সাথী দাস, পুরুলিয়া, ৮ জানুয়ারি: “সোনার বাংলাকে এখন টিনের বাংলায় পরিণত করেছে তৃণমূল। সোনার বাংলা ক্রমশঃ সোনা থেকে তামা পেতল শেষে টিনের বাংলায় পরিণত হয়েছে। আর সোনার ভারত গড়েছেন প্রধান মন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। আজ ঝালদায় দলীয় প্রতিবাদ সভায় বক্তব্য রাখতে গিয়ে শুরু থেকে এইভাবেই তৃণমূলের বিরুদ্ধে তোপ দাগেন বিজেপি রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার।
আজ পুরুলিয়ার ঝালদা হাটতলা ময়দানে একটি প্রতিবাদ সভার আয়োজন করে জেলা বিজেপি, সেই সভায় বক্তব্য রাখতে গিয়ে বিজেপির রাজ্য সভাপতি বলেন, আবাস যোজনার ঘর নিতে হলে বিডিওর কলার ধরে ঘর আদায় করতে হবে। বিজেপি কর্মীদের এমনই নির্দেশ দিয়ে গেলেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। পঞ্চায়েত ভোটে গ্রাম রক্ষী বাহিনী তৈরি করে অবতীর্ণ হওয়ার জন্য আহ্বান জানালেন রাজ্য সভাপতি। তিনি সংবাদ মাধ্যমের এক প্রশ্নের জবাবে, অনুব্রত মণ্ডলকে কটাক্ষ করে শিয়াল বলে কটাক্ষ করেন তিনি।
সুকান্ত মজুমদার বলেন, “বীরভূমের বাঘ এখন শেয়ালে পরিণত হয়েছেন। তাকে আমরা দিল্লি নিয়ে যাব, সেখানে শেয়াল থেকে খেঁকশিয়াল হয়ে যাবে। এছাড়াও মমিনপুরের ঘটনায় কলকাতা পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হওয়া ২০ জন ওই ঘটনার সাথে যুক্ত ছিলেন না, আসল দোষীদের এবারে এনআইএ গ্রেপ্তার করবে, মিনি পাকিস্তান তৈরি করার অঙ্গুলি হেলনে ওই ঘটনা ঘটানো হয়েছে।”
দলীয় কর্মসূচিতে এসে বিভিন্ন ইস্যুতে তৃণমূল তথা রাজ্য সরকারকে তোপ দাগলেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। পুরুলিয়া শহরে সংবাদ মাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে আবাস প্লাস যোজনা নিয়ে তৃণমূলকে এক হাত নেন তিনি। তিনি অভিযোগ করে বলেন, রাজ্যজুড়ে বিজেপির নেতা কর্মীদের উপরে বৈমাত্রিকসুলভ আচরণ করছে এই সরকার।” প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনায় বিজেপি কর্মীদের নাম কেটে দেওয়ার অভিযোগ তুলেছে তিনি। তিনি আশা প্রকাশ করে বলেন, এই সরকারকে খুব তাড়াতাড়ি বিদায় দেবে বিজেপি। কেন্দ্রের দুয়ারে সরকারের স্বীকৃতিকে উপেক্ষা করে বলেন, “কেউ দেয়নি এই প্রকল্পের ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে ব্যবহারের স্বীকৃতি দিয়ে হয়েছে। ডিজিটাল মানে ভার্চুয়াল তার মানে এখানে আসলে কিছু নেই। হাজার হাজার লোক সেখানে লাইন দিয়েছিলেন কী পেয়েছে? ৫০০ টাকা আর ২৮ টাকার এক বোতল মদ। গোটা পশ্চিমবঙ্গ জুড়ে বোমের শিল্প চলছে। মাটি খুঁড়লেই বোম পাওয়া যাচ্ছে। অনেক জঙ্গিরা বাংলায় আশ্রয় নিয়েছে, অস্বীকৃত মাদ্রাসাগুলো এই কাজে ব্যবহার হচ্ছে। আবাস যোজনা নিয়ে ভুরি ভুরি অভিযোগ হয়েছে বিভিন্ন জেলায় কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি দল যাবেন, সব চোরেদের ধরা হবে।”
২০২০ সালে ৬ জানুয়ারি সিএএ’র সমর্থনে ‘অভিনন্দন যাত্রা’ হয় ঝালদা শহরে, উপস্থিত ছিলেন পুরুলিয়ার সাংসদ জ্যোতির্ময় সিং মাহাতো। সেই সময় পুলিশ বিজেপির ‘অভিনন্দন যাত্রা’ ভেস্তে দেওয়ার পরিকল্পনা করে। বিজেপি নেতা কর্মীদের মিথ্যা মামলায় ফাঁসানো হয় বলে অভিযোগ। তার পর থেকেই এই দিনটি বিজেপি কালাদিবস ও প্রতিবাদ সভা করে আসছে বলে জানান স্থানীয় বাসিন্দা তথা জেলা বিজেপির সাধারণ সম্পাদক শঙ্কর মাহাতো।
আজ সভার আগে ঝালদা শহরে প্রতিবাদ মিছিলে যোগ দেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার, সাংসদ জ্যোতির্ময় সিং মাহাতো, জেলার ছয় বিধায়ক, জেলা সভাপতি বিবেক রাঙা ও দলীয় কার্যকর্তারা।