অসহায় যৌনকর্মীদের মুশকিল আসান! স্বনির্ভর গোষ্ঠীতে যোগদানের আবেদন সরকারের

রাজেন রায়, কলকাতা, ১ সেপ্টেম্বর: একসময় তাদের রঙিন রাতে বদলে যেত শহরের অতৃপ্ত রং। তাদের শরীরের ছোঁয়ায় তারা ভুলিয়ে দিতেন মানুষের যাবতীয় না পাওয়াকে। আর তার বদলে উপার্জন খুব খারাপ হত না। কিন্তু করোনা সঙ্কটে সংক্রমণের ভয়ে সম্পূর্ণ বন্ধ হয়ে গিয়েছে পৃথিবীর এই আদিম পেশা। তাদের মধ্যে একাংশ বিকল্প পেশা বেছে নিতে পারলেও বেশিরভাগেরই আর কোনও কাজের সুযোগ ঘটেনি। এদের মধ্যে দুএকজন আত্মহত্যার পথ বেছে নিয়েছেন আর বাকিরা দিন গুজরান করছেন আধপেটা খেয়ে কোনওরকমে।

কিছুদিন আগেই যৌনকর্মীদের ডিজিটাল রেশন কার্ড করে দেওয়ার নিয়ে সক্রিয় ভূমিকার কথা ঘোষণা করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। কিন্তু তাতেও সম্পূর্ণ সমস্যার সমাধান হয়নি। শুধু যৌনকর্মীরাই নন, একই অবস্থা বিভিন্ন বার নর্তকীদেরও। তাদের হারিয়ে যাওয়া পেশা আদৌ আর কোনদিন ফিরবে কিনা, তার চেয়েও বড় প্রশ্ন এখন তারা বাঁচবেন কীভাবে? বিভিন্ন জেলা থেকে কলকাতায় এসে অনেকেই ঘর ভাড়া নিয়ে কাজ করে বাড়ি ফিরে যেতেন। এলাকার অনেকেই জানতেন তারা শহরের বিভিন্ন হাসপাতালে বা হোটেলে কাজ করেন। কিন্তু সমস্ত কিছু বন্ধ হয়ে যাওয়ায় টান পড়েছে তাদের জীবনধারণে।

তাই লকডাউন ও করোনা-কালে দুর্দশায় পড়া যৌনকর্মীদের পাশে এবার দাঁড়াচ্ছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার। জানা গিয়েছে, পঞ্চায়েত দফতরের অধীনে স্বনির্ভর গোষ্ঠীর প্রকল্পে কাজে লাগানো হবে তাঁদের। রাজ্যের পঞ্চায়েত দফতরের আধিকারিক সৌম্যজিৎ দাস বলেন, ‘বাংলায় প্রায় ৩৫ লক্ষ যৌনকর্মী রয়েছেন।লকডাউনের পর থেকে তাঁরা অধিকাংশেরই কোনও উপার্জন নেই। তাঁদের এবার উপার্জনের বন্দোবস্ত করা হবে। তাঁরা আচার, জ্যাম, জেলি, পাপড় ইত্যাদি তৈরি করবেন এবং সেগুলো বিক্রি করবেন। তাঁদের তৈরি জিনিসগুলি সরকার কিনে নেবে। তা নিয়ে বিভিন্ন সরকারি স্টোর থেকে বিক্রি করা হবে।’ রাজ্যের বিভিন্ন জেলায় জেলায় এই প্রকল্প চালানো হবে।

দুর্বার মহিলা সমন্বয় সমিতির মহাশ্বেতা মুখোপাধ্যায়ের বলেন, ‘পুজোর পর থেকেই পঞ্চায়েত দফতরের সঙ্গে যুক্ত হয়ে আমরা এই কাজ চালাব। এই নিয়ে সরকারের সঙ্গে বৈঠকও হয়ে গিয়েছে। আপাতত এই সংক্রান্ত কাজের প্রচার চালানো হবে। আশা করছি বিকল্প আয়ের সুযোগে যৌনকর্মীদের সঙ্কটের সুরাহা হবে।’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *