রাজেন রায়, কলকাতা, ২ আগস্ট: শনিবার রাতেই রাজ্যের শিল্প সম্মেলন মুখ্যমন্ত্রীকে বিঁধে একের পর এক ট্যুইট করেছিলেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড়। ১২ ঘণ্টা কাটতে না কাটতেই কোনও তথ্য না পেয়ে রবিবার দুপুরে ফের ট্যুইটে আক্রমণ করলেন রাজ্যপাল। তিনি সাংবিধানিক প্রধান হলেও তাকে যে তথ্য দিচ্ছে না সরকার, মূলত এই অভিযোগ করে তিনি বলেন, ‘এ রাজ্যে তথ্য চাইলেই বাড়িতে পুলিশ যায়।’
এবারের ট্যুইটে কি লিখেছেন রাজ্যপাল? তিনি লিখেছেন, “রাজনৈতিক হিংসা, শিল্প সম্মেলনে দুর্নীতি, রেশন ব্যবস্থা, আমফানের ত্রাণে অনিয়ম-সহ নানা বিষয়ে মুখ্যমন্ত্রীর থেকে রিপোর্ট চাওয়া রাজ্যপালের অধিকার ও কর্তব্য। কিন্তু সেই তথ্য পাওয়া যায় না।”
https://twitter.com/jdhankhar1/status/1289808704259256321?s=19
তাঁর আরও বক্তব্য, ‘তথ্য চাইলেই শাসকদল বলছে, রাজ্যপাল রাজনৈতিক পক্ষপাতদুষ্ট। আমার প্রশ্ন, এটা কি আইনের শাসন বা গণতন্ত্র?”
https://twitter.com/jdhankhar1/status/1289810935612231687?s=19
শুধু আক্রমণ এবং ডিফেন্স করেই থেমে যাননি রাজ্যপাল। তিনি আরও লিখেছেন, রাজ্যপালকে তথ্য না দেওয়ার ব্যর্থতা মুখ্যমন্ত্রীর আমলে তথ্যের অধিকারের করুণ অবস্থার পরিচায়ক। মুখ্য তথ্য কমিশনারকে ডেকে আগেই সতর্ক করেছি। তথ্য চেয়ে আবেদন করলেই এ রাজ্যে বাড়িতে পুলিশ যায়। ভয় দেখানো হয়। তাই এত কম আবেদন জমা হয়। দুর্নীতি রোধে তথ্য প্রকাশ সবচেয়ে জরুরি।’ তাঁর প্রশ্ন তথ্য দেওয়া হয় না কেন? এত লুকোনোর কী আছে? যাঁরা তথ্য দিচ্ছেন না তাঁদের চিহ্নিত করুন। এই অস্পষ্টতা দুর্নীতির জন্ম দেবে। বাক্সের ভিতর কঙ্কালের সংখ্যা আরও বাড়বে।
https://twitter.com/jdhankhar1/status/1289810935612231687?s=19
যদিও গত মাসেই মুখ্যমন্ত্রী নবান্নে বসে বলেছিলেন, রাজ্যপালকে যথেষ্ট তথ্য দেওয়া হয়। তাকে একাধিক বার ফোনও করা হয়। তাঁর সময় থাকলে তাঁকে গিয়ে প্রণাম করে আসতেন বলেও কটাক্ষ করেছিলেন মমতা। কার্যত নবান্নের সাংবাদিক বৈঠকে রাজ্যপালের বিরুদ্ধে বিরক্তির সুরে বলেছিলেন, “সারা দিন করোনা সামলাব, আমফান সামলাব, না ওঁর সব প্রশ্নের জবাব দেব। তাও যতটা পারি দিই। আমি মেসেজ করি। আমার মুখ্যসচিব তাঁর সঙ্গে দেখা করেছেন। ওনার ভাবভঙ্গিমা দেখে মনে হয়, আমরা নির্বাচিত সরকার নই, ওনার চাকরবাকর!”
যদিও রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের দাবি, সমস্ত ক্ষেত্রে তথ্য দাবি করে পাওয়া যাবে না তা বিলক্ষণ জানেন খোদ রাজ্যপালও। তাও ছলে বলে কৌশলে রাজ্য সরকারকে বিভিন্ন প্রশ্নের মুখে ফেলে অস্বস্তিতে ফেলেন তিনি। একই সঙ্গে জনসাধারণের কাছেও রাজ্য প্রশাসনকে স্বরূপ তুলে ধরার চেষ্টা করেন। বারবার উপেক্ষা করলেও মাঝেমধ্যে মুখ্যমন্ত্রী বা রাজ্য প্রশাসনের কর্তারা তাঁর বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরালেও তাতে একই ভাবে নিজের কাজ চালিয়ে যান রাজ্যপাল।

