আমাদের ভারত, ৫ ডিসেম্বর: লাউড স্পিকার ব্যবহার ধর্মাচরণের অধিকারের মধ্যে পড়ে, মসজিদ কর্তৃপক্ষের এই দাবি মানল না আদালত। লাউড স্পিকার ব্যবহারের অনুমতি চেয়ে করা মসজিদের আবেদন খারিজ করে দিল হাইকোর্ট। আদালত স্পষ্ট জানিয়ে দিল, কোনো ধর্মেই লাউড স্পিকার বা শব্দ বাড়ানোর যন্ত্র ব্যবহার করে প্রার্থনা করতে হবে এমন কোনো বাধ্যবাধকতা নেই।
বম্বে হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ ডিসেম্বরের এক তারিখ এক মামলায় এই নির্দেশ দেয়। গন্ডিয়া জেলার এক মসজিদের তরফে দাখিল করা পিটিশন বলছে, আবেদনকারীরা লাউড স্পিকারের ব্যবহার করে প্রার্থনার অধিকার চেয়েছিলেন।
আদালত নির্দেশে উল্লেখ করেছে, মসজিদ পক্ষ কোনো নথি বা প্রমাণ দেখাতে পারেনি যে ধর্মাচরণে লাউড স্পিকার ব্যবহারে প্রয়োজনীয়তা বা বাধ্যবাধকতা রয়েছে। তাই এটিকে অধিকার হিসেবে দাবি করা যায় না। বেঞ্চ জানিয়েছে, আবেদনকারী লাউড স্পিকার ব্যবহারের অধিকার দাবি করতে পারে না তাই এই পিটিশন খারিজ করা হলো।
আদালত জানিয়েছে, সুপ্রিম কোর্ট বহু আগে স্পষ্ট করে দিয়েছে, কোনো ধর্মে এমন নির্দেশ নেই যে, অন্যের শান্তি ভঙ্গ করে প্রার্থনা করা যায়। আবার এও কোথাও বলা নেই যে, লাউড স্পিকার এমপ্লিফায়ার বা ঢাক- ঢোল বাজিয়ে করতে হবে।
ডিভিশন বেঞ্চ উল্লেখ করে, নাগরিকদের যথোপযুক্ত নীরবতা, শান্তি উপভোগের অধিকার রয়েছে। বিশেষত শিশু, বয়স্ক, অসুস্থ ও মানসিক সমস্যায় আক্রান্ত নাগরিকদের ক্ষেত্রে এই নীরবতার অধিকার অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
আদালত শব্দ দূষণের পুনরাবৃত্তি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। বেঞ্চ জানিয়েছে, শব্দ দূষণ জনস্বাস্থ্যের জন্য গুরুতর হুমকি। এরফলে একাধিক স্বাস্থ্য ঝুঁকি বাড়ে। যেমন হৃদরোগ, উচ্চ রক্তচাপ, মাথা ব্যথা, আক্রমণাত্মক আচরণ, দীর্ঘস্থায়ী ক্লান্তি, এমন কী প্রভাব পড়ে কিডনিতেও। শব্দের মাত্রা ১২০ ডেসিবিল ছাড়ালে কানের পর্দা ফেটে যাওয়ার মতো ঘটনা ঘটতে পারে।
আদালত জানিয়েছে, বিভিন্ন ধর্মস্থলে লাউড স্পিকার নিয়ম ভেঙে ভজন বা ধর্মীয় কার্যক্রম পরিচালনার ঘটনাও নজরে এসেছে।
আদালতের মন্তব্য, বিষয়টি যেহেতু স্বাস্থ্যের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত তাই আশা করবো রাজ্য সরকার সংবেদনশীল ভাবে দেখবে এবং কার্যকরী সমাধান করবে।

