আমাদের ভারত, রামপুরহাট, ২৫ ডিসেম্বর: গাইডদের ধরে নির্মম অত্যাচার এবং অশ্রাব্য ভাষায় গালিগালাজ করার অভিযোগ উঠল তারাপীঠ থানার পুলিশের বিরুদ্ধে। দিনভর লক-আপে আটকে রেখে অর্থের বিনিময়ে ব্যক্তিগত মুচলেখা নিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয়। এরই প্রতিবাদে বুধবার তারাপীঠ থানায় বিক্ষোভ দেখালেন গাইডরা। বিক্ষোভের জেরে এদিন ধৃত চার গাইডকে ছেড়ে দিতে বাধ্য হয় পুলিশ।
তারাপীঠ এখন রাজ্য ছাড়িয়ে ভারতবর্ষের অন্যতম তীর্থক্ষেত্রের মর্যাদা পেয়েছে। ফলে বিভিন্ন রাজ্যের মানুষ এমনকি মন্ত্রী, আমলা, বিভিন্ন রাজ্যের বিচারপতিরা নিয়মিত যাতায়াত করেন। মা তারার উপর ভরসা করে দুই শতাধিক বেকার যুবকের সংসার চলে। সাহাপুর, বুধিগ্রাম ও খরুন অঞ্চলের বিভিন্ন গ্রামের দুই শতাধিক যুবক তারাপীঠে গাইডের কাজ করে সংসার চালান। মূলত সড়ক পথে যারা আসেন, তাদের গাড়ি রাখার পার্কিং, হোটেল, পুজোর ব্যবস্থা, শ্মশানে ঘোরানোর ব্যবস্থা করে থাকেন। অভিযোগ, সেই কারণে পুন্যার্থীদের গাড়ি থামালেই পুলিশ তাদের ধরে লক-আপে পুরছে। এরপর পশ্চাৎপদে মেডিকেয়ার পেপার গ্যাস দিয়ে থার্ড ডিগ্রি প্রয়োগ করছে। যে গুলো বড় বড় অপরাধীদের ক্ষেত্রে ব্যবহার করা হয়। সন্ধ্যার দিকে ৫০০ থেকে ৮০০ টাকা নিয়ে ব্যক্তিগত মুচলেখা দিয়ে ছেড়ে দেওয়া হচ্ছে। এদিন সকালে ফের চারজনকে আটক করে পুলিশ। এরই প্রতিবাদে থানায় বিক্ষোভ দেখান গাইডরা। নেতৃত্ব দেন তারাপীঠ মন্দিরের সেবাইত, বিজেপি নেতা নিখিল বন্দ্যোপাধ্যায়, বিজেপির ব্লক সম্পাদক দেবাশিস চট্টোপাধ্যায়, বসু মণ্ডলরা। পীযুষ দাস, কৃষ্ণ দাস, রাজকুমার মণ্ডল, বরুণ পাণ্ডেরা বলেন, “তাদের একাধিকবার ধরেছে পুলিশ। থানায় নিয়ে গিয়ে পরিবার তুলে গালিগালাজ করার পাশাপাশি পশ্চাৎপদে গ্যাস দিয়ে দিচ্ছে। ফলে শরীর সারাদিন জ্বালা করে”। কৃষ্ণর দাবি তার কাছ থেকে দুবারে ৮০০ টাকা নেওয়া হয়েছে। বরুণের কাছ থেকে একবার ছাড়তে ৮০০ টাকা নেওয়া হয়েছে। এভাবেই বিভিন্ন জনের কাছ থেকে পুলিশ টাকা নিয়ে ছাড়ছে।
নিখিলবাবু বলেন, “পুলিশ কিছু বেকার ছেলের পেটে লাথি মারছে। তাদের ধরে থার্ড ডিগ্রি প্রয়োগ করে রাতের দিকে টাকা নিয়ে ছাড়ছে। আমরা বলতে গেলে ওসি প্রসেঞ্জিত দত্ত হুমকি দেন। এরপর ডাকাতি মামলায় ওদের গ্রেফতার করা হবে। আমরাও দেখব উনি কতজনকে ডাকাত তৈরি করতে পারেন। উনার হাতে ক্ষমতা আছে। আমাদের সঙ্গে মানুষ আছেন। মানুষই শেষ কথা বলবেন”।