পিন্টু কুন্ডু, বালুরঘাট, ২৭ ডিসেম্বর: বিএসএফের ঢিলেঢালা নজরদারিতে অবাধ গরু পাচার সীমান্তে। বেড়েছে পুলিশের সফলতা। গরু পাচারকারীদের দৌরাত্মে অতিষ্ট দক্ষিণ দিনাজপুরের সীমান্ত এলাকার বাসিন্দারা।
শীতের মরসুম শুরু হতেই হিলি ও কুমারগঞ্জের বিস্তীর্ণ এলাকা দিয়ে কার্যত বিএসএফের নাকের ডগা দিয়েই চলছে অবাধ এই গরু পাচার। এদিকে পাচার রোধে স্বক্রিয়তা নিয়ে ময়দানে নেমে ইতিমধ্যেই বেশ কিছু সফলতা এসেছে দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা পুলিশের হাতে। এসেছে গরু পাচারের বেশ কিছু গোপন তথ্যও। শনিবার ও রবিবার রাতে দু’দফায় পতিরাম থানার পুলিশ বেশ কয়েক লক্ষ টাকার মহিষ ও গরু উদ্ধার করে। ঘটনায় আটক হয়েছে প্রায় ৫ জন। যাদের জিজ্ঞাসাবাদের পরে হিলির গরু পাচার নিয়ে বেশ কিছু গোপন তথ্য উঠে এসেছে জেলা পুলিশের হাতে। পুলিশ
সুত্রের খবর অনুযায়ী, দক্ষিণ দিনাজপুরের গঙ্গারামপুরেই ঘাঁটি গেড়েছে এই গরুপাচার চক্র। সুদূর উত্তরপ্রদেশ ও হরিয়ানা থেকে দৈত্যাকার গরু ও মহিষ বাংলাদেশে পাচারের জন্য গঙ্গারামপুরের শিববাড়ি এলাকায় মজুত করছে পাচারকারীরা। বর্তমানে বাংলাদেশে মহিষের চাহিদা বেশি থাকায় মরসুমের প্রথম থেকেই মহিষ পাচারের চাহিদা বেড়েছে। গঙ্গারামপুর থেকে রাতের অন্ধকারে পিকআপ ভ্যানে করে মাল বোঝাই গাড়ির আদলে ত্রিপল দিয়ে ঢেকে আনা হচ্ছে সীমান্ত এলাকায়। হিলির জামালপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের মথুরাপুর, সিধাই সহ বিস্তীর্ণ কাঁটাতারহীন উন্মুক্ত এলাকা দিয়ে রাতের অন্ধকারে পাচার করা হচ্ছে গরুগুলি। একই সঙ্গে কুমারগঞ্জের সমজিয়া এলাকা দিয়েও একই কায়দায় রমরমিয়ে চলছে এই পাচার। যদিও সবকিছু দেখে শুনেও সীমান্তরক্ষী বাহিনীর জওয়ানরা নিরব দর্শকের ভূমিকা পালন করছে।
রবিবার ধৃত পাচারকারীদের জিজ্ঞাসাবাদের পরে পুলিশ বেশ কয়েকজনের সাংকেতিক নামও জানতে পারে। রানা, উতু, নেপাল-ভুটান, হিরো, রঞ্জন, রাজীব দে’র নেতৃত্বেই অবাধে চলছে সীমান্তে এই পাচারকাজ বলেও জানতে পেরেছে পুলিশ বলে সুত্রের খবর। আর যার অভিযানেই ইতিমধ্যে পুলিশের হাতে এসেছে ৬ টি দৈত্যাকার মহিষ ও ১ টি গরু। যার আনুমানিক বাজারমূল্য কয়েক লক্ষ টাকা বলেও জানিয়েছে পুলিশ।
জেলা পুলিশ সুপার রাহুল দে জানিয়েছেন, পাচার রোধে তৎপর রয়েছে পুলিশ। বর্তমানে বর্ডার সিল রয়েছে তা সত্বেও বেশ কয়েকদিন ধরে পতিরাম থানার পুলিশ রাতের অন্ধকারে তল্লাশি চালিয়ে এইসব গরুগুলি আটক করেছে। লাগাতার চলবে এই অভিযান।