মহসিন কলেজ যথাযথ সংরক্ষণের দাবি তুললেন ঐতিহ্য প্রেমীরা

আমাদের ভারত, হুগলী, ১৯ জানুয়ারি: হুগলীর মহসিন কলেজ যথাযথ সংরক্ষণের দাবি তুললেন ঐতিহ্য প্রেমীরা। তাঁদের হয়ে বৃহস্পতিবার ‘সংস্কার নয় চাই যথাযথ সংরক্ষণ’ বলে দাবি করেন বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ সুদিন চট্টোপাধ্যায়।

কলেজ সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই ভবনের দোতলার ঘর থেকে চাঙড় খসে পড়ছিল। বিষয়টি পূর্ত দফতরকে জানানো হয়। ওই দফতরের ইঞ্জিনিয়াররা সরেজমিনে পরিদর্শন করে গোটা ভবনে দোতলার ছাদ ভেঙ্গে নতুন করে তৈরির পরামর্শ দেন। কয়েকটি ঘরের উপর থেকে লিন্টেল পর্যন্ত সংস্কারের কথাও বলা হয়েছে। সেই মতো পূর্ত দফতর দেড় কোটি টাকার বাজেট নির্ধারণ করে। সেই বাজেট কলেজের পক্ষ থেকে রাজ্য সরকারের কাছে পাঠানো হয়। অনুমোদন মিলেছে। মোট পাঁচ দফায় টাকা আসবে। প্রথম দফায় ৩০ লক্ষ টাকা চলে আসায় ছাদ ভাঙ্গার কাজ শুরু করেছে পূর্ত দফতর।

পশ্চিমবঙ্গ মধ্য শিক্ষা পর্ষদের প্রাক্তন সচিব এবং উচ্চ শিক্ষা সংসদের প্রাক্তন সভাপতি সুদিনবাবু সামাজিক মাধ্যমে লিখেছেন, “বিপজ্জনক’ হয়ে পড়ায় সংস্কারের জন্য হুগলীর মহসিন কলেজের ঐতিহ্যবাহী মূল ভবন,’বঙ্কিম ভব’ন ভাঙ্গা হচ্ছে। কাউকে কিছু না জানিয়ে অধ্যক্ষ পুরুষোত্তম প্রামাণিক ওই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, এই অভিযোগে সরব হয়েছেন কলেজের প্রাক্তনীরা। তাঁরা ওই ভবনের ফরাসি স্থাপত্যশৈলী বজায় রেখে সংস্কারের দাবি তুলেছেন। অভিযোগ মানেননি অধ্যক্ষ। তবে, মঙ্গলবার প্রাক্তনীদের সঙ্গে বৈঠকের পরে তিনি জানিয়েছেন, যথাসম্ভব পুরনো শৈলী বজায় রেখেই সংস্কার করা হবে।

এই মুহূর্তে সোচ্চারের দাবি উঠুক এই ঐতিহ্যবাহী কলেজের পুরনো ভবনগুলির নির্মাণ শৈলীর বিন্দুমাত্র বিচ্যুতি না ঘটিয়ে, তাদের চেহারা অক্ষত রেখে, আধুনিক প্রক্রিয়া ও প্রকৌশল প্রয়োগে সংরক্ষণ করা হোক। মামুলি মেরামত বা সংস্কারের নামে অনাচার অবিলম্বে বন্ধ হোক। সংস্কার ও সংরক্ষণ এক নয়। সংরক্ষণের উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত নৈহাটি ‘বঙ্কিম ভবন’। পশ্চিম বাংলার একটি অতি স্ফীতকায় অর্থপোষ্য ‘ঐতিহ্য সংরক্ষণ কমিটি’ আছে বলে শুনেছি। তাঁরা জেগে আছেন বলে মনে তো হয় না।”

কলেজে লাগানো সরকারি ফলক বলছে, ১৮০৪-১৮০৫ সালে ওই ভবন নির্মাণ করেন ফরাসি জেনারেল পেরন। পরে চুঁচুড়ার জমিদার জগমোহন শীল এই ভবন কিনে নেন। ১৮৩৬ সালের পয়লা অগস্ট থেকে এই ভবনেই ‘হুগলি মহসিন কলেজ’-এর পথচলা শুরু হয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *