হাবড়ায় দম্পতি খুনের ঘটনায় নয়া মোড়, পুলিশি তদন্তে উঠে এলো চাঞ্চল্যকর তথ্য

আমাদের ভারত, উত্তর ২৪ পরগণা, ২৪ সেপ্টেম্বর: চলতি মাসের ১৫ তারিখ রাত আড়াইটে নাগাদ হাবড়ার টুনিঘাটা লন্ডন পাড়া এলাকায় নিজেদের বাড়িতেই গুলিবিদ্ধ হয়ে খুন হন রামকৃষ্ণ মন্ডল ও লীলারানী মন্ডল। এই খুনের ঘটনায় পুলিশের তদন্তে এবার নয়া মোড়। গ্রেপ্তার করা হল মৃতদের ছোট জামাই বান্টি সাধু ও সুপারি কিলার অজয় দাসকে।

এই ঘটনায় পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতে নিহত দম্পতি খুনে অভিযুক্ত হিসাবে আগেই ধরা হয়েছিল তন্ময় বর নামে কাশিপুর কলতলা এলাকার বাসিন্দা এক যুবককে। তাকে ১৪ দিনের পুলিশ হেফাজতে নিলেও পুলিশের কাছে খুনের ঘটনার কথা স্বীকার করেনি তন্ময়। পুলিশ প্রথমে তন্ময়কে অভিযুক্ত হিসেবে গ্রেপ্তার করে জেরা করলে বুঝতে পারে তন্ময় এই জোড়া খুনের সঙ্গে জড়িত নয়। তবে কে খুন করল মন্ডল দম্পতিকে? পরিবারের অন্যান্যদের প্রতিও পুলিশের কড়া নজরদারি ছিল। আর তাতেই এল সাফল্য।

জানাগেছে, নিহত দম্পতির বড় জামাই ও বড় মেয়ে কয়েক বছর আগে দুর্ঘটনায় মারা যায়। তাদের একমাত্র কন্যা সন্তান বর্তমানে রামকৃষ্ণ মন্ডল ও লীলাবতী দেবীর কাছে মানুষ হচ্ছিল। এদিকে রামকৃষ্ণ মন্ডল ও লীলাবতী দেবীকে গত ১৫ সেপ্টেম্বর গভীর রাতে খুন করা হয়। সেই ঘটনায় এবার নিহতদের ছোট জামাই বান্টি ও তার বন্ধু অজয়কে গ্রেফতার করল পুলিশ। বুধবার রাতে হাবড়ায় নিজেদের বাড়ি থেকেই তাদের ধরা হয়। ধৃত অজয়ের বাড়ি থেকে একটি বন্দুক উদ্ধার করা হয়েছে। তবে এটি খুনে ব্যবহৃত বন্দুক কিনা তা তদন্ত করছে হাবড়া থানার পুলিশ। অজয় এবং বান্টির বছর তিনেক ধরে পরিচয় ছিল । ইদানিং তারা একসঙ্গে ইউটিউবে ভিডিও তৈরি করত। তদন্তকারীরা জানতে পেরেছে ইদানিং মার্কেটে কয়েক লক্ষ টাকা দেনা হয়ে গিয়েছিল বান্টির। যে কারণেই তার শ্বশুর- শাশুড়িকে টাকা চেয়ে চাপ দেওয়া হতো। টাকা না দেওয়াতেই তাদেরক খুন করার ছক করে সে। বান্টি সহযোগী হিসেবে অজয়কে নেয়। কাজ হাসিল হলে অজয়কে মোটা টাকা দেওয়া হবে এমনটা প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছিল বলে প্রাথমিক তদন্তে উঠে এসেছে।

বুধবার রাতেই বান্টিকে তার জয়গাছি বাড়ি থেকে ও অজয়কে দক্ষিণ হাবড়ার বাড়ি থেকে গ্রেফতার করা হয়। ধৃতদের জেরা করছে পুলিশ। বারাসাতে এই বিষয়ে সাংবাদিক বৈঠক করে পুলিশ সুপার অভিজিত বন্দোপাধ্যায় বলেন, “শ্বশুর বাড়ির সম্পত্তি হাতাতে বৃদ্ধ শ্বশুর ও শ্বাশুড়িকে খুনের ছক কষে জোড়া খুনের ঘটনা ঘটায় বান্টি। সে–ই মাস্টার মাইন্ড। যেহেতু তন্ময়ের সঙ্গে ওই পরিবারের পুরনো বিবাদ ছিল, তাই সুচতুর ভাবে বান্টি তন্ময়ের ঘাড়ে খুনের দায় চাপিয়ে দিয়ে নিজে বাঁচার চেষ্টা করছিল। পুলিশ ভালো কাজ করেছে। শেষ পর্যন্ত আসল অপরাধী ধরা পড়েছে। ধৃতদের নিজেদের হেফাজতে নিয়ে খুনের তদন্তকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া হবে।”

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *