পারুল খামারিয়া
আমাদের ভারত, ব্যারাকপুর, ২৮ জুলাই:
‘স্বদেশী বার্তা’ সাহিত্য পত্রিকার পক্ষ থেকে উত্তর ২৪ পরগনার খড়দহের সুখচরে ‘কাঠিয়াবাবার আশ্রম’-এ আয়োজিত হল ‘নমামি গঙ্গে’ অর্থাৎ গঙ্গা নমস্কার। অনুষ্ঠানের সাংস্কৃতিক সহযোগিতায় ছিল ‘দেশের মাটি কল্যাণ মন্দির’। এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ‘কাঠিয়াবাবা আশ্রম’-এর ‘শ্রীমহন্ত’ শ্রী শ্রী ১০৮ বৃন্দাবন বিহারি দাস কাঠিয়াবাবা মহারাজ ও অধিকারী শ্রী শ্রী মধুমঙ্গল দাস কাঠিয়াবাবা, রিষড়া ‘প্রেম মন্দির’ আশ্রমের সম্পাদক পূজ্যপাদ স্বামী নির্গুণানন্দ মহারাজ,’স্বদেশী বার্তা’ সাহিত্য পত্রিকার প্রকাশক ও সম্পাদক যথাক্রমে কৃষ্ণেন্দু মুখার্জি ও সৈকত চ্যাটার্জি এবং ‘দেশের মাটি কল্যাণ মন্দির’-এর কার্যকর্তা মিলন খামারিয়া।
গঙ্গা স্তোত্র পাঠের মাধ্যমে শনিবারে র এই অনুষ্ঠান শুরু হয়। স্তোত্রপাঠ করেন সুপ্রতিম চক্রবর্তী। এরপর শ্রীমহন্ত দাসজী ও শ্রীমৎ নির্গুণানন্দ মহারাজকে বরণ করা হয় উত্তরীয়, মুসুম্বিলেবুর চারাগাছ ও ফুলের মালা দিয়ে। বরণ করে নেন কৃষ্ণেন্দু মুখার্জি। সেইসাথে বরণ করা হয় বিশিষ্ট শিল্পী শীর্ষ আচার্য, সমাজ সেবক ও প্রাবন্ধিক ড. কল্যাণ চক্রবর্তী, সাংবাদিক প্রদীপ দাস ও আরও অনেক গুণীজনকে।
শ্রীমৎ নির্গুণানন্দ মহারাজ বলেন, “সগর রাজার ষাট হাজার পুত্র কপিল মুনির অভিশাপে ভস্মীভূত হলে তাদের উদ্ধার করার জন্য অনেক তপস্যা করে ভগীরথ মর্তে মা গঙ্গাকে নিয়ে আসেন। অনেক সাধনার ফলে মা গঙ্গাকে আমরা মর্তে পেয়েছি। সেই নদী আজ আমাদের কু-কর্মে দূষিত হচ্ছে – এ বড় বেদনার। গঙ্গা মায়ের পবিত্রতা রক্ষা করা আমাদের সবার কর্তব্য।”
পূজ্যপাদ শ্রী শ্রী ১০৮ বৃন্দাবন বিহারি দাস কাঠিয়াবাবা মহারাজ বলেন,”গঙ্গা নদীকে মাতৃজ্ঞানে পুজো করলেই হবে না, তাঁর জল যাতে বিশুদ্ধ থাকে তার জন্য আমাদের কাজ করতে হবে। ভারত সরকার চেষ্টা করছে মা গঙ্গা নদীকে পরিষ্কার রাখার। সেই কাজে আমাদের সবার এগিয়ে আসা উচিত। স্বদেশী বার্তা পত্রিকার পক্ষ থেকে আজ যে আয়োজন করা হয়েছে তা আরও বেশি করে করা হোক। মানুষ সচেতন হোক। গঙ্গা আরাধনার মাধ্যেমে সে সচেতনতা আসবে বলে আমি মনে করি।”
কৃষ্ণেন্দু মুখার্জি বলেন, “গঙ্গা মা-কে বিশুদ্ধ করার জন্য আমরা মানুষকে সচেতন করার কাজ করছি। ভবিষ্যতে গঙ্গার ধারে গড়ে ওঠা এমন বিভিন্ন আশ্রমে আমরা এই কাজ করব।”
অনুষ্ঠানে গঙ্গা আরাধনা নিয়ে অধ্যাপক কল্যাণ চক্রবর্তী রচিত ও সংকলিত একটি ‘গীতি-কাব্য-আলেখ্য’ পরিবেশিত হয়। তাতে অংশগ্রহণ করেন প্রমিতি দাস, স্নেহাংশু দত্ত, সুপ্রতিম চক্রবর্তী, সৈকত চ্যাটার্জি, মিলন খামারিয়া ও দেবকুমার কর্মকার। সঙ্গীত, ভাষ্যপাঠ ও কাব্যে জমে ওঠে এই পর্ব।
সেইসাথে মকর বাহনা গঙ্গা দেবীর মূর্তি নির্মাণ করেন বিশিষ্ট জাতীয়তাবাদী শিল্পী শীর্ষ আচার্য। অপূর্ব সুন্দর সেই ভাস্কর্য তুলে দেওয়া হয় মহারাজদের হাতে।
তারপর শুরু হয় গঙ্গা আরাধনা। ঘাটে গিয়ে গঙ্গা মায়ের আরাধনা করেন শ্রীমহন্তজী। বিভিন্ন উপাচারে মায়ের আরাধনা করা হয়।
অনুষ্ঠানে ৩০ টি মুসুম্বিলেবুর গাছ দেওয়া হয় ‘দেশের মাটি কল্যাণ মন্দির’-এর পক্ষ থেকে। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন দেশের মাটির পক্ষ থেকে সুমন রায়, বিপ্লব সরকার, ধ্রুবজ্যোতি পাল, অয়ন নাগা, অরিন্দম ঘোষ ও আরও অনেকে।
অনুষ্ঠান শেষে সবাইকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন সৈকত চ্যাটার্জি। অনুষ্ঠানটির সঞ্চালনার দায়িত্বে ছিলেন মিলন খামারিয়া আর সার্বিক সহযোগিতায় ছিলেন সোমক ব্যানার্জি। সবশেষে সবাইকে প্রসাদ দেওয়া হয়।