আমাদের ভারত, শিলিগুড়ি, ৩ আগস্ট: নেপালী ভাষা স্বীকৃতি দিবসের প্রস্তুতি বৈঠকে গিয়ে পৃথক রাজ্য, গোর্খাল্যান্ড নিয়ে সরব হলেন জিটিএ প্রধান অনীত থাপা। মঙ্গলবার ভানু ভবনে একটি বৈঠক ডাকা হয় নেপালী ভাষা স্বীকৃতি দিবস পালন করা নিয়ে। বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয় জিটিএ ও দার্জিলিং পুরসভা একযোগে ২০আগস্ট সাড়ম্বরে দিবসটি পালন করবে। কিন্তু এই বৈঠকে যোগ দিয়ে অনীত থাপা বলেন, “গোর্খাল্যান্ড যেদিন রাজনৈতিক ইস্যু থেকে জাতিগত দাবি হয়ে উঠবে সেদিন আমরা পৃথক রাজ্য গঠন করব।”
জিটিএ নির্বাচনের প্রাক্কালে যে ইস্তেহার প্রকাশ করেছিল ভারতীয় গোর্খা প্রজাতান্ত্রিক মোর্চা, তাতে স্পষ্ট লেখা ছিলো ক্ষমতায় এলে গোর্খাল্যান্ডের জন্য পৃথক কমিটি গঠন করা হবে। যদিও সেসব ভুলেই ক্ষমতায় এসেই দলের সুপ্রমো অনীত থাপা কলকাতায় গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে দেখা করেন। তার শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানে স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় উপস্থিত ছিলেন। এমনকি তিনি ২১জুলাই এর মঞ্চেও বক্তব্য রেখেছিলেন। সেই অনীত থাপা নেপালী দিবসের প্রস্তুতি বৈঠকে সরাসরি না বললেও তিনি যে গোর্খাল্যান্ডের পক্ষেই তা তার বক্তব্য থেকে কার্যত বুঝিয়ে দেন।
এদিন নেপালী ভাষা স্বীকৃতি দিবস কিভাবে পালন হবে তা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়। পাহাড়ের প্রতিটি মানুষ যাতে এতে অংশগ্রহণ করেন তার জন্যও ব্যবস্থা করা হবে। বৈঠকে অনীত ছাড়াও দার্জিলিং পুরসভার চেয়ারম্যান রীতেশ পোর্টেল উপস্থিত ছিলেন। রীতেশ পোর্টেল বলেন, “ঐতিহাসিক দিনটিকে সাড়ম্বরে পালন করা হবে। তাই জিটিএ এর সঙ্গে একযোগে অনুষ্ঠানের আয়োজন করবে পুরসভা।”
এদিকে জিটিএ প্রধান অনীত থাপা বৈঠকে নানান পরামর্শ দেন। কিন্তু তিনি সকলের সামনেই বলেন, “পৃথক রাজ্য গোর্খাল্যান্ড পাহাড়ের মানুষের স্বপ্ন। কিন্তু এই দাবি যতদিন পর্যন্ত রাজনৈতিক থেকে জাতিগত হবে, ততদিন কিছু হবে না। যেদিন গোর্খাল্যান্ড জাতিগত দাবি হবে, সেদিন আমরা নিশ্চয়ই আলাদা রাজ্য গঠন করব।”
পাশাপাশি তিনি আরও বলেন, “নেপালি ভাষার স্বীকৃতি রাজনীতির মাধ্যমে অর্জিত হয়নি, তাই আমার মনে হয়েছে ভাষা স্বীকৃতি দিবসটি ভাষাপ্রেমীদের নেতৃত্বে হওয়া উচিত দলীয়ভাবে নয়। পাহাড়ে একটা সংস্কৃতি ছিল, যে সবকিছু রাজনৈতিক দল ও নেতাদের করা উচিত। এটাই প্রতিষ্ঠিত হয়ে গিয়েছে। আমার মনে হয় ভাষা দিবস উদযাপন রাজনীতির ঊর্ধ্বে। তাই পাহাড়ের বাসিন্দাদের এই অনুষ্ঠানে যোগ দেওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি।”

