স্বরূপ দত্ত, উত্তর দিনাজপুর, ১৬ নভেম্বর: কাছ থেকে আবৃত্তি শুনেছেন তাতে কিচ্ছু যায় আসে না। কিন্তু সৌমিত্র চট্টাপাধ্যায়ের মত মানুষের বাড়িতে যাওয়া আলাদা একটা নষ্টালজিক। আজও সে কথা ভুলতে পারেননি রায়গঞ্জ ছন্দম নাট্য গোষ্টীর নাট্যকার হরিনারায়ণ রায়। সৌমিত্র চট্টাপাধ্যায়ের স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে বারবার সেই নষ্টালজিকতা তুলে ধরলেন বামপন্থী নেতা নাট্যকার হরিনারায়ণ রায়।
রায়গঞ্জ ছন্দম নাট্য গোষ্টীর অন্যতম নাট্যকার হরিনারায়ণ রায়। আপদ মস্তক বামপন্থী। সালটা ১৯৬৮/৬৯। বয়স কম। বামপন্থী আন্দোলনকে আরো এগিয়ে নিয়ে যেতে বামপন্থী আন্দোলনের পথিকৃত সৌমিত্র চট্টাপাধ্যায়ের দ্বারস্থ হলেন হরিনারায়ণ রায় সহ আরো দুইজন। একজন অশোক বন্দ্যোপাধ্যায় অন্যজন সুধাংশু দে। প্রত্যেকেই বামপন্থী নেতা হিসেবে পরিচিত। বেলা বারোটার নাগাদ সৌমিত্র চট্টাপাধ্যায়ের বাড়িতে পৌছলেন, তখন তিনি বাড়িতেই শারীরিক কসরত করছিলেন। খালিগায়ে সৌমিত্রবাবু তাদের কাছে এসে উপস্থিত হয়েছিলেন। যে আবেদন নিয়ে সৌমিত্রবাবুর কাছে তারা গিয়েছিলেন সেই আবেদন তিনি রাখতে পারেননি।পূর্ব নির্ধারিত কর্মসূচি থাকায় সেই সময় তিনি রায়গঞ্জে আসতে পারেননি।
পরবর্তী সালটা ১৯৮২/৮৩ সালে রায়গঞ্জে একটি অনুষ্ঠানে যোগ দেবার জন্য তাকে আমন্ত্রন জানালে তিনি সেই আমন্ত্রন প্রত্যাখান করেননি। প্রবাদপ্রতিম সঙ্গীত শিল্পী ভুপেন হাজারিকা এবং সৌমিত্র চট্টাপাধ্যায় রায়গঞ্জের ছন্দম মঞ্চে এক অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছিলেন। ভূপেন হাজারিকার গান এবং সৌমিত্র চট্টাপাধ্যায় আবৃত্তি অনুষ্ঠানকে অন্য শিখরে পৌছে দিয়েছিল। আজ তার মৃত্যুর পর সেই দিনগুলোর মনে পড়ছে বলে জানালেন হরিনারায়ণ রায়।
“৬৮/৬৯ সালের পর রায়গঞ্জের প্রত্যেকেই রাজনীতি এবং কর্মজীবনে প্রতিষ্ঠিত হলেও সৌমিত্রবাবুর মত এমন একজন ব্যাক্তিত্বের বাড়িতে যাওয়ার সুযোগ হয়নি। কাল বেলা ১২ টার নাগাদ সৌমিত্রবাবুর নৃত্যুর ঘোষনা পরই খানিকটা বাকরুদ্ধ হয়ে পড়েছিলেন হরিনারায়ণ রায়। তার স্মৃতি চারনে বারবার সেই দিনটার কথা তুলে ধরেছেন তিনি।