আমাদের ভারত, ২২ নভেম্বর: কর্ণাটকের পর হিজাব বিতর্ক এবার এরাজ্যেও। এই বিতর্ককে কেন্দ্র করে মঙ্গলবার উত্তেজনা ছড়ায় হাওড়ার ধুলাগড়ি সরকারি স্কুলে। স্কুল কর্তৃপক্ষ পরীক্ষা বাতিল করতে বাধ্য হয়।
সোমবার এই ঘটনার সূত্রপাত হয় হাওড়ার ধুলাগড়ি আদর্শ বিদ্যালয়ে। জানা গেছে, স্কুলে দশম থেকে দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্রীদের হিজাব পড়ে স্কুলে প্রবেশ করা নিয়ে আপত্তি তোলে দ্বাদশ শ্রেণির একদল ছাত্র। তাদের দাবি, যদি হিজাব পরে স্কুলে আসা যায় তাহলে তারাও নামাবলি গায়ে দিয়ে স্কুলে আসবে। সে ক্ষেত্রে তাদের স্কুলে প্রবেশ করার অনুমতি দিতে হবে। সেই মতো মঙ্গলবারে পাঁচ জন দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্র স্কুলে নামাবলি পরে আসে, আর তাতে প্রতিবাদ জানায় ওই স্কুলের নবম থেকে দ্বাদশ শ্রেণির হিজাব পরিহিতা ছাত্রীরা।
এরপর স্কুলের ভিতর শুরু হয়ে যায় তর্কবিতর্ক। অভিযোগ, স্কুলে ভাঙ্গচুরের ঘটনাও ঘটে। পরিস্থিতি সামাল দিতে স্কুলে যায় সাঁকরাইল থানার পুলিশ। এই অশান্তির জেরে মঙ্গলবার একাদশ শ্রেণির টেস্টের পরীক্ষা বাতিল করেন স্কুল কর্তৃপক্ষ।
অন্যদিকে স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ প্রত্যেক নমাজের দিন দুটি ক্লাস হওয়ার পরই নমাজ পড়তে বেরিয়ে যায় বেশ কিছু মুসলিম পড়ুয়া। এরপর তাদের গ্রামের বিভিন্ন স্থানে প্রকাশ্যে ধূমপান করতে কাউকে অন্যের বাড়ি চলে যেতে দেখা যায়। দীর্ঘদিন ধরে এই ঘটনা ঘটে চলেছে।
জানা গেছে, মঙ্গলবার স্কুল কর্তৃপক্ষ ছাত্রদের নামাবলি খুলে স্কুলে ঢুকতে বললে তারা তাতে আপত্তি জানিয়ে বলে, যদি হিজাব বা বোরখা পরে স্কুলে ঢুকতে দেওয়া হয় তাহলে তাদের কেন নামাবলি গায়ে ঢুকতে দেওয়া হবে না? এরপরই অশান্তি ছড়ায় স্কুলে। হিজাব বন্ধ করে দিলে স্কুলে সরস্বতী পুজো বন্ধ করে দেওয়া হবে বলে হুমকি দেওয়া হয়েছে। দশম শ্রেণির এক ছাত্রীর কথায়, স্কুল থেকে আগেও অনেকবার বারণ করা হয়েছিল হিজাব পরে আসতে, কিন্তু কেউ কথা শোনেনি। আজ কয়েকজন ছাত্র নামাবলী গায়ে দিয়ে পরীক্ষা দিতে ঢুকতে গেলে কয়েকজন মেয়ে আপত্তি জানায়। স্কুলের শিক্ষকরা পরীক্ষা শেষ হওয়ার পর আলোচনার মাধ্যমে সমাধানের আবেদন জানালেও তারা শোনেনি। টেবিল বেঞ্চ তারা উল্টে দেয়। যদিও পাল্টা হামলার অভিযোগ উঠেছে।
প্রধান শিক্ষক অরিন্দম মন্ডল জানিয়েছেন, সোমবার পরীক্ষা শেষ হবার পরে স্কুলে জরুরি বৈঠক হয় তাতে ধর্মীয় পোশাক পরে স্কুলের ভিতরে প্রবেশ করা নিষিদ্ধ করা হয় আর সেই সিদ্ধান্ত স্কুল পড়ুয়াদের জানিয়ে দেওয়া হয়।
স্কুল কলেজে সকলের ‘ড্রেস কোড’ মানা উচিত, না হলেই অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটে বলে মন্তব্য করেছেন বিজেপির সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি তথা মেদিনীপুরের সাংসদ দিলীপ ঘোষ। তিনি আরো জানিয়েছেন, সরকারের এই বিষয়টি কড়াকড়ি ভাবে দেখা উচিত।