায় রেখে “ওম সার্টিফাইড বা স্বস্তিক সার্টিফাইড” প্রোডাক্ট বাজারে আনতে চলেছে। এখানে মূলত হিন্দু সনাতনীদের ধর্মীয় ভাবাবেগ ও জীবনশৈলীকে মাথায় রেখেই খাদ্যবস্তু ও পণ্যসামগ্রী বানানো হবে।
সম্প্রতি গীতা পাঠের দিন প্যাটিস বিতর্কে মুখ খুলে রাজ্য সভাপতি ডক্টর চন্দ্রচূড় গোস্বামী বলেন, আমরা যে কোনো মানুষের গায়ে হাত তোলার বিরুদ্ধে কিন্তু এটাও সত্যি, সনাতানীদের গীতা পাঠের মত পবিত্র অনুষ্ঠানে ভেজ প্যাটিস বলে চিকেন প্যাটিস বিক্রি করে শেখ রিয়াজুল নিশ্চই অন্যায় করেছে। এতে আমাদের সনাতনীদের ধর্মীয় ভাবাবেগে আঘাত লেগেছে। তিনি আরো বলেন, কংগ্রেস, তৃণমূল, বিজেপি বা হিন্দু মহাসভা, যে রাজনৈতিক দলই হোক, যদি তারা হিন্দু সনাতনীদের ধর্মীয় ভাবাবেগকে গুরুত্ব না দিয়ে সেক্যুলারিজম দেখাতে গিয়ে বেশি বাড়াবাড়ি করে তাহলে আগামী দিনে পশ্চিমবঙ্গ এবং ভারতে নির্বাচনের সময় রাজনৈতিক দলগুলোর নিজেদের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখা মুশকিল হয়ে পড়বে।
হিন্দু মহাসভার অফিস সেক্রেটারি অনামিকা মন্ডল বলেন, আমরা পশ্চিমবঙ্গে ফিরেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং রাজ্যপাল সি.ভি.আনন্দ বোসকে জানিয়ে বিভিন্ন স্থানে “ওম বা স্বস্তিক” সার্টিফাইড খাদ্য বা প্রোডাক্টের স্টল দেব।
রাষ্ট্রপতি ভবনে হিন্দুমহাসভার রাজ্য কমিটির প্রতিনিধি দলে রাজ্য সভাপতি ডক্টর চন্দ্রচূড় গোস্বামী ও অফিস সেক্রেটারি অনামিকা মন্ডল ছাড়াও সোমা দে মন্ডল, জিতেন গোস্বামী, দীপঙ্কর রায় সহ একাধিক সদস্য উপস্থিত ছিলেন।

