সৌভিক বন্দ্যোপাধ্যায়, কলকাতা, ৬ এপ্রিল: রাজ্যে করোনা মৃত্যু নিয়ে যাতে সাধারণ মানুষের মধ্যে বিভ্রান্তি রুখতে সতর্ক প্রশাসন। সেই কারণেই এখন থেকে কোন করোনা পজিটিভ রোগীর মৃত্যু হলে তার মৃত্যু করোনা ভাইরাসের জন্যই হয়েছে কি না, তা খতিয়ে দেখার জন্য সমস্ত সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালগুলিকে ৩৪ দফা তথ্য পূরণের নির্দেশ দিল স্বাস্থ্য ভবন। সোমবারই স্বাস্থ্য দপ্তরের ওয়েবসাইটে এই নির্দেশিকা জারি করা হয়েছে। হাসপাতাল-নার্সিংহোমের পাঠানো সমস্ত তথ্য খতিয়ে দেখতে রাজ্যের তরফে ৫ সদস্যের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক কমিটিও তৈরি হয়েছে।
নির্দেশিকায় বলা হয়েছে, কোভিড-১৯ সংক্রমণেই রোগীর মৃত্যু হয়েছে কিনা তা জানার জন্য রোগীর সংক্রমণের উপসর্গ, তার রোগের খতিয়ান, কী কী শারীরিক সমস্যা ছিল, অতীতের রোগের তালিকা ইত্যাদি ৩৪টি বিষয়ে অনুসন্ধান করে ফর্ম পূরণ করতে হবে সেই রিপোর্ট জমা করতে হবে স্বাস্থ্য দফতরে। পাঁচ সদস্যের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক কমিটি খতিয়ে দেখার পরেই নিশ্চিত করা যাবে, ওই রোগীর মৃত্যুর কারণ করোনার সংক্রমণে না কি অন্য কোন কারণে। তারপরেই তা নবান্নের তরফে ঘোষণা করা হবে।
স্বাভাবিক ভাবেই চিকিৎসকদের অনেকেই দাবি করেছেন, ইচ্ছাকৃত ভাবে মৃত্যুর সংখ্যাকে চাপা দেওয়ার জন্য পরিকল্পিত ভাবে এতগুলি জটিল পরীক্ষার পর্যায় বেঁধে দিয়েছে স্বাস্থ্য দফতর। একজন রোগীর মৃত্যুর পর এতগুলি তথ্য পূরণ করা কোনও হাসপাতালের পক্ষেই সম্ভব নয়। কারণ কিছু ক্ষেত্রে রোগীর পরিবারের লোকজনও সম্পূর্ণ তথ্য থাকবে না। তাই বেশ কয়েকটি দফা বাদ চলে যেতেই পারে। আর অন্যান্য দফা গুলি পূরণ করা হলেও কোনও না কোনওভাবে তথ্য যাচাই করে সেটি অন্য কারণে মৃত্যু হিসেবে বিবেচিত হবে।
কারণ অনেক ক্ষেত্রেই দেখা যায়, ভাইরাস বা ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণের কারণে মানুষের বিভিন্ন অঙ্গপ্রত্যঙ্গ বিকল হয়ে কাজ বন্ধ করে দেয়। ফলে তাঁর মৃত্যু হয়। সেক্ষেত্রে হৃদরোগে মৃত্যু হলেও মৃত্যুর অনুঘটক হিসেবে কাজ করে ব্যাকটেরিয়া বা ভাইরাসই। কিন্তু রাজ্যের বেঁধে ৩৪ দফা নির্দেশিকা অনুযায়ী এই তথ্য কোনওদিন সামনে আনা সম্ভব নয়। তবে এ নিয়ে মুখ খোলেননি স্বাস্থ্য দপ্তরের কর্তারা।