আমাদের ভারত, ৮ জানুয়ারি: নয়া কৃষি আইন বিরোধিতার বিষয়ে নিয়ে গত সাতটি বৈঠকের মত অষ্টম বৈঠকও নিষ্ফল থাকলো। যদিও অষ্টম বৈঠকে সমাধান সূত্র বেরোবে বলে আশাবাদী ছিলেন কৃষি মন্ত্রী নরেন্দ্র সিং তোমর । কিন্তু সেই বৈঠকও নিষ্ফলা থেকে গেল। ফলে আগামী ১৫ জানুয়ারি আবারও সরকার ও কৃষক প্রতিনিধিরা বৈঠকে বসবেন বলে ঠিক হয়েছে। তার আগে ১১ জানুয়ারি কৃষি আইন সংক্রান্ত একাধিক মামলার শুনানি রয়েছে সুপ্রিম কোর্টে।
বিজ্ঞান ভবনে আয়োজিত এই বৈঠকের চল্লিশটি কৃষক সংগঠনের প্রতিনিধিরা ছাড়াও কেন্দ্রীয় মন্ত্রী নরেন্দ্র সিং তোমর, পীযূষ গোয়েল এবং সোম প্রকাশ উপস্থিত ছিলেন। এর আগে ষষ্ঠ বৈঠকে (৩০ ডিসেম্বরের বৈঠকে) খড় দাহ করার শাস্তি মুকুব এবং বিদ্যুৎ বিল ভর্তুকি দেওয়ার মতো বিষয়ে দু’পক্ষ সহমত হয়েছিল। সংবাদ সংস্থা সূত্রে খবর এদিনের বৈঠকে খুব বেশি কথার আদান-প্রদান হয়নি। আগামী ১১ জানুয়ারি সুপ্রিমকোর্টে এই-কৃষি আইন নিয়ে শুনানি রয়েছে একাধিক মামলার। সেই শুনানির দিনের কথা মাথায় রেখেই ১৫ জানুয়ারি পরবর্তী বৈঠকের দিন ধার্য করা হয়েছে। সরকারি সূত্রের খবর সুপ্রিম কোর্ট কৃষক আন্দোলনের সাথে যুক্ত অন্যান্য বিষয়গুলো ছাড়াও নয়া আইনের বৈধতা বিচার করতে পারেন।
এদিনের বৈঠকে সরকারের তরফে দাবি করা হয়েছে বিভিন্ন রাজ্যে কৃষকদের একটি বড় অংশ নতুন আইনকে স্বাগত জানিয়েছে। সরকার কৃষক নেতাদের বলেন তাদের উচিত গোটা দেশের কৃষকদের হিতাহিত বোঝা। এক ঘন্টায় বৈঠক চলার পর কৃষক নেতারা মৌনব্রত ধারণ করেন। তারা একের পর এক লিখিত ব্যানার তুলে ধরেনবৈঠকে। ফলে তিনমন্ত্রী নিজেদের মধ্যে আলোচনার জন্য বৈঠক ছেড়ে বেরিয়ে যান। সূত্রের খবর ৩মন্ত্রী মধ্যাহ্নভোজনও করেননি। তারা সেই সময় বৈঠক করেন একটি ঘরে বসে। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য আজকের বৈঠকের আগে নরেন্দ্র সিং তোমর অমিত শাহের সঙ্গে এক ঘণ্টার বৈঠক করেছিলেন বলে খবর।
জানা গেছে আজকের বৈঠক চলাকালীন এক কৃষকের হাতে একটি টুকরো কাগজে লেখা ছিল,”আমরা হয় জিতব না হলে মরবো”। বৈঠকের সময় কৃষকরা পরিষ্কার করে দিয়েছেন আইন প্রত্যাহার করা না হলে এই আন্দোলন এখানেই শেষ হচ্ছে না। প্রয়োজন পড়লে তারা লোরি বা বৈশাখীর মতো উৎসবও এই আন্দোলন স্থলে বসেই পালন করবেন।
বৈঠক চলাকালীন এক নেতা বলেন, “আমাদের বাড়ি ফেরা তখনই হবে যখন আইন প্রত্যাহার হবে”। অন্য এক কৃষক নেতা কৃষিকাজের সরকারের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন। তার কথায় সুপ্রিম কোর্ট ইতিমধ্যেই কৃষিকাজকে রাজ্যের এক্তিয়ারে রাখার কথা বলেছে।সেখানে কেন কেন্দ্র কৃষিকাজের মাথা ঘামাচ্ছে? তিনি বলেন, এর থেকে স্পষ্ট সরকার সমস্যার সমাধান চান না। এদিন বৈঠক চলাকালীন কৃষকরা সরকারের কাছে পরিষ্কার করে জবাব চেয়েছেন। তারা বলেন, “আমাদের স্পষ্ট করে জবাব দিক সরকার, কেন সবার সময় নষ্ট করছেন তারা”।