লাউডস্পিকারে আজান শুরু হতেই হনুমান চাল্লিশাও শুরু, আটক ২৬০ কর্মী, এফআইআর দায়েরের পরেও আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা রাজের

আমাদের ভারত, ৪ মে: মসজিদ থেকে লাউডস্পিকার সরানোর ইস্যুতে ক্রমেই উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে মহারাষ্ট্র। রাজ ঠাকরের হুমকির পর মুম্বাই এবং পার্শ্ববর্তী এলাকার বহু মসজিদে বুধবার সকালে লাউডস্পিকারে আজান বাজানো হয়নি। আবার মুম্বাইয়ের চারকপ এলাকায় মসজিদে লাউডস্পিকারে আজান বাজতেই দ্বিগুণ স্বরে হনুমান চাল্লিশা বাজানোর অভিযোগ উঠেছে মহারাষ্ট্র নব নির্মাণ সেনার বিরুদ্ধে। এদিকে পুলিশ রাজ ঠাকরের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করছে। আটক হয়েছে দলের ২৫০-র বেশি কর্মী সমর্থক।

গত ১ মে ঔরাঙ্গাবাদে একটি দলীয় সভায় রাজ ঠাকরে হুমকি দিয়েছিলেন লাউডস্পিকারে আজান বাজানো হলেই মসজিদের সামনে পাল্টা লাউডস্পিকারে হনুমান চাল্লিশা পাঠ করা হবে। ৩ তারিখের পর মসজিদ থেকে লাউডস্পিকার সরাতে হবে। এরপর মঙ্গলবার নিজের বাসভবনের সামনে দাঁড়িয়ে রাজ আবার হুঁশিয়ারির সুরে বলেছিলেন, “আমি সমস্ত হিন্দুদের কাছে আবেদন করছি আগামী কাল আপনি যদি লাউডস্পিকারে আজানের শব্দ শুনতে পান সেই সব জায়গায় লাউডস্পিকারে হনুমান চাল্লিশা বাজাবেন। তখনই ওরা লাউডস্পিকারের সমস্যা বুঝতে পারবে।” আর এই হুমকির পর এই রাজের বিরুদ্ধে একাধিক ধারায় এফআইআর দায়ের করে পুলিশ।

কিন্তু রাজের এই হুমকির পারভানি, মহারাষ্ট্রের পর বাণীওসমানাবাদ হিঙ্গলি, জালনা, নান্দের, নন্দুরবার সিরডি, শ্রীরামপুরের মসজিদগুলি লাউডস্পিকার বন্ধ রাখে। কোথাও কোথাও নিচু ভলিয়্যুমে লাউডস্পিকারে আজান বাজানো হয়।

অন্যদিকে আদালতের নির্দেশ সত্ত্বেও মুম্বাইয়ের চারকপ এলাকায় মসজিদে লাউডস্পিকারে আজান শুরু হতেই হনুমান চাল্লিশা বাজানোর অভিযোগ ওঠে নবনির্মাণ কর্মী সমর্থকদের উপর। গোটা ঘটনায় রাজ্যজুড়ে ২৬০ জন এমএনসি সমর্থককে আটক করে পুলিশ। যদিও সমর্থকদের গ্রেপ্তারের পর রাজ স্পষ্ট জানিয়েছে, লাউডস্পিকারে আজান বাজানোর বিরুদ্ধে আন্দোলন চলবে। রাজ জানিয়েছেন, এই বিষয়টি ধর্মীয় নয় সামাজিক সমস্যা। তাঁর হুঁশিয়ারি, “মসজিদে যদি লাউডস্পিকার জোরে বাজানো হয় আমরাও প্রস্তুত তার জবাব দিতে।” তিনি আরও বলেন, “অনেক অবৈধ মসজিদ আছে কেন তাদের অনুমতি দেওয়া হচ্ছে। এই বিষয়টি শুধু সকালের প্রার্থনার মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়।” তাঁর কথায়, “বিষয়টি সামাজিক, এর সঙ্গে সাম্প্রদায়িক অস্থিরতার কোনো সম্পর্ক নেই। এই শব্দ দূষণ মহারাষ্ট্রের বন্ধ হওয়া উচিত। যতদিন না এই শব্দ দূষণ বন্ধ হচ্ছে ততদিন প্রতিবাদ চলবে।”

সংবাদমাধ্যমকে তিনি বলেন, “রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত ও রাজ্যের বাইরে থেকে আমাদের কাছে বহু ফোন আসছে বহু জায়গায় আমাদের দলের কর্মীদের আটক করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে নোটিশ জারি করা হয়েছে। যারা আইন মানছে তাদের আটক করা হচ্ছে আর যারা আইন ভাঙছে তারা বুক ফুলিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে।”

এদিকে মহারাষ্ট্রে স্বরাষ্ট্র দফতর জানিয়েছে, মুম্বাইতে মোট ১ হাজার ১৪০টি মসজিদ আছে। তার মধ্যে ১৩৫টি সকাল ৬টার আগে লাউডস্পিকার ব্যবহার করেছে। ফলে যে সব মসজিদ সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ অমান্য করেছে সেগুলোর বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করা হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *